কোলাজ
শরতের ‘দুষ্টু’
‘মা দুর্গা খুব অবাক হলেন মর্ত্যে এ বার এসে/ অসুরেরা সব বুক ফুলিয়েই ঘুরছে বীরের বেশে’। পুজোর ছড়ায় এমনটাই লিখেছেন প্রবীণ ছড়াকার ভবানীপ্রসাদ মজুমদার। সদ্য প্রকাশিত ‘কচিকাঁচাদের পত্রিকা’ দুষ্টু-র শারদ-সংখ্যায় এমনই লিখেছেন তিনি। খড়্গপুর থেকে প্রকাশিত এই পত্রিকা শুধু ‘দুষ্টু’দেরই নয়, তাদের মা-বাবা, দাদা-দিদিদেরও মন টানবে। ভবানীপ্রসাদ মজুমদার, পবিত্র সরকার বা অনিল ঘড়াইয়ের মতো স্বনামধন্যরা যেমন লিখেছেন, তেমনই রয়েছে নবীনদের ছড়া বা গল্প। অনিল ঘড়াইয়ের গাঙ-শালিখ ছোট্ট তুতুনের সঙ্গে পরিচিত হয়। সুভাষচন্দ্র বসুর গল্প ‘পুতুলপরি ও তিতলি’ নিয়ে যায় রাক্ষস-খোক্ষস আর পরিদের দেশে। জন্মসার্ধশতবর্ষে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কিত নিবন্ধগুলি এখনকার দুষ্টুদের বড়ো হতে সাহায্য করবে। সুনীল ঘোষের ‘তোমরা জানো কি’, কমলেশ নন্দের ‘পারো কি না-পারো’, পাপিয়া মুখোপাধ্যায়ের ‘সমাধান’ সবগুলি নিবন্ধই ছোটদের কাজে লাগবে। সব মিলিয়ে ছড়ায়, গল্পে, আঁকাতে জমজমাট এ বারের ‘দুষ্টু’ পুজোর ছুটি কাটানোর পক্ষে দারুণ আনন্দ-সাথী। সম্পাদক: সুভাষচন্দ বসু।

স্বপ্নের ‘সুস্বন’
কাঁসাইয়ের পাড়ে জনাপাঁচেক যুবক আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রত্যেকেই সাহিত্য-অনুরাগী। কথায় কথায় মাথায় এল, আচ্ছা একটা সাহিত্য-পত্রিকা বের করলে কেমন হয়! ভাবনার সেই শুরু। কাজটা কিন্তু খুব সহজ ছিল না। প্রত্যেকেই তখন বেকার। আক্ষরিক অর্থেই নুন আনতে পান্তা ফুরোনো জীবন। তবু স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রাখলেন পঙ্কজ, কিশোর,শ্যামল, প্রদীপ, বিকাশরা। লালগড় থেকে আস্ত একটা সাহিত্য-পত্রিকা প্রকাশের সেই শুরু। দশ বছর পূর্তি হল এই শারদ-সংখ্যায়। এখনও যে পঙ্কজরা স্বপ্ন দেখেন, ‘সুস্বন’-এর প্রায়-নিয়মিত সংখ্যাগুলোই তার প্রমাণ। গত দু’-আড়াই বছরের অস্থিরতায় নিছক দর্শক হয়েও থাকেনি এ পত্রিকা। নিজস্ব মতামত প্রকাশেও থেকেছে অকুণ্ঠ। দশম-বর্ষ পূর্তি-সংখ্যায় স্মৃতিচারণ করেছেন কিশোর তেওয়ারি, বিকাশ রায়-রা। বিপ্লব মাজি, বাসুদেব মণ্ডল, পঙ্কজকুমার মণ্ডলদের কবিতায় মূর্ত সমসময়ের লালগড়। টোকন মান্নার গল্প ‘খাস জমিন’ ভাল লাগে। সম্পাদক: কিশোর তেওয়ারি ও পঙ্কজকুমার মণ্ডল।

কাজেও ‘সু-সাথী’
সাতাশ পেরোতে চলল ‘সুসাথী’। ছড়ার কার্ড হিসেবে যার শুরু, তার এ বারের শারদ সংখ্যার পৃষ্ঠাসংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। গুণমানেও উজ্জ্বল শরতের সুসাথী। প্রভাকর মাঝি, গৌরী ধর্মপাল, ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়, প্রণব সেন, শ্যামলকান্তি দাশ, কাজি মুরশিদুল আরেফিন বা পবিত্র সরকার থেকে বছর ন’য়ের দময়ন্তী ভট্টাচার্যদের ছড়া পড়লেই বোঝা যায় ২৭ বছরে কতটা এগিয়েছে সুসাথী। পাতায়-পাতায় ছড়া ও মানানসই অলংকরণ, ছড়া-পত্রিকার শারদ সংখ্যা সত্যিই অনবদ্য। ছোটদের মনের কথা লিখেছেন জয়শ্রী সরকার: ‘সব শিশুরাই থাকতে যে চায় নিজের মতো করে/ উল্টো চাপে ওদের শুধুই মনটা যে যায় মরে’। হ্যারি-পটার বা টম অ্যান্ড জেরির যুগেও যাঁরা বাংলা ছড়া নিয়ে সময় দেন, চর্চা করেন, তাঁদেরও সেলাম কুড়োবে ‘সুসাথী’। সম্পাদক: প্রদীপ দেববর্মন

ভালবাসার ‘জলদর্চি’
প্রকাশিত হয়েছে জলদর্চি-র শারদ সংখ্যা। মূলত কবিতায় সাজানো এই সংখ্যা ভালবাসা ও অভিমানে মাখামাখি। অজিত মিশ্র লিখেছেন: ‘তোমাকে যে আকাশ পাঠায়, তোমাকে যে পাঠায় শালুক, তোমাকে যে দিয়ে দিতে চায়, ধার করা ভুবন তালুক’। মন্দ্রাক্রান্তা সেন লিখেছেন: ‘আমার প্রেমের কোনও শুরু নেই শেষ নেই’। গৌতম মাহাতো, শৈবালশঙ্কর চক্রবর্তী, ঋ ত্বিক ত্রিপাঠি, ভবেশ মাহাতো, সঞ্জীব ভট্টাচার্যরা জীবনকেই ছুঁতে চেয়েছেন। মেদিনীপুরের লোকশিল্প নিয়ে চিন্ময় দাসের নিবন্ধ মনোগ্রাহী। সম্পাদক: ঋ ত্বিক ত্রিপাঠি।

শরতের অবসর
খড়্গপুর থেকে প্রকাশিত হয়েছে অবসরের শারদ-সংখ্যা। অনিল ঘড়াই লিখেছেন: ‘যখন ক্রোধ জন্ম নেয়, সুন্দরবনের বাঘ আমার ভিতর গরগর করে’। ভাল লাগে ভবানীপ্রসাদ মজুমদার, অর্থিতা মণ্ডল, ভবানীপ্রসাদ গুইন, মোনালিসা ভৌমিক, শিশির চক্রবর্তীর কবিতাও। সুভাষচন্দ্র বসু লিখেছেন প্রতিমা তৈরি শুরুর দিনের গল্প। পুজোর আনন্দ শুধু যে বাবুদের একার নয়, তা যে সত্যিই ‘সর্বজনীন’, এই গল্প তা আবার মনে পড়িয়ে দেয়। সুনীল ঘোষের ‘নাম’, খুকু ভুঞার ‘নীলরতন’ও অন্য স্বাদের গল্প।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.