নিজেদের দেশে আগেই হোয়াইটওয়াশ করা হয়েছে, এ বার বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের তাদের ঘরের মাঠে হারানোর ‘মিশন’ নিয়ে ভারতে পা রাখল অ্যালিস্টার কুকের ইংল্যান্ড। আজ টিম সহ রাজীব গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পরে অধিনায়ক কুক বা অন্য কেউ প্রচারমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে হোটেলে পৌঁছয় টিম। মিডিয়া ম্যানেজার জানিয়ে দেন, বিমানযাত্রায় ক্লান্ত দলকে টিম ম্যানেজমেন্ট বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রসঙ্গত, ইংল্যান্ড এই সফরে পাঁচটি একদিনের ম্যাচ ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলবে। প্রথম একদিনের ম্যাচ হায়দরাবাদে ১৪ অক্টোবর, পরে চারটি যথাক্রমে দিল্লি (১৭), মোহালি (২০), মুম্বই (২৩) ও কলকাতা (২৫)।
স্বভাবতই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই সিরিজ শুরুর দশ দিন আগে ভারতে আসা। দুটো প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলার কথা কুকদের। প্রথমটা আগামী শনিবার ৮ অক্টোবর, পরেরটা ১১ অক্টোবর। দুটো ম্যাচই জিমখানা মাঠে। আজ কিছু না বললে কী হবে, এ বারের সিরিজের তাৎপর্য যে অন্যরকম, তা দেশ ছাড়ার আগেই বলে এসেছেন। |
“বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ওদের মাঠে খেলার চেয়ে কঠিন কিছু হতে পারে না।” কুক মুখে এ কথা বললে কী হবে, খুব ভাল করেই জানেন ভারতের মাটিতে ভারতকে হারানোর বড় সুযোগ এ বার তাঁদের সামনে। শেষবার ইংল্যান্ড ভারতে ওয়ান ডে সিরিজ খেলেছে ২০০৮-০৯ এ। সে বার ইংল্যান্ড ভারতের কাছে হেরেছিল ০-৫। সৌজন্য যুবরাজ সিংহ ও বীরেন্দ্র সহবাগ। যুবরাজ ওই সিরিজে করেছিলেন ৩২৫ রান, গড় ১০৮.৩৩। আর সহবাগের অবদান ছিল ৩১৪ রান, গড় ৬২.৮০। তার আগে ২০০৫-০৬ এ ইংল্যান্ড হেরেছিল ১-৫। শেষবার ভাল ফল বলতে ২০০১-২০০২ এর সিরিজে ৩-৩। কিন্তু সবই অতীত। ভারত যতই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হোক না কেন, টিম তো চোট-আঘাতে জর্জরিত। সচিন, সহবাগ, যুবরাজ নেই, ভারতীয় ব্যাটিং অনেকটাই তরুণদের উপর নির্ভরশীল। পেসারদের মধ্যে নেই জাহির খান বা ইশান্ত শর্মা। তার উপর ইংল্যান্ডে শোচনীয় ভাবে হেরে আসার পর এই সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর চাপ। সে জন্যই নামী ক্রিকেট লিখিয়ে পিটার রোবাক লিখেছেন, “এটাই সম্ভবত ভারতে গিয়ে সিরিজ জেতার সবচেয়ে ভাল সুযোগ। আশা করা যেতেই পারে, এই ইংল্যান্ড ভারতে সিরিজ জেতার ক্ষমতা রাখে।”
ইংল্যান্ড দলে অলরাউন্ডার স্টুয়ার্ট ব্রড না থাকলে কী হবে, আছেন ওয়ান ডে টিম থেকে বাদ পড়ে ফিরে আসা কেভিন পিটারসেন। ভারতের বিরুদ্ধে সদ্য শেষ হওয়া ওয়ান ডে সিরিজে টিম থেকে বাদ পড়েছিলেন পিটারসেন। এ বারের সফরে তাঁর অভিজ্ঞতা যে গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে, তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন কুক। বলেছেন, “কেভিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। তা ছাড়া আমার মনে হয় ২০১৫-এর বিশ্বকাপে আমাদের প্ল্যানিংয়ের অঙ্গ কেভিন।” পিটারসেন কিন্তু গত দু’বছরে ওয়ান ডে সিরিজে সে ভাবে রান পাননি। ২০০৯ এ অধিনায়কত্ব ছাড়ার পরে ৩২টি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেছেন পিটারসেন, গড় মাত্র ২২.৮৬। শেষ ওয়ান ডে সেঞ্চুরি ভারতের বিরুদ্ধে কটকে, তিন বছর আগে।
মাঝে ওপেনার হিসেবে পিটারসেনকে নামিয়ে সাফল্য পাওয়া যায়নি। তাই এ বারের সফরেও ওপেনার পিটারসেনকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। কুক বলেছেন, “কেপি-র ব্যাটিং অর্ডার হতে পারে তিন বা চার। ওখানে নেমেই ও সবচেয়ে বেশি সফল।” যা ইঙ্গিত মিলছে, পিটারসেনকে দিয়েই ফাটকাটা এ বারের সফরে খেলার কথাই ভেবে রেখেছে ইংল্যান্ড। |