উৎসবের আলো
এগিয়ে থিমই
থিম আর সাবেক পুজোর লড়াইয়ে এ বারও বালিতে এগিয়ে থিম। রোদ-বৃষ্টির মধ্যেই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত উদ্যোক্তা ও শিল্পীরা।
বালির ডিংসাইপাড়া সর্বজনীনে থিম খেলাঘর। ব্লক খেলনা দিয়ে বানানো দুর্গের আদলে মণ্ডপ। থাকছে আধুনিক ও পুরনো দিনের খেলনা দিয়ে তৈরি মডেল। মণ্ডপের ছাদ ও মেঝেতে থাকবে লুডো ও কিতকিতের ছক। ঢোকার রাস্তায় দাবা, ক্যারম, সাপ-লুডোর ছবি আঁকা থাকবে। মণ্ডপে ছড়ার গানও
শোনা যাবে।
পিছিয়ে নেই নব যুব সঙ্ঘ পরিচালিত বালি উত্তরপল্লি সর্বজনীন। থিম পরিবেশবান্ধব। খড়, দড়ি, বাঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে গ্রামের আটচালা মন্দির ও গ্রাম্য পরিবেশ। থাকছে খড় ও দড়ির নানা কারুকার্য ও মডেল। টেরাকোটার প্রতিমা।
‘বালি বাদামতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি’র স্লোগান ‘গ্রামের বাড়িতে সাবেক ঠাকুর’। এখানে দুর্গার রং উজ্জ্বল হলেও চার পাশের রং সাদা-কালো। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ-এর ছবি ফুটে উঠবে বালির ‘কালীতলা অধিবাসীবৃন্দ’-এর মণ্ডপে। থাকবে পার্বণগুলির পৌরাণিক ব্যাখ্যাও। হাজারদুয়ারি দেখতে চাইলে চলে আসতে পারেন ‘বালি দেশবন্ধু ক্লাব সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি’র মণ্ডপে। বিশেষ আকর্ষণ মেলা। বেলুড় পালঘাট লেন ঘোষেস লেনের ‘বালি বারাকপুর সর্বজনীন’-এ থিম সহজ পাঠ। রবীন্দ্রনাথের জন্মের সার্ধশতবর্ষে সহজ পাঠের প্রথম ভাগের ছবি ও মডেল দিয়ে মণ্ডপসজ্জা হচ্ছে। মণ্ডপের বাইরে থাকছে বিভিন্ন ধর্মপ্রচারকদের ছবি। বিশেষ আকর্ষণ নবমীর দিন অন্নকূট উৎসব।
সিগারেটের প্যাকেটের রাংতা ও প্লাস্টিকের ফিতের কারুকার্য দিয়ে মণ্ডপ সাজছে বেলুড় বাস্তুহারা কলোনি সর্বজনীনে। তারাপীঠের মন্দির, শ্মশান, দোকান সবই উঠে আসছে ঘুসুড়ি তালতলা শক্তি মন্দির মণ্ডপে। কম্বোডিয়ার বায়ন মন্দিরের আদলে মণ্ডপ বানাচ্ছে ‘ঘাসবাগান স্পোর্টিং ক্লাব’। ভিতরে থাকবে চট ও প্যারিসের কারুকার্য ও নবদুর্গা।
হায়দরাবাদের একটি মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করছে নিশ্চিন্দা বারোয়ারি। ডাকের সাজে সাবেক প্রতিমা। কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি হচ্ছে বালির ‘কুমিল্লাপাড়া পল্লিমঙ্গল সমিতি’র নাটমন্দিরের আদলে মণ্ডপ। মণ্ডপে দক্ষিণ ভারতের শিল্পের নানা নির্দশনও দেখা যাবে। ঝরনা, শিবমূর্তি দেখার পরে দেখা যাবে সাবেক প্রতিমা। সাঁপুইপাড়ার ‘রবীন্দ্রপল্লি কল্যাণ সমিতি’র মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে শামুক ও ঝিনুক দিয়ে।
শান্তিনগর সেবা সমিতি পরিচালিত শান্তিনগর সর্বজনীন-এ দেখা যাবে গণেশের বিভিন্ন ধরনের মূর্তি ও পৌরাণিক কাহিনির মডেল। টেরাকোটার কারুকার্য করা মণ্ডপে সাবেক প্রতিমা। সাঁপুইপাড়ার ‘পিএন কলোনি দুর্গোৎসবে থিম দশপ্রহরণধারিণী। এখানে মাটির দেওয়াল, খড়ের ছাউনির মণ্ডপে দুর্গার যুদ্ধযাত্রার প্রতিমা। থাকবে দুর্গাকে অস্ত্রে সজ্জিত করার মডেলও।
পূর্ব সাঁপুইপাড়ার ‘নেতাজি সঙ্ঘ’-এর থিম স্বপ্নময় সমুদ্র। বালিয়াড়ি থেকে ঢোকা যাবে সমুদ্রের নীচে। সেখানে মিলবে জাহাজের ভগ্নাবশেষ, প্রবাল, ঝিনুক, মাছ। তার পরে দেখা যাবে ধাতুর তৈরি দুর্গা প্রতিমা। মনে হবে প্রতিমা দীর্ঘ দিন জলের তলায় ডুবে ছিল। বেলুড় নিস্কো হাউজিং সর্বজনীনে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসাবশেষের আদল। ভিতরে থাকবে নানা ধরনের বুদ্ধমূর্তি।
বালি সাঁপুইপাড়া ‘বালক সঙ্ঘ’-এর থিম জঙ্গলমহল। ১২ নম্বর পোলের কাছের এই পুজোয় জঙ্গলমহলের মানুষদের জীবনযাত্রার ছবি ও মডেল দেখা যাবে। এ ছাড়াও বালি ঘোষপাড়ার কিশোর ভারতী অগ্রণী, বেলুড় রাজেন শেঠ লেন পল্লি, ঘোষপাড়া সর্বজনীন, বালি তর্কসিদ্ধান্ত লেন নাগরিকবৃন্দ, বেলুড় শ্রীগুরু সঙ্ঘ, বেলুড় পালপাড়া সর্বজনীন-এর মতো বেশ কয়েকটি পুজোও নজর কাড়বে বলে উদ্যোক্তাদের দাবি।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.