পুজোর রুটিন |
যোগেন চৌধুরী (চিত্রকর)
কলকাতায় আমার বাড়ি। কিন্তু কর্মসূত্রে অথাৎ বিশ্বভারতীর কলাভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ হিসেবেই আমার পরিচিতি বেশি। বছরের বেশিভাগ সময়টা এই শান্তিনিকেতনেই কাটে। তবে এ বার ষষ্ঠী থেকে টানা এক সপ্তাহ সপরিবার কলকাতার বাড়িতে থাকব। বাড়ির জরুরি কাজ ছাড়া ছবি আঁকার কাজেই মন দেব। কলকাতার পুজোর ভিড়ভাট্টা ভাল লাগে না। তবু অনুরোধের ঢেঁকি গিলতে হয়তো কোথাও বেরোতে হতে পারে। |
|
অনন্ত মালাকার (প্রতিমা শিল্পী)
আমি কীর্ণাহারের বাসিন্দা। শোলার তৈরি দুর্গা, সরস্বতী অনেক তৈরি করেছি। বিদেশে সে-সবের পুজোও হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এ বার সাড়ে তিন ফুট উঁচু টেরাকোটার প্রতিমা তৈরি করেছি। তা জার্মানির বন শহরে পাড়ি দিয়েছে। আর নিউ জার্সিতে গিয়েছে ৬ ফুট উচ্চতার প্রতিমা। এই এক বছর প্রতিমা তৈরি করতেই সময় কেটেছে। গত বছর পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে পুজো কাটাতে পারিনি। এ বার সপ্তমী-অষ্টমী বাড়ির সবার সঙ্গে কাটানোর ইচ্ছা রয়েছে। |
|
স্বপ্না চক্রবর্তী (লোকসঙ্গীত গায়িকা)
বয়স কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু এখনও লোকজন পুজোর সময় আমাকে ডাকেন। পুজোর উদ্বোধনে বা সংবর্ধনা সভায়। গানের অনুষ্ঠান তো আছেই। তাই দুর্গাপুজোটা খুব ব্যস্ততার মধ্যে কেটে যায়। এ বছর যেমন পঞ্চমীর দিন হাওড়ার আমতায় মণ্ডপের উদ্বোধনে যাওয়ার কথা। ষষ্ঠীতে দুর্গাপুর। সপ্তমীতে সিউড়িতে নিজের পাড়ায় জমজমাট অনুষ্ঠান। নবমীতেও ব্যস্ত থাকব। অষ্টমীটাই ফাঁকা। সেদিন আত্মীয়দের সঙ্গে আড্ডা মারব, ঘুরতে যাব। |
|
চন্দ্রনাথ সিংহ (পঞ্চায়েত মন্ত্রী)
এখন বোলপুরে বসবাস করি। কিন্তু আমি আদপে মুরারই ১ ব্লকের বাঁশলৈ গ্রামের বাসিন্দা। খুব আড্ডাবাজ বলেই আমার পরিচিতি রয়েছে। ইদানীং কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় আড্ডা মারার ফুরসত পাই না। শনি-রবিবারও ঠাসা কর্মসূচি থাকায় পরিবারের সঙ্গেও সময় কাটাতে পারি না। তাই ঠিক করেছি, পুজোর পাঁচ দিন সপরিবারে বাঁশলৈ গ্রামে থাকব। সেখানে আমাদের প্রায় সাড়ে চারশো বছরের পারিবারিক পুজো হয়। কাজকর্ম বিশেষ নয়, পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে প্রাণখুলে আড্ডা মারব। |
|
আদিত্য মুখোপাধ্যায় (লেখক ও শিক্ষক)
নলহাটির ধরমপুর গ্রামে বাড়ি হলেও কর্মসূত্রে এখন কোটাসুরে থাকি। শিক্ষকতার সময়টুকু ছাড়া বাকি সময়টা লেখালেখি করে কাটাই। অমেক দিন ধরেই ভাবছি বীরভূমের প্রাচীন দুর্গাপুজোগুলির ইতিহাস, আচার-অনুষ্ঠান এবং স্থানীয় সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করব। আগে কেমন ছিল, বর্তমানে পুজো কী রূপ নিয়েছে, জানার চেষ্টা করব। এ বার তাই গাড়ি নিয়ে গ্রামে গ্রামে যাব পুজো দেখতে। ছবিও তোলা হবে। পরে গবেষণা করে একটা বই লিখব। |
|
অর্ণব মজুমদার (প্রত্নতত্ত্ববিদ)
বয়স ৮০ পেরিয়েছে। এখনও বীরভূম জেলা নিয়ে নানা তথ্য সংগ্রহ করি। এটাই আমার রোজনামচা। তবে বছরের বাকি দিনগুলো থেকে দুর্গাপুজোর পাঁচটা দিন আমার কাছে সত্যিই আলাদা। বাতিকার গ্রামে আমাদের অনেক প্রাচীন পারিবারিক পুজো হয়। এই সময়টা ওই পুজো নিয়েই ব্যস্ত থাকি। পুজোর ক’দিন খবরের কাগজ পড়া কিংবা টিভি দেখারও সময় হয় না। |
তথ্য: অরুণ মুখোপাধ্যায়। |
|