একে ‘লাইট’লি নেবেন না
|
উৎসবের আলো দেখতে গিয়ে ঘরের কথা মনেই থাকে না। কিন্তু আলোই যে এক
লহমায় আপনার মুড পাল্টে দিতে পারে! আলোকপাত করুন। পৃথা দে |
পুজোয় চাই সব নতুন। সঙ্গে চার পাশটাও নতুন সাজে সাজানো গেলে সাধ ষোলকলা পূরণ হত। ঘরের জন্য এই কাজটাই অনায়াসে করতে পারে আলো। পুরনো ঘর, পুরনো মেজাজ এক ঝটকায় সরিয়ে আনতে পারে নতুনের ছোঁয়া। কারণ লাইট তৈরি হচ্ছে একেবারে অন্য ধাঁচে।
|
আলোর হদিশ |
টিউব আর বালবকে পেছনে ফেলে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাজারে এসেছে লেড লাইট। আধুনিক সাজের জন্য পাওয়া যাচ্ছে রকমারি আধুনিক ফিটিংস। পাশাপাশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সিএফএল লাইট। মৃদু আলো। খরচ কম। প্রয়োজনের খাতিরেও আলোর আদল বদলাচ্ছে। যেমন অনেকেই ফলস সিলিং-এর দিকে ঝুঁকছেন। ঘরের উচ্চতা কমে আসায় আলো ঢুকে যাচ্ছে সিলিং-এর ভেতর। ব্যবহার করা হচ্ছে ট্রে-লাইট। ঘরের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে লাগানো যায়। এর চার দিক থেকে ঠিকরে বেরোয় আলোর আভা।
|
|
বসার ঘরে লাগানো যায় নানা রকম আলো। কখনও আড্ডার আমেজকে ধরতে নরম আলো, আবার কখনও অতিথিকে স্বাগত জানতে উজ্বল আলো। এগুলিকে বলে মুড লাইট। যেমন রকমারি ওয়াল ব্র্যাকেট। স্টিল, পেতল ইত্যাদি ফ্রেম-এর ওপর একটি বা দুটি আলোর সেট। স্বল্প পরিসরের এই আলো একটা নাটকীয় ভাব আনে। বিছানার পাশে ওয়াল ব্র্যাকেট লাগালে বই পড়ার কাজেও লাগবে। সাবেকি ধাঁচে সাজানো ঘরের জন্য পাবেন অ্যান্টিক লুক-এর ওয়াল ব্র্যাকেট। দাম শুরু ১,০০০ টাকা থেকে। দেওয়ালের ছবিকে হাইলাইট করার জন্য আছে পিকচার লাইট। ঘরের কোণের দিকে কয়েকটা ছবি লাগানো থাকলে ওপরে লাগানো যেতে পারে বিভিন্ন আকৃতির ছোট্ট পিকচার লাইট। আবার ড্রেসিং টেবিলের ওপর লাগানোর জন্য রয়েছে স্পট লাইট।
|
ঘর সাজানোর আলো |
শুধু প্রয়োজন নয়, ঘরের সৌন্দর্যে বিশেষ আঙ্গিক আনতেও আলোর ব্যবহার শুরু হয়েছে। এই আলোর পোশাকি নাম ডেকোরেটিভ লাইট। ঔজ্বল্য কম, কিন্তু মায়াবি পরিবেশ তৈরিতে এদের জুড়ি নেই। যেমন মাল্টি কালারড হ্যাঙ্গিং। কোনওটি এক বাতির, আবার কোনওটি তিন বাতির। নকশাও প্রচুর। যেমন কাট গ্লাসের তৈরি বাতির শরীরে ঝিনুকের নকশা তো কোনও বাতির গায়ে মাদার অব পার্লের নকশা। আবার কোনওটাতে ঘষা কাচের নকশা। দাম শুরু ১,২০০ টাকা থেকে। এক চিলতে ডাইনিং স্পেস-এ চমক আনতে ঝুলিয়ে দিতে পারেন এক বাতির রংচঙে হ্যাঙ্গিং। বড় ঘরে অবশ্যই লাগাতে হবে সিলিং হ্যাঙ্গিং। স্টিলের ফ্রেম থেকে ঝোলানো কাট গ্লাসের তৈরি ওল্টানো ছাতার আকারের সিলিং হ্যাঙ্গিং পাবেন ৩,৫০০ টাকায়। কাঠের আসবাব দিয়ে সাজানো ঘরের জন্য রয়েছে বাবুই পাখির বাসার নকশার ঝোলানো আলো। দাম শুরু ৯৪০ টাকা থেকে। ক্রিস্টালের দড়ির তৈরি ছোট্ট ঝোলানো আলোগুলোও দেখতে দারুণ। রয়েছে ফাইবারের তৈরি তিন বাতির আলোর হ্যাঙ্গিং লাইট। ঘরে রকমারি রঙের ব্যবহার থাকলে এ রকম হ্যাঙ্গিং হবে আদর্শ। বিছানার ঠিক পাশটিতে রাখতে পারেন কলমকারি কাজের বাহারি ল্যাম্প শেড।
|
|
শখ থাকলে ঝোলানো যেতেই পারে একটি শ্যান্ডেলিয়ার বা ঝাড় বাতি। এদের কোনওটা ক্রিস্টালের, কোনওটা কাচ ও ক্রিস্টাল মেশানো। ছোট ক্রিস্টালের ঝাড়ের দাম শুরু ৫,০০০ টাকা থেকে। পুরনো দিনের আদলে তৈরি কাচের শ্যান্ডেলিয়ারগুলিতে রয়েছে বেশ একটা সাবেকি ভাব। মোমের বদলে কাচের জারে থাকবে বালব। আর অবশ্যই দেখবেন লাল-কালো বা সাদা-কালোর কম্বিনেশনের মুরানো (murono) গ্লাসের ঝাড়।
বড় ঘর হলে বা ফলস সিলিং বসানো থাকলে সোফার এক ধার ঘেঁসে রাখতে পারেন গাছের আদলের স্ট্যান্ডিং লাইট। অ্যালুমিনিয়াম স্ট্যান্ডে ক্রিস্টাল আর কাচের তৈরি। গাছটির শাখা-প্রশাখায় থাকবে ছোট্ট ছোট্ট মির্চি লাইট। তা থেকেই বেরবে আলো।
|
ছোটদের রাজ্যে |
ছোটদের ঘরের জন্যও রয়েছে নানা ধরনের আলো। যেমন খেলার ঘর সাজাতে পারেন রিক্সা, সাইকেল, জিপ, ফুটবল প্রভৃতির আদলে তৈরি সিলিং হ্যাঙ্গিং দিয়ে। ছিমছাম, অথচ ভারি মজার দেখতে। দাম শুরু ২,০০০ টাকা থেকে। অথবা লাগানো যেতে পারে বাস্কেট বল, ব্যাডমিন্টন র্যাকেট বা মিকি মাউসের আদলে তৈরি ওয়াল ব্র্যাকেটও। ওর পড়ার টেবিলে রাখার জন্য মজার কবিতা লেখা ল্যাম্পশেডগুলি পাবেন ৮০০ টাকায়। মাসখানেক পরেই তো ভাইফোঁটা। খুব ভাল একটি উপহার হতে পারে কোকাকোলার বোতলের ল্যাম্প শেড। পিভিসি বোর্ডের তৈরি এই ল্যাম্প শেডটি আস্তে আস্তে ক্রমাগত ঘুরতে থাকবে। আর এর শরীর দিয়ে বেরবে হালকা রঙের আলোর ছটা। এদের দাম শুরু ৮৫০ টাকা থেকে। |
|
ছবি সৌজন্য: হোমটাউন
ছবি: সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিরুদ্ধ মজুমদার
সৌজন্য: হরিশ কালেকশন, লেপাক্ষী, ফ্যাব ইন্ডিয়া |
|