থিমকে মানুষের কাছে সম্পূর্ণ ভাবে তুলে ধরতে অন্তত ৫০ জন বাউলকে আনা হয়েছে বীরভূম, মালদহ, নবদ্বীপ-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে। কার্তিক খ্যাপা, বিভূতি সন্ন্যাসী, শঙ্কর চক্রবর্তী, পঙ্কজ রায়দের মতো বাউলেরা এখানে এসে অভিভূত। জীবনে এমন অভিজ্ঞতা তাঁদের সকলেরই এই প্রথম। দেশের নানা প্রান্তে তাঁরা বাউল গান শুনিয়েছেন। কেউ কেউ বিদেশেও গিয়েছেন অনুষ্ঠান করতে। কিন্তু পুজোর থিমে সরাসরি যোগদান এর আগে তাঁরা কখনও করেননি। সকলেরই বক্তব্য, বাউল গ্রামবাংলার মানুষের মনের কথা বলে। পুজোর থিমের মাধ্যমে তা তুুলে ধরার মতো ভাল কিছু হতে পারে না। তাঁদের আক্ষেপ, বাউলেরা মানুষের মনের কথা বললেও তাঁদের দুঃখ-যন্ত্রণা কেউ বোঝার চেষ্টা করেন না। কিন্তু এখানে এসে তাঁরা প্রতিদিন বহু মানুষের সঙ্গে মিশছেন। কথা বলছেন।
কার্তিক খ্যাপা কয়েক বছর আগে জাপানে গিয়ে বাউল শুনিয়ে এসেছেন। তাঁর কথায়, “জাপানিরা মুগ্ধ হয়েছিলেন বাউল শুনে। অথছ, বাংলায় বাউল গান জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। পুজোর থিমে এ ভাবে বাউলকে তুলে ধরা অবশ্যই ভাল কাজ।” একই বক্তব্য পঙ্কজ রায়েরও, “আমাদের এ ভাবে তুলে ধরার জন্য উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ।”
উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, বাউলদের সাধারণ মানুষের কাছে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে, তাঁদের দুঃখ-যন্ত্রণার কথা তুলে ধরতেই তাঁদের এই উদ্যোগ। পাশাপাশি, এর মাধ্যমে তাঁরা সম্প্রীতির কথাও প্রচার করতে চান। থিমের নাম নিয়ে তাঁরা গৌতম ঘোষেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেই নাম রাখা হয় ‘মাটির মানুষ’।
পুজো কমিটির সম্পাদক কিশোর দে বলেন, “জয়দেবের মেলায় বাউল গান শুনতে গিয়েই এই থিমের কথা মাথায় আসে। ‘মনের মানুষ’ সিনেমার শুটিং, পরে সিনেমাটাও দেখেছি। এখানে বহু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। বাউলেরা সম্প্রীতির কথা বলেন। সেই কারণেই এই থিম।” |