পাকিস্তানের পাশে তালিবান, হিলারি পাশে চান চিনকে
জিরবিহীন ভাবে বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াল আফগান তালিবান। আফগানিস্তানে হক্কানি জঙ্গিগোষ্ঠীর সন্ত্রাসের প্রশ্নে আমেরিকা-পাকিস্তান তিক্ততা যখন প্রায় চরমে, তখনই এই বিবৃতি দিল তালিবান। ‘মুজাহিদিন অফ দ্য ইসলামিক এমিরেট’ নাম করে প্রকাশিত এই বিবৃতির মোদ্দা বক্তব্য, ‘আমেরিকা আফগানিস্তানে নিজেদের পরাজয় ঢাকার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে। তারা পাকিস্তানে নৈরাজ্য তৈরি করে সরকারকে তাদের উপর নির্ভরশীল করে তুলতে চায়। সরকার এবং জনগণকে পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দিয়ে দেখাতে চায়, পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী আছে।’ হক্কানি জঙ্গিগোষ্ঠীর নেতা সিরাজুদ্দিন হক্কানিকে শ্রদ্ধেয় নেতা হিসেবে বর্ণনা করে আফগান তালিবান এ-ও দাবি করেছে, পাকিস্তানে তাদের ঘাঁটি নেই। ওবামা প্রশাসন যখন হক্কানি জঙ্গিগোষ্ঠীকে এবং কার্যত আফগানিস্তানে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার জন্য পাক গুপ্তচর সংস্থাকেই দায়ী করেছে, তখনই এই বিবৃতি আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তান-তালিবান সম্পর্ক আরও প্রকট করে দিল।
আমেরিকা-পাকিস্তানের বাগযুদ্ধ যথারীতি অব্যাহত। হক্কানি জঙ্গিগোষ্ঠীকে দমন করতে হবেই বলে আমেরিকা যেমন ফের চাপ দিয়েছে, তেমনই পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি বলেছেন, হক্কানি গোষ্ঠীর খোঁজে পাকিস্তানে যেন অভিযানের চেষ্টা না করে আমেরিকা। এতে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হবে এবং আমার দেশে আমেরিকা-বিরোধিতাই বাড়বে।
পরমাণু অস্ত্র রক্ষা করায় সাহায্য ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে অনুদান বন্ধ করার জন্য মার্কিন কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ একটি বিলও পেশ হয়েছে আজ।
তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে পেন্টাগনের মুখপাত্র জর্জ লিটল জানিয়েও দিয়েছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক এখন জটিল হলেও তা একটি প্রয়োজনীয় সম্পর্ক। ইসলামাবাদের সঙ্গে যোগাযোগের সব রাস্তাই খোলা আছে। কূটনৈতিক মহলের একাংশ এই বক্তব্যকে ‘সুর নরম’ করা বলেই দেখছেন। তাঁরা বলছেন, পাক প্রধানমন্ত্রী তো আগেই বলেছেন, আমেরিকা তাদের সঙ্গে যেমন থাকতে পারছে না, তেমন তাদের ছেড়েও থাকতে পারবে না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই পাক-নির্ভরতা আছে বলেই ওয়াশিংটন জানে, শুধু চাপ দিয়ে কাজ হবে না। তাই পাকিস্তান-মিত্র চিনের সাহায্য চেয়েছে তারা। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনের ফাঁকে মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টন চিনের বিদেশমন্ত্রী ইয়াং জিয়েচিকে পাকিস্তান প্রশ্নে আলোচনার অনুরোধ করেন। মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের এক অফিসার জানান, আমেরিকা-পাকিস্তান সম্পর্ক যে দিকে যাচ্ছে, তাতে দ্রুতই এই আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক চাপ কাটাতে চিনের দ্বারস্থ পাকিস্তানও।
আজ চিনের জননিরাপত্তা মন্ত্রী মেং জিয়াংঝু ইসলামাবাদে এসেছেন। তাঁকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী গিলানি এবং প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি দু’জনেই বলেছেন, দেশ যখন নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন স্থিরতা আনতে চিনের সাহায্য প্রয়োজন। বন্ধু হয়তো অনেকেই আছে। কিন্তু চিনের মতো বন্ধুর উপরই ভরসা করা যায়।
হক্কানি গোষ্ঠীকে দমনের ব্যাপারে আমেরিকার উপরেও কিন্তু চাপ বাড়ছে। এই জঙ্গি গোষ্ঠী তৈরি এবং মদত দেওয়ার জন্য ওয়াশিংটনকে কালই দায়ী করেছেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী। এ প্রশ্নও উঠেছে, কেন আমেরিকার ‘বিদেশি জঙ্গি তালিকায়’ হক্কানি গোষ্ঠীর নাম এখনও নেই?
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মার্ক টোনারের ব্যাখ্যা, “ওই তালিকা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তবে হক্কানি জঙ্গিগোষ্ঠীর নেতা সিরাজুদ্দিন এবং তার ভাই বদরুদ্দিন এবং তাদের আর এক ঘনিষ্ঠ নেতাকে আগেই জঙ্গি বলে ঘোষণা করেছে বিদেশ মন্ত্রক। বাকি চার নেতার বিরুদ্ধেও মার্কিন অর্থ মন্ত্রক ব্যবস্থা নিয়েছে।”

কাশ্মীর, সন্ত্রাস নিয়ে কৃষ্ণ-রব্বানি কথা
কোনও বাছবিচার না করে জঙ্গি শিবির উচ্ছেদ করতে এ বার উদ্যোগী হবে পাকিস্তান। এমনটাই আশা করছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ। রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকের পাশাপাশি আজ পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খারের সঙ্গে কথা বলেন কৃষ্ণ। এর পরই কৃষ্ণ জানান, “আমার মনে হয় এত দিনে পাকিস্তান বুঝতে পেরেছে যে বাছবিচার করে সন্ত্রাসবাদ দমন করা যায় না।” এই প্রসঙ্গে কৃষ্ণ মনে করিয়ে দেন চলতি বছরের জুলাইয়ে হিনা যখন দিল্লিতে আসেন তখন তিনি নিজেই বলেছিলেন যে পাকিস্তানও জঙ্গি সমস্যায় জর্জরিত। সুতরাং, পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গি ঘাঁটিগুলি সমূলে উচ্ছেদ করতে সে দেশের সরকার এ বার উদ্যোগী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন কৃষ্ণ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.