যন্ত্র নেই। নেই পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত কর্মীও। তাই অন্য রাজ্য থেকে অনেক পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় জনপঞ্জি (এনপিআর) তৈরির কাজ।
‘এনপিআর’ প্রকল্পে দেশের প্রতিটি নাগরিকের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য, যেমন তাঁর ছবি, প্রতিটি আঙুলের ছাপ, চোখের মণির আদল-রং ইত্যাদি সরকারের হেফাজতে মজুত রাখার কথা। নাগরিকেরা হাতে পাবেন একটি করে কার্ড বা পরিচয়পত্র, যার নাম ‘আধার’। সেই কার্ডের কম্পিউটার চিপে গচ্ছিত থাকবে ওই নাগরিকের সম্পূর্ণ পরিচয় ও তাঁর সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য। প্রয়োজনে কম্পিউটারে ওই পরিচয়পত্র ঢুকিয়ে তা জেনে নেওয়া যাবে।
অন্য রাজ্যে এই প্রকল্পের কাজ অনেকটা এগিয়ে গেলেও, এ রাজ্য কেন পিছিয়ে, তা জানতে ৩০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে বৈঠক ডেকেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব আর কে সিংহ। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি মুখ্যসচিব সমর ঘোষের সঙ্গে মহাকরণে একপ্রস্ত আলোচনাও করেছেন রাজ্যের জনগণনা অধিকর্তা দীপক ঘোষ।
ওই প্রকল্পে যুক্ত অফিসারেরা জানিয়েছেন, এ বছর মে মাসে এ রাজ্যের ৮ কোটি ১৫ লক্ষ লোকের পরিচয়পত্র তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ৬ লক্ষ লোকের কাছ থেকে ‘বায়োমেট্রি’ পরীক্ষার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা গিয়েছে। ২০১২-র ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু অফিসারেরা জানিয়েছেন, এই গতিতে তথ্য সংগ্রহ হলে তার মধ্যে এই কাজ শেষ করা অসম্ভব। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, কেরল, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ বেশ কিছু রাজ্য এই কাজে পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় অনেক এগিয়ে গিয়েছে।
কেন এই অবস্থা? জনগণনা অধিকর্তার ব্যাখ্যা, “এই কাজের জন্য রাজ্যে পাঁচ হাজার বায়োমেট্রি যন্ত্র এখনই দরকার। কিন্তু পাওয়া গিয়েছে মাত্র ১৫৫টি। তা দিয়ে এত তাড়াতাড়ি এই কাজ শেষ করা অসম্ভব।”
কিন্তু পর্যাপ্ত যন্ত্র কেন মিলছে না? প্রকল্পের এক অফিসারের বক্তব্য, “এ দেশে আগে কখনও এই যন্ত্র তৈরি করা হয়নি। তাই যন্ত্র তৈরি ও তা যাচাই করে পাঠাতে সময় লাগছে।” যন্ত্রের পাশাপাশি অভাব রয়েছে প্রশিক্ষিত সমীক্ষকেরও। সে ক্ষেত্রেও একই সমস্যা হচ্ছে বলে মনে করছেন অফিসারেরা। তবে কী করে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে, তা নিয়ে দিল্লির বৈঠকে কিছুটা দিশা পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন রাজ্যের কর্তারা।
|