অভিযুক্তদের ধরে গণপিটুনি
অন্যায়ের প্রতিবাদ করে খড়দহে নিগৃহীত শিক্ষক
ন্যায়ের প্রতিবাদ করে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। সোমবার রাতে খড়দহের কল্যাণনগরের একটি ঘটনা সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন। এ বার আক্রান্ত হলেন এক শিক্ষক। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে এক যুবককে মারধর করে খালের জলে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছিল কয়েক জন। রাস্তায় গোলমাল শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন কল্যাণনগর বিদ্যাপীঠের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রথীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত। সেই ঘটনার প্রতিবাদও করেন। তারই ‘শাস্তি’ হিসেবে ওই শিক্ষককে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় পাঁচ জন গ্রেফতার হয়েছে। বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে মার খান রথীন্দ্রনাথবাবুর ছেলে পুষ্করেন্দুও। রাতেই তাঁদের বেলঘরিয়ার এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।

নিগৃহীত সেই শিক্ষক।
মঙ্গলবার, খড়দহে।
এর পরেই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার দুপুরে ওই ঘটনার ‘বদলা’ নেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সোমবার রাতে যারা রথীন্দ্রনাথবাবু ও তাঁর ছেলেকে মারধর করে বলে অভিযোগ, তাদের পাঁচ জনকে বাড়ি থেকে তুলে এনে একটি ক্লাবের সামনের মাঠে গণপিটুনি দেওয়া হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি সাইকেল সারাইয়ের দোকানও।
অভিযোগ, এলাকায় অসামাজিক কাজকর্ম চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। এলাকার মানুষের তা অজানাও ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাড়ার ওই সাইকেল সারাইয়ের
দোকানটিতে মদের ঠেক বসত। সন্ধ্যা হলেই খালপাড় জুড়ে চলত দুষ্কৃতীদের রমরমা। মাঝেমধ্যে ছোটখাটো প্রতিবাদও হত। কিন্তু দুষ্কর্ম ঠেকানো যায়নি। শেষমেশ পাড়ার প্রিয় ‘মাস্টারমশাইয়ের’ গায়ে হাত পড়তেই বেরিয়ে এল এত দিন ধরে জমতে থাকা ক্ষোভ।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকেন রথীন্দ্রনাথবাবু। ওই শিক্ষককে শ্রদ্ধা করেন পাড়ার সকলেই। স্থানীয় বাসিন্দা পার্থ দাস বলেন, “আমাদের এখানে প্রায় সকলেই মাস্টারমশাইয়ের ছাত্র। এত দিন সবাই চুপ করে ছিলেন। কিন্তু মাস্টারমশাইকে এ ভাবে মারধর করায় সকলেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন।” তাঁর আরও অভিযোগ, “আমাদের এখানে কোনও পুলিশি নিরাপত্তা নেই। কোনও ঘটনা ঘটলে কোন থানার পুলিশ আসবে, তা নিয়েই টানাপোড়েন চলতে থাকে। তাই অভিযুক্তদের প্রথমে পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে।”
শিক্ষককে নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্তদের এ ভাবেই পিটিয়ে ‘শাস্তি’ দিলেন এলাকাবাসী।
উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই এলাকায় যে রমরমিয়ে অসামাজিক কাজ চলছে, এমন নির্দিষ্ট অভিযোগ আগে কেউ কখনও করেননি। তবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। শিক্ষকের উপরে হামলার ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নাম রাকেশ, প্রফুল্ল, বিমান, রাজকুমার এবং অসীম। আরও দু’জন পলাতক। তাদের নাম সৌমিত্র সাহা ওরফে ভোম্বল এবং রাম। অভিযুক্তদের উপরে হামলার ঘটনায় আলাদা মামলা দায়ের হয়েছে।”

—নিজস্ব চিত্র



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.