বর্ধমান শহরে আইন মেনে চলা সেরা তিনটি পুজো কমিটিকে পুরস্কার দেবে বর্ধমান জেলা পুলিশ। পুজোর দিনগুলিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতেই এই রাস্তা নেওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “শহরের বিশিষ্ট নাগরিক ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হবে। তাঁরা সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত বর্ধমানের নানা মণ্ডপে ঘুরবেন। আইন মেনে, দমকল ও পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করে যারা পুজো করবে, তাদের মধ্যে থেকে উৎকৃষ্ট তিনটি পুজো কমিটিকে পুরষ্কৃত করা হবে।”
পুলিশ সুপার জানান, শুধু বর্ধমান শহরেই পুজোর দিনগুলিতে প্রায় ৩০০ পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হবে। যথেষ্ট পুলিশ থাকবে কালনা ও কাটোয়া শহরেও। বর্ধমান গ্রামীণ এলাকায় মোট ৯৯৯টি সর্বজনীন ও ৮৫৬টি পারিবারিক পুজো হচ্ছে। বর্ধমান শহরে অনুমোদিত পুজোর সংখ্যা ৯৯। প্রতিটি পুজো কমিটিকে ৮ অক্টোবর, বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন বর্ধমান শহরের পুজো কমিটিগুলির সভাপতি ও সম্পাদকদের নিয়ে বৈঠক করেন পুলিশ সুপার। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) দেবাশিস সরকারও সেখানে হাজির ছিলেন। পুলিশ সুপার বলেন, “প্রতিটি পুজো কমিটিকেই মণ্ডপে মাইক বাজানোর জন্য ৫৫৮ টাকার ‘প্রমোদ কর’ দিতে হবে।” তবে এই কর নিয়ে বহু পুজো কমিটির কর্তাই বৈঠকে আপত্তি জানিয়েছেন। পুলিশ জানায়, ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও ভিড়ের সুযোগে অপরাধ রুখতে বড় মণ্ডপগুলিতে সিসিটিভি বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভিড় সামলাতে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে স্বেচ্ছাসেবকদের। এনসিসি-তে যুক্ত যুবকদেরও এই কাজে বহাল করার কথা ভাবা হচ্ছে।
চাঁদার জুলুম রুখতেও পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে। পুলিশ সুপার বলেন, “জুলুম করে চাঁদা আদায় বরদাস্ত করা হবে না। কেউ থানায় অভিযোগ জানালে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” ইতিমধ্যে বর্ধমান শহরের দেওয়ানদিঘি এলাকায় একটি পুজো কমিটির বিরুদ্ধে জোর করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে আগের বছরগুলির তুলনায় চুরি-ছিনতাইয়ের সংখ্যা কম বলে পুলিশের দাবি।
বর্ধমান শহরের নানা রাস্তা বন্ধ করে যে পুজোমণ্ডপ তৈরি হচ্ছে, তা অবশ্য পুলিশ সুপার অস্বীকার করতে পারেননি। বস্তুত, তাঁর অফিসের পাশেই রাস্তা আটকে একটি মণ্ডপ হয়েছে। পুলিশকর্তার সাফাই, “এই সমস্যা সম্পর্কে আমরা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তবে পুজো কমিটিগুলির দাবি, তাঁরা ২৫-৩০ বছর ধরে এ ভাবেই পুজো করে আসছেন। তাই তাঁদের পুজোর অনুমতি আটকানো যায়নি।” |