ছাত্রবৃত্তির চেক পেতে দালালদের দর ৩০০
ধরা পড়েও ‘অধরা’ দুই রঘুনাথগঞ্জে
মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই রয়েছে দফতরটি। সেই সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের ইস্যু করা ১১৩টি বৃত্তির চেক-সহ দু-জনকে ধরা হলেও তাদের পুলিশের হাতে তুলে দিলেন না নিগমের কর্তারা।
বীরভূমের মুরারাইতে ধরা পড়া ওই দু-জনের কাছে উদ্ধার হওয়া ৬ ও ১২ হাজার টাকার চেকগুলি ছিল সংখ্যলঘু ছাত্রছাত্রীদের নামে বৃত্তি হিসেবে পাঠানো। জঙ্গিপুরের এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, “আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬০ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য ৬ ও ১২ হাজার টাকা করে বৃত্তি বরাদ্দ হয়েছে। ওই বৃত্তির চেক জঙ্গিপুর রেল স্টেশনের কাছেই বন্টন হচ্ছে বলে রবিবার সকালে স্কুলের কয়েক জন অভিভাবক ফোনে আমার কাছে অভিযোগ করেন। ওই চেক নিতে হলে বাড়তি ৩০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে শুনে ঘটনাটি জেলা বিত্ত নিগমের অফিসার দিলওয়ার হোসেনকে বিষয়টি জানাই। সোমবার লিখিত অভিযোগও স্কুলের তরফে জমা দেওয়া হয়।” লিখিত অভিযোগ জমা পড়ার পরেই শোরগোল পড়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হতেই সোমবার দুপুরে বীরভূমের মুরারইয়ে ধরা পড়ে দুজন দালাল। ওই দুজনের কাছ থেকে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের বৃত্তি বাবদ বরাদ্দ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার চেক উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু নিগমেরই বীরভূমের এক কর্মী মিনারুল ইসলাম ওই দুজন দালালকে পাকড়াও করা সত্ত্বেও নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের নির্দেশেই পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। মিনারুল বলেন, “ধরা পড়ার পরেই সমস্ত ঘটনা কলকাতা নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জাভেদ আখতারকে টেলিফোনে জানানো হলে তিনি নির্দেশ দেন চেকগুলি নিয়ে ওই দুই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিতে। সেই মতই উদ্ধার হওয়া ১১৩টি চেক নিয়ে তাদের দুজনকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। দুজনেরই বাড়ি মুর্শিদাবাদে।” কিন্তু তাদের ছেড়ে দিতে বলা হল কেন?
জাভেদ আখতার বলেন, “আমি ওদের ছেড়ে দিতে বলিনি।”
মুরারই থানার ওসি মাধব মণ্ডব অবশ্য বলেন, “নিগমের শতাধিক চেক-সহ দুই ব্যক্তিকে ধরার পরে মিনারুল ইসলামকে থনায় অভিযোগ জমা দিতে বলা হলেও তিনি তা দেননি। নিগমের কোনও এক অফিসারকে ফোন করেন তিনি। তার নির্দেশ পেয়ে তারা থানা থেকে চলে যান।” এর আগে গত দু-দিন ধরে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে ওই দুই দালাল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের বাড়িতে অভিভাবকদের ফোন করে জঙ্গিপুর রেল স্টেশনের কাছে ডেকে পাঠায়। তাদের হাতে ৩০০ টাকা করে ঘুষ নিয়ে নিগমের ইস্যু করা ছাত্র-বৃত্তির চেক তুলে দেওয়া হচ্ছিল। জঙ্গিপুরের ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আসিফ আখতারের বাবা নুরুল আবসার বলেন, “শনিবার আমাকে ছেলের নামে ৬ হাজার টাকার চেক রয়েছে জানিয়ে জঙ্গিপুর রেল স্টেশনে ৩০০ টাকা নিয়ে আসতে বলা হয়। আমি যাইনি শুধু নয়, গোটা বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানাই।” তার পরেই বহরমপুরে নিগমের জেলা অফিসে চেক বিলি করা নিয়ে জঙ্গিপুরের ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফে অভিযোগ জমা পড়ে।
তবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীর নামের চেক প্রতি বছরের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে বহিরাগত দালালদের হাতে গেল কিভাবে? জাভেদ আখতারের জবাব, “সেটা তদন্ত না করে কি করে বলব? তবে শুনেছি চেকগুলি মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের নামে ইস্যু করা হয়েছে।” ওই ঘটনার কথা শুনে রীতিমত ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যান আবু আয়েশ মণ্ডল। তাঁর কথায়, “গুরুতর ঘটনা। কোন পথে চেকগুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে বহিরাগত দালালদের হাতে গেল, তা খোঁজ নিচ্ছি। এর সঙ্গে নিগমের কর্মীদের কোনও চক্র জড়িত আছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.