সম্পাদকীয় ২...
ক্ষমতার যুক্তি
উরোপীয় পার্লামেন্ট পৃথক এবং সার্বভৌম একটি প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রের দাবিকে সমর্থন জানাইয়াছে। ইহাও জানাইয়াছে যে আগামী এক বৎসরের ভিতর এই সমস্যাটির সমাধান হওয়া জরুরি। পাশাপাশি, সেই পার্লামেন্ট ইহাও মনে করে যে, রাষ্ট্রপুঞ্জের বর্তমান অধিবেশন হইতেই প্যালেস্তাইন বিষয়ে একটি নির্ণায়ক সিদ্ধান্তের অভিমুখে যাত্রার সূচনা হওয়া উচিত। প্রশ্ন হইল, তাহাতে কী? প্রশ্নটি সঙ্গত। কারণ, ইজরায়েল বিরক্ত এবং তাহাদের স্বাভাবিক মিত্র আমেরিকাও বন্ধু-রাষ্ট্রের স্বার্থরক্ষায় উদ্গ্রীব। সার্বভৌম প্যালেস্তাইন রাষ্ট্র বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ কোনও আলোচনা শুরু করিবার পূর্বেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ভেটো নিক্ষেপের ব্রহ্মাস্ত্রটি ছুড়িয়াছেন। বর্তমান বিশ্বে মার্কিন সাবধানবাণী অগ্রাহ্য করিয়া কত দূর কী করা যাইবে, তাহা বিবেচনার বিষয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের তৎপরতাও যদি অকালে থমকায়, বিস্মিত হইবার কিছু নাই। অন্য দিকে, ইজরায়েল সময় বুঝিয়া ‘সেটলমেন্ট’ অর্থাৎ বসতি নির্মাণের কার্যকলাপ শুরু করিয়া দিয়াছে। প্যালেস্তাইনের সার্বভৌমত্বের পক্ষে সমর্থন যত বাড়িতেছে, ইজরায়েলি পরুষ আচরণও যে তাহার সহিত আনুপাতিক হারেই বৃদ্ধি পাইবে, তাহা প্রত্যাশিতই। কারণ, আমেরিকা সহায়। সুতরাং রাষ্ট্রপুঞ্জের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য-রাষ্ট্রও যদি প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব সমর্থন করে, তাহাতেই বা কী?
ইজরায়েল পুনরায় এক সহস্র নূতন বাসগৃহ বানাইবার যে সংকল্পের কথা ঘোষণা করিয়াছে, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট-এর তাহাতে ঘোর আপত্তি। জানাইয়া দিয়াছে, পূর্ব জেরুজালেম এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক-এ অধিকৃত অঞ্চলে নূতন বাড়ি গড়ার কর্মসূচি হইতে ইজরায়েল যেন বিরত থাকে। তেল আভিভ নির্বিকার। দীর্ঘকালের একটি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সমস্যার সমাধান এই রূপে আসিতে পারে কি না, সেই ধরনের যাবতীয় সংশয় ভেটো-প্রতাপের সম্মুখে নতশির। প্যালেস্তাইনের পক্ষে একটি ক্ষুদ্রতর লাভের সম্ভাবনা অবশ্য বিদ্যমান। রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য রাষ্ট্র না হইলেও সদস্যপদ-হীন পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি। ইহা প্রবাদোক্ত ‘কানা মামা’-র তুল্য যদিও, কিন্তু কূটনীতির ময়দানে তাহা নিতান্তই নিরর্থক নহে। কারণ, প্যালেস্তাইন আশা করিতেছে, যদি সেই স্বীকৃতিটুকুও পাওয়া যায়, তাহা হইলে ইজরায়েলের সহিত পরবর্তী দর-কষাকষির ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা হইবে। সত্যই কী সুবিধা হইবে, তাহা ভবিষ্যতের বিষয়, কিন্তু প্যালেস্তাইন অন্তত এই আশাটি পুঁজি করিয়া অগ্রসর হইবার কথা চিন্তা করিতেছে। সন্দেহ নাই, যদি এইরূপ ঘটে, তাহা একটি প্রতীকী জয়ের তুল্য হইবে। একই সঙ্গে, ইহাকে নৈতিক জয় বলিলেও অন্যায্য হইবে না। সমস্যা হইল, পরিভাষায় যাহা ‘রিয়ালপলিটিক’ নামে খ্যাত, সেই পরিসরে প্রতীক এবং নীতি সর্বদা বিশেষ তাৎপর্য পায় না। একই সঙ্গে ‘রিয়ালপলিটিক’ই বলিবে, প্রতীকী বিজয় ব্যতীত প্যালেস্তাইনের পক্ষে এই মুহূর্তে অধিক কিছু লাভ করাও কঠিন। পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি উত্তপ্তই রহিয়া গেল। আরব দুনিয়া টালমাটাল। তাহাতে নূতন ঘৃতাহুতি পড়িবে না তো?


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.