বদলার সিরিজেও সম্ভবত বিশ্বকাপজয়ী সেরা টিম নিয়ে নামা হচ্ছে না মহেন্দ্র সিংহ ধোনির। প্রথম দলের অন্তত চার জন প্রবল ভাবে অনিশ্চিত। সচিন তেন্ডুলকর, বীরেন্দ্র সহবাগ, যুবরাজ সিংহ এবং জাহির খান (খুব তাড়াতাড়ি ফিরতে পারলেও অস্ট্রেলিয়া সফরে)। ইশান্ত শর্মা এবং রোহিত শর্মাকেও পাওয়া যাবে না বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
আর হরভজন সিংহ ফিট হয়ে গিয়েও ঝড়ের মুখে পড়তে পারেন। জাতীয় নির্বাচকদের একাংশ সর্দারকে নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ। এঁরা পনেরো জনের দলে নিশ্চিত ভাবেই রাখতে চান রবীন্দ্র জাডেজাকে। বাকি দুই স্পিনার হিসেবে এঁদের পছন্দ রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং প্রজ্ঞান ওঝা। তবে হরভজনও সমর্থনহীন নন। অন্তত দু’জন নির্বাচক তো তাঁর পাশে দাঁড়াবেনই, অধিনায়ক ধোনির সমর্থনও থাকবে তাঁর অভিজ্ঞ অফস্পিনারের দিকে। |
ভারতীয় ক্রিকেটমহল অবশ্য এ সবের চেয়েও অনেক বেশি আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে উত্তরাঞ্চল থেকে নতুন জাতীয় নির্বাচকের আগমনী সুর কেমন হয় তা নিয়ে। এক সময় নির্বাচকদের ‘জোকার’ বলা মোহিন্দর অমরনাথের যে নির্বাচক হিসেবে অভিষেক হতে যাচ্ছে বৃহস্পতিবারের বৈঠকেই! পূর্বাভাস হচ্ছে, বরাবর বিদেশি কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফে অ্যালার্জি থাকা মোহিন্দরের উপস্থিতি না ডানকান ফ্লেচারের জন্য অস্বস্তি তৈরি করে।
আশ্চর্যের হচ্ছে, ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসকদের মধ্যে দারুণ কোনও ভাবান্তর চোখে পড়ছে না যা দেখে মনে হতে পারে, এটাকে সত্যিই বদলার সিরিজ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের দল নির্বাচন। আর সেই বৈঠকের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে চোট পাওয়া ক্রিকেটারদের নিয়ে কোনও পরিষ্কার ছবি পৌঁছয়নি জাতীয় নির্বাচকদের হাতে। ‘ইনজুরি ম্যানেজমেন্ট’ চালু করা নিয়ে এত কথা হচ্ছিল ইংল্যান্ড সফরের বিপর্যয় চলার সময়। কিন্তু বাস্তবে সে সবের কোনও চিহ্ন নেই। পরিস্থিতি এমন যে, জাতীয় নির্বাচকেরা বোর্ডের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, এ বার থেকে দল নির্বাচনী বৈঠকের অন্তত সপ্তাহ খানেক আগে তাঁদের হাতে চোট পাওয়া প্লেয়ারদের চার্ট তুলে দেওয়া হোক। যাতে একটা বাস্তবসম্মত ধারণা নিয়ে তাঁরা সভায় ঢুকতে পারেন।
সচিনকে নিয়ে যা খবর, তাতে তিনি এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। এমনিতেই এখন এক দিনের ক্রিকেট কম খেলেন তিনি। বছরের শেষে অস্ট্রেলিয়া সফর। পুরোপুরি ফিট না হয়ে ওয়ান ডে-তে নামার ঝুঁকি তিনি নেবেন না। ইংল্যান্ডে যুবরাজের আঙুলে চোট লেগেছিল। শোনা যাচ্ছে, সেই চোট ছাড়াও ফুসফুসের সংক্রমণ থেকেও পুরোপুরি মুক্ত হননি তিনি। দিল্লিতে ফোন করে জানা গেল, ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজে নামাটা যে একটু তাড়াহুড়ো হয়ে গিয়েছে, সেটা এখন বুঝতে পারছেন সহবাগ। ইংল্যান্ডে এক বার তাঁর হাত থেকে ব্যাট ছিটকে গিয়েছিল। তাতে অস্ত্রোপচার হওয়া কাঁধে ফের ঝটকা লাগে। ব্যথা বেড়ে যায়। এখন দিল্লিতে থাকলেও দিন দুইয়ের মধ্যে তিনি ফিরে যাচ্ছেন জাতীয় অ্যাকাডেমিতে। এক দিক থেকে সচিন-সহবাগের চোট নির্বাচকদের কাজ কিছুটা সহজ করে দেবে। ইংল্যান্ডে প্রতিশ্রুতি দেখানো অজিঙ্ক রাহানেকে তাঁরা সুযোগ দিতে চান। মহাতারকারা সবাই থাকলে সেটা হয়ে উঠত কি না সন্দেহ। কিন্তু রক্তাল্পতায় ভোগা বোলিং বিভাগ কী ভাবে সাজাবেন তা ভেবে কোনও কূলকিনারা পাচ্ছেন না নির্বাচকেরা। চোট-আঘাত নিয়ে আকাশ এমন মেঘলা হয়ে রয়েছে যে, এখন পার্থিব পটেল না ইংল্যান্ডে ভাল পারফরম্যান্সের দৌলতে ব্যাটসম্যান হিসেবে ঢুকে পড়েন! কে বলবে এটা ইংল্যান্ডের কালা সফরের প্রত্যাঘাতী সিরিজের দল নির্বাচন! |