|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু... |
আসুন, নিজেদের শুধরাই |
আজকাল প্রায়ই সংবাদপত্রে দেখি যে, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতির জন্য ডাক্তার মার খেলেন রোগীর আত্মীয়দের হাতে। এ সম্বন্ধে কিছু বলার প্রয়োজন অনুভব করছি।
বর্তমানে জনসাধারণের মধ্যে বহু-আলোচ্য একটি বিষয় ডাক্তারদের ব্যবসায়িক মানসিকতা, মানবিকতার অভাব, কর্তব্যে গাফিলতি ইত্যাদি। ক্রমাগত এই আলোচনার দরুন বেশির ভাগ জনসাধারণের মনে ডাক্তার সম্বন্ধে একটি খারাপ ধারণা স্থায়ী ভাবে জায়গা নিয়েছে। এর ফলে, যখনই কোনও রোগী বা রোগিণীর মৃত্যু হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে প্রথমেই সেই মৃত বা মৃতা ব্যক্তির আত্মীয়দের মনে সন্দেহ দেখা দিচ্ছে যে, কর্তব্যরত ডাক্তারের কোনও ত্রুটি ছিল কি না এবং যদি সামান্যতম ত্রুটির আভাসও তাঁরা পান তবে অনেক ক্ষেত্রেই উত্তেজিত হয়ে তাঁরা ডাক্তারদের শারীরিক ভাবে নিগৃহীত করছেন। অনেক ক্ষেত্রেই হয়তো ডাক্তারদের গাফিলতি থাকে, কিন্তু আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি যে, এই গাফিলতির কারণ কী? আমরা কখনও কি ভাবি, যে সরকারি হাসপাতালে রোগীর আত্মীয় হিসাবে রোগীকে সামান্য সময়ের জন্য দেখতে গিয়ে রোগীর ওয়ার্ডের দুর্গন্ধময় পরিবেশের জন্য আমরা অতিষ্ঠ, সে ক্ষেত্রে একজন ডাক্তার কী ভাবে তাঁর কর্মজীবন ওই দুর্গন্ধময় পরিবেশে কাটাচ্ছেন। একই সঙ্গে আছে অগণিত রোগীর চাপ।
আরও একটি সমস্যা হল, শৃঙ্খলাহীন পরিবেশ। সবাই কী ভাবে নিজের কাজটি আগে গুছিয়ে নেব সেই চিন্তায় ব্যস্ত। সুতরাং, এঁদের সামলানোও ডাক্তারদের একটি অতিরিক্ত কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অসহনীয় পরিবেশের মধ্যে ঠান্ডা মাথায় কাজ করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ। তবু সরকারি হাসপাতালে বহুসংখ্যক রোগীই প্রতিদিন সুস্থ হয়ে উঠছেন। এটাই ডাক্তারদের কৃতিত্ব। |
|
ধরা যাক, কোনও চিকিৎসাধীন রোগী মারা গেলে তাঁর আত্মীয়রা অনেক সময় বলতে শুরু করেন, ডাক্তারবাবু কেন এটা করলেন, কেন ওটা করলেন না, ইত্যাদি ইত্যাদি। আশ্চর্য, চিকিৎসাবিদ্যা কার্যত কিছু না জেনেই তাঁরা মন্তব্য করে চলেন।
একই দৃশ্য দেখা যায় যখন আমরা ব্যাঙ্কে টাকা তোলা বা জমা দেওয়ার লাইনে। দাঁড়াবার অল্প সময়ের মধ্যেই কিছু ব্যক্তি অধৈর্য হয়ে কাউন্টারে কর্মরত কর্মচারীটির উদ্দেশে নানা কটূক্তি করেন। অথচ একবারও ভেবে দেখেন না যে, ব্যাঙ্কের ওই কর্মচারীটিকে কতটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হচ্ছে। একই দৃশ্য এ টি এম কাউন্টারের লাইনেও। আমাদের সুবিধার্থেই এ টি এম চালু হয়েছে, কিন্তু সেই এ টি এম লাইনেও আমরা ধৈর্য রাখতে পারছি না।
সুতরাং, আমাদের নিজেদেরকে চেনা, নিজেদের দোষত্রুটিগুলো জানা অত্যন্ত জরুরি। যদি এগুলি শুধরে নিতে পারি তা হলে দেখব যে, আমাদের পারিপার্শ্বিক সমস্যাও অনেক কমে গেছে। |
দেবাশিস মিত্র। অশোকনগর, উত্তর চব্বিশ পরগনা
|
কুকুরের ডাক! |
আনন্দবাজারে পোষা কুকুরের ‘উৎপাত’ (১৭-৯) সংক্রান্ত খবরটা পড়লাম। প্রসঙ্গত বলি, শুধু কামড়ে দেওয়াই নয়, প্রতিবেশী কুকুরের চিৎকার এখন একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দেশের বিভিন্ন আদালত বিভিন্ন সময়ে রায় দিয়েছে। গত তিন বছরের মধ্যে মুম্বই চেন্নাই ও কলকাতা হাইকোর্টের প্রত্যেকটি রায়ই পোষা কুকুর ও রাস্তার কুকুরের চিৎকারের বিরুদ্ধেই গিয়েছে। ব্যক্তিগত ভাবে প্রতিবেশীর পোষা কুকুরের চিৎকারে জেরবার হয়েছি। প্রতিবাদও করেছি। উত্তরে শুনেছি, কুকুর তো একটু চিৎকার করবেই। কিন্তু কুকুরের যদি চিৎকার করার অধিকার থাকে বলে মেনে নেন পশুপ্রেমীরা, তা হলে বলতে হয়, আমারও পাল্টা অধিকার আছে চিৎকারের মধ্যে না-থাকার। আরও একটা প্রশ্ন এখানে এসে পড়ে যে, পোষা কুকুর ‘একটু’ চিৎকার না ‘বেশি’ চিৎকার করছে তা নির্ধারণ করার মাপকাঠি কী? ২০০৮ সালে কলকাতা হাইকোর্ট পোষা কুকুরের চিৎকার সংক্রান্ত এক রায়ে কলকাতা পুরসভাকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে বলেছে, কুকুর সংক্রান্ত কোনও ‘নুইসেন্স’ হলে তা দেখবে পুরসভা। আর দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ পুরো ব্যাপারটা তদারকি করবে। প্রশ্ন হল, পুরসভা যেখানে বেআইনি বাড়ি ভাঙতেই হিমশিম খাচ্ছে সেখানে বাড়ির পোষা কুকুরের লাইসেন্স আছে কি না, সে চিৎকার করছে কি না, অন্যের বাড়ির সামনে বাথরুম
করছে কি না, এ সব খতিয়ে দেখবে পুরসভা এমন পরিকাঠামো কি তার আছে! আশা করব, এখানেও এই সারমেয় নিয়ে উৎপাতের ক্ষেত্রে কঠোর কোনও নিয়ম তৈরি করতে এগিয়ে আসবে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও প্রত্যেকটি পুরসভা। |
সবুজ মুখোপাধ্যায়। কলকাতা-৩৯
|
মুদ্রারাক্ষস |
গত কয়েক বছরে পাঁচ টাকার যে কয়েন বেরিয়েছে সেগুলি দৃষ্টিহীন ও কম দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন মানুষের পক্ষে চেনা খুবই দুষ্কর। আবার সম্প্রতি বাজারে আসা নতুন দু’টাকার কয়েনের সঙ্গে এক টাকার কয়েনের মাপের কোনও পার্থক্য নেই। ফলে, দু’টাকার কয়েন নিয়ে স্বাভাবিক দৃষ্টিসম্পন্ন মানুষেরও ভুল হয়ে যাচ্ছে। বাসে ভাড়া মেটানো বা কেনাকাটার সময় ক্রেতা এবং বিক্রেতা দু’তরফেই ভুল হচ্ছে। আবার তা নিয়ে ঝুটঝামেলাও হচ্ছে। টাকশালের কর্তারা কয়েন তৈরির সময় কেন যে মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা স্মরণে রাখেন না! দৃষ্টিহীন, প্রবীণ ও কম দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন মানুষজনের কথা মনে রেখে কয়েন তৈরি করা উচিত। এ বিষয়ে কেন্দ্রের অর্থমন্ত্রক, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং টাকশাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। |
সংগ্রাম অগস্তি। পর্ণশ্রী পল্লি, কলকাতা-৬০ |
|
|
|
|
|