পশুখাদ্যের চাহিদা রয়েছে বরাবরই। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় উৎপাদন অনেক কম। সমস্যা সমাধানে শালবনির পশুখাদ্যের খামারে পশুখাদ্য তৈরির একটি নতুন ইউনিট চালু করা হল। বৃহস্পতিবার এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রাণিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরী। নতুন প্রশাসনিক ভবনেরও উদ্বোধন করা হয়। মন্ত্রী বলেন, “এ বার আবার পশু খাদ্যের সমস্যা হবে না। আগে যে পরিমাণ পশু খাদ্য উৎপাদন করা যেত এবার তার থেকে অনেক বেশি উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এতে সরকারের আয় যেমন বাড়বে, তেমন সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন।”
প্রাণিসম্পদ দফতরের উদ্যোগে মুরগি খামার চালু হল কাঁথিতেও। বৃহস্পতিবার সকালে ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যেই তার উদ্বোধন করলেন মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরী। ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৮৮ ডেসিমেল জমিতে গড়ে ওঠা এই খামারে মোট ১৮৪০টি মোরগ ও মুরগি রয়েছে। মোরগ ২৪০টি, মুরগি ১৬০০টি। বছরে ২ লক্ষ ৮০ হাজার ডিম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, “ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের মাধ্যমে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেই এর দায়িত্ব দেওয়া হবে।” এই মুরগি খামারে প্রজনন কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও তৈরি করা হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে হাঁস-মুরগি পালনের উপর জোর দেন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী। ডিম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোরও আহ্বান জানান। মুরগি খামারের উদ্বোধনে মন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন বিধায়ক দিব্যেন্দু অধিকারী, জেলা সভাধিপতি গান্ধী হাজরা, সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ বুদ্ধদেব ভৌমিক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কাঁথির পুরপ্রধান সৌমেন্দু অধিকারী। |
শালবনির খামারটিতে পশুখাদ্য তৈরির পাশাপাশি নানা বিষয়ে সাধারণ চাষিদের সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চালানো হয়। তবে উৎপন্ন পশুখাদ্য প্রয়োজনের তুলনায় ছিল কম। গোখাদ্য তৈরির ইউনিটটিতে দিনে দু’বার উৎপাদন হত। প্রতিবার ১৫ মেট্রিক টন করে। অর্থাৎ মাসিক উৎপাদন ৯০০ মেট্রিক টন। অথচ পশুখাদ্যের এই খামারের উপর কেবল দুই মেদিনীপুর ননয়, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া-সহ অন্য জেলাও নির্ভরশীল। এখান থেকে মাসে প্রায় ১৫০০ মেট্রিক টন পশুখাদ্যের চাহিদা ছিল বলে জানিয়েছেন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডেয়ারি অ্যান্ড পোলট্রি ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন’-এর কোম্পানি সেক্রেটারি অমিতাভ সামন্ত। তাঁর কথায়, “মাসে ১৫০০ মেট্রিক টন চাহিদা থাকলেও আমরা ৯০০ থেকে সাড়ে ৯০০ মেট্রিক টনের বেশি দিতে পারতাম না। কিন্তু এ বার প্রায় ১৮০০ মেট্রিক টন মতো উৎপাদন করা যাবে। ফলে আপাতত সমস্যা থাকবে না।” রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় এ বার ১ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা পেয়েছিল শালবনির এই খামার। সেই টাকাতেই নতুন ইউনিট ও প্রশাসনিক ভবন তৈরি হয়েছে বলে অমিতাভবাবু জানিয়েছেন। আগামী দিনে শালবনিতে আরও একটি বড় পশুখামার তৈরির ব্যবস্থা করা হবে বলে এ দিন মন্ত্রী জানিয়েছেন। তবে এ ক্ষেত্রে যে অর্থই বাধা, তা-ও জানাতে ভোলেননি তিনি। মন্ত্রীর কথায়, “এ বার মাত্র ৬২০ কোটি টাকা পেয়েছে দফতর। বরাদ্দ বাড়লে আরও বেশি কাজ করা যাবে।” |