বিষ্ণুপুর শহরের প্রাচীন বড় পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম লালবাঁধের সর্বমঙ্গলা।
কথিত আছে, শ্রী রামকৃষ্ণ এই দেবীমুর্তি দর্শন করে সমাধিস্থ হয়েছিলেন। আগে লালবাঁধের পাড়ে বেলগাছের তলায় টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরে সর্বমঙ্গলাদেবী ছিলেন। এখন সেই গাছকে ঘিরে কংক্রিটের মন্দির তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে পূজিত হচ্ছেন গঙ্গামাটির সেই প্রাচীন দেবীমুর্তি। এই মন্দিরে শনি ও মঙ্গলবার বাদ দিয়ে রোজই ভাতের সঙ্গে হয় পোড়া মাছের ভোগ দেওয়া হয়। প্রতি বছর ধুমধামের সঙ্গে হয় দুর্গা পুজো। এখানকার পুজোর কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। মূল ঘটের সামনে স্থাপন করা হয় আরও ৫টি ঘট। লালবাঁধের ঘাট থেকে দোলায় চেপে আসে নবপত্রিকা। ষষ্ঠীর দিন বেলগাছের নীচে হয় ‘বেল্লিবরণ’। অষ্টমীর ক্ষণ ঘোষণার আগে চলে চণ্ডীপাঠ। নবমীর দিন নরনারায়ণ সেবার আয়োজন করা হয়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। |
বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, “বিষ্ণুপুর রাজবাড়ির মৃণ্ময়ী মুর্তিটিও গঙ্গামাটির। এই মুর্তিও গঙ্গামাটির। দু’টির মধ্যে অদ্ভুত মিল আছে। কাজেই এই মুর্তিও বেশ প্রাচীন।”
সর্বমঙ্গলাদেবীর নিত্য পুজারি সৌমেন রায় বলেন, “১০৮ট পদ্মে সাজানো হয় দেবীকে। মহানবমীর দিন ভোগে দিতে হয় পোড়া মাছ। পুজোয় বিশেষ পুরোহিত হিসেবে থাকেন কালীশঙ্কর রায়।” বর্তমানে এই পুজো লালবাঁধ ট্রাস্টের নিয়ন্ত্রণে চলে। ওই ট্রাস্টের সভাপতি উদয় চক্রবর্তী জানান, শ্রীরামকৃষ্ণের স্মৃতি বিজড়িত এই পুজো তাঁর দাদু রামনলিনী চক্রবর্তী বেলগাছটিকে ঘিরে মন্দির বানিয়ে পুজো শুরু করেছিলেন। ইতিহাস যাই থাক। এই পুজোকে ঘিরে মাতেন গোটা শহর। |