স্কুল পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলায় তৃণমূলের জয়ের ধারা অব্যাহত রয়েছে। অন্য দিকে পুরুলিয়ায় ওই নির্বাচনের ফল মিশ্র। গত রবিবার বাঁকুড়া জেলার ১৩টি স্কুলে তৃণমূল ৬-০ আসনে জয়ী হয়। বাকি তিনটি স্কুলের মধ্যে দু’টিতে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট জয়ী হয় এবং একটি স্কুলে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সারেঙ্গা ব্লকের শালডহরা উচ্চবিদ্যালয়, কৃষ্ণপুর হাইস্কুল, জামবনি হাইস্কুল, রাইপুর ব্লকের শাস্ত্রীনগর ঈশানচন্দ্র বিদ্যায়তন, গড়রাইপুর হাইস্কুল, রাইপুর গার্লস হাইস্কুল, ইঁদপুর ব্লকের গোঁসাই জনাড় হাইস্কুল, ছাতনা ব্লকের ভগবানপুর জুনিয়র হাইস্কুল, বড়জোড়া ব্লকের ছান্দার ও জোড়শাল হাইস্কুল, সিমলাপালের লক্ষ্মীসাগর হাইস্কুল, গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের চৌশাল হাইস্কুল এবং বাঁকুড়া শহরে কেন্দুয়াডিহি হাইস্কুলে ৬টি আসনে নির্বাচন হয়। সব ক’টি আসনেই তৃণমূলের প্রার্থীরা জেতেন।
ইঁদপুরের গোতড়া হাইস্কুলে ৬টির মধ্যে ৫টিতে তৃণমূলের প্রার্থীরা জিতেছেন। ছাতনার জোড়হিড়া হাইস্কুলে ৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল, কংগ্রেস ও সিপিএমের প্রার্থীরা দুটি করে আসনে জিতেছেন। সারেঙ্গা মহাত্মাজি স্মৃতি বিদ্যাপীঠে তৃণমূল পাঁচটি ও কংগ্রেস একটি আসনে জয়ী হয়েছে। জেলা তৃণমূলের অন্যতম কার্যকরী সভাপতি শ্যামল সরকার বলেন, “জঙ্গলমহলের মানুষে যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে আস্থাশীল, স্কুল ভোটের ফলেই তার প্রমাণ মিলেছে।”যদিও সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অজিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যে পালাবদলের পরবর্তী এই সময়ে আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতার জন্য বিভিন্ন স্কুল ভোটে হেরেছি। এখন জনগণের একটা বড় অংশ আমাদের দলের সঙ্গে রয়েছে।”
পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ান, বোরো, মানবাজার, কেন্দা, বরাবাজার, পুঞ্চা, হুড়া, পাড়া, কাশীপুর, রঘুনাথপুর-১, বলরামপুর, ঝালদা, আড়শা ব্লক ও পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন এলাকার স্কুলগুলিতে গত রবিবার নির্বাচন হয়। বোরো থানার বেলগড়িয়া হাইস্কুলে তৃণমূল জিতেছে। আগে এই স্কুলের ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। আবার ওই থানার জোরোবাড়ি হাইস্কুলের নির্বাচনে সিপিএম ৪ ও তৃণমূল ২টি আসনে জিতছে। পুঞ্চা থানার শ্যামাকাট হাইস্কুলে এ বার তৃণমূল জিতেছে।
কেন্দার দরোডি হাইস্কুলে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট ৬টি আসনে জয়ী হয়েছে। কেন্দার জামবাদ আঞ্চলিক হাইস্কুলে তৃণমূল ও সিপিএমের প্রার্থীরা তিনটি করে আসনে জিতেছেন। এই স্কুলের পরিচালন সমিতির ক্ষমতা বরাবর সিপিএমের ছিল। বরাবাজারের সরবেড়িয়া হাইস্কুলের ছ’টি আসনেই তৃণমূলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। হুড়া থানার হিজুলি হাইস্কুলে তৃণমূল জিতেছে। পুরুলিয়া শহরের শান্তিময়ী গালর্স হাইস্কুল, পাড়া ব্লকের আনাড়া গালর্স হাইস্কুল ও শিবনারায়ণ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জিতেছে তৃণমূল। রঘুনাথপুর-১ ব্লকের সাঁকড়া হাইস্কুলে এসইউসি’র সাথে জোট করে তৃণমূল জয়ী হয়েছে। বলরামপুর লালিমতী গালর্স হাইস্কুলে, কাশীপুরের টাড়া হাইস্কুল ও ঘাট-রাঙামাটি হাইস্কুলে, পুরুলিয়া- ২ ব্লকের গোলামারা হাইস্কুলে ও পাড়া ব্লকের রিগুডি হাইস্কুলে তৃণমূল জিতেছে। তবে পুরুলিয়া ১ ব্লকের চাকদা হাইস্কুল ও আড়শা ব্লকের হেটগুগুই জুনিয়র হাইস্কুলে জিতেছে বামফ্রন্ট। ঝালদা-২ ব্লকের বেগুনকোদর হাইস্কুলে জিতেছে কংগ্রেস ও জেএমএম জোট। আড়শার রাঙ্গামাটি হাইস্কুলে জিতেছে কংগ্রেস। সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য কৃষ্ণপ্রসাদ সিংহদেও বলেন, “আমরা জনসংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছি।” তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখন স্বচ্ছ ও ভয়শূন্য পরিবেশে ভোট হচ্ছে বলেই অভিভাবকরা সিপিএমের বিরুদ্ধে আমাদের প্রার্থীদের পক্ষে রায় দিচ্ছেন।” |