বিদেশে রবীন্দ্রচিত্রের প্রদর্শনী
আট দশক পরে
মার চিত্রলীলার দিগন্ত এই পশ্চিম উপকূলেই অস্তগমনকালের শেষ বর্ণবিন্যাস। স্বদেশে একটু তার আভাসমাত্রেই যে রকম শব্দভেদী বাণের টঙ্কার শোনা গেল তাতে বুঝলুম এই চিত্রগুলির উপলক্ষ্যে আমার বিরুদ্ধে বিদ্রূপের বৈচিত্র্য ঘটবে মাত্র।... আমি তাই মনে মনে সঙ্কল্প করে এসেচি আমার এই ছবিগুলির একটিও দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাব না সমুদ্রের এই ঘাটেই বোঝাই খালি করে দিয়ে চলে যাব।’ নির্মলকুমারী মহলানবিশকে ১৯৩০-এর ২৪ জুন লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু বিদেশে যখন তাঁর ছবির প্রদর্শনী হয় তখন তার প্রতিক্রিয়া কেমন হয়েছিল? বার্লিনে গ্যালারি মোলার-এ রবীন্দ্রনাথের ছবির যে প্রদর্শনী হয় তার সমালোচনায় একটি জার্মান সংবাদপত্রে ১৬ জুলাই ১৯৩০ লেখা হয়েছিল, ‘নিশ্চয়ই এ কাজ একজন শৌখীন শিল্পীর (অ্যামেচার), কিন্তু এই শব্দটিকে অত্যন্ত সদর্থে নিতে হবে; এতে প্রকাশিত হয়েছে অদ্ভুত ব্যক্তিত্ব, খুব স্থির সঙ্কল্প এবং দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করা হয়েছে, প্রায়শ এ শ্রেষ্ঠ শিল্পসৃষ্টির সীমা ছুঁয়ে যায়।’
সদ্য-প্রকাশিত
ক্যাটালগটির প্রচ্ছদ।
১৯৩০-এর ২৭ নভেম্বর নিউ ইয়র্কে
নিজের ছবির প্রদর্শনীতে রবীন্দ্রনাথ
আট দশক পরে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের উদ্যোগে রবীন্দ্রনাথের আঁকা প্রায় দুশোটি ছবি আবার বিদেশের দর্শকের সামনে। বিশ্বের ন’টি শহরে চলবে প্রদর্শনীটি। নিউ ইয়র্কের এশিয়া সোসাইটিতে ১৬ তারিখ প্রদর্শনীর সূচনা হল ৬০টি ছবি নিয়ে। উদ্বোধনী ভাষণে অধ্যাপক সুগত বসু বললেন ‘পেন্টিং পোয়েট্রি পলিটিক্স: লিগাসি অব রবীন্দ্রনাথ টেগোর’ প্রসঙ্গে। গাইলেন ‘তুমি কি কেবলই ছবি’ গানটিও। প্রদর্শনী উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে আর শিবকুমার সম্পাদিত দ্য লাস্ট হারভেস্ট শীর্ষক একটি ক্যাটালগও। সুমুদ্রিত রবীন্দ্র-চিত্রাবলির সঙ্গে দুর্লভ আলোকচিত্র, আর স্টেলা ক্রামরিশ, ফ্রাঁস ভট্টাচার্য এবং আরও অনেকের লেখা আছে এই ক্যাটালগে। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব জহর সরকার এর পাশাপাশি আলোচনা করলেন নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত সব সংগ্রহালয়ের কর্তাদের সঙ্গে, উদ্দেশ্য ছিল দু’দেশের সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি।

পিঙ্কি-বুলি
হিজবিজবিজ-এর মতোই বুড়োটা বলে: আমার নাম নেচার, আমার বাবার নাম নেচার...। তাকে কেউ দেখতে পায় না, তবে পিঙ্কি-বুলি দু’জনেই দেখতে পায়। মেঘনাদ ভট্টাচার্য তাঁর নির্দেশিত নতুন নাটক পিঙ্কি-বুলি নিয়ে বলছিলেন। ‘পিঙ্কি কনভেন্টে-পড়া কলকাতার মেয়ে, টিভি আইপড ভিডিয়ো গেমে অভ্যস্ত, আর বুলি সুন্দরবনের, গায়ে আম জাম কাঁঠালের গন্ধ। তবু এই দুই কিশোরী নিজেদের জায়গা বদলের অদ্ভুত আকাঙ্ক্ষায় নির্ভর করে ওই বুড়োর ওপর। বুড়োটা আসলে প্রকৃতি, আধুনিক সভ্যতা আর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাই তার কাজ, মহাবিশ্বের সঙ্গে তার ঘড়িটা বাঁধা।’ অমর মিত্রের ‘বালিকা মঞ্জরী’ গল্পটি অবলম্বনে ইন্দ্রাশিস লাহিড়ীর লেখা নাটক থেকেই সায়ক-এর এই প্রযোজনাটি বিন্যস্ত করেছেন মেঘনাদ। সংগীত পরিচালনা স্বাতীলেখা সেনগুপ্তর, মঞ্চ সৌমিক-পিয়ালির। ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধেয় অ্যাকাডেমিতে প্রথম অভিনয়।

সোনার পিঞ্জরে
তাঁর অনুবাদ একদা সাড়া জাগিয়েছিল। দশ-বারোটি অনুবাদগ্রন্থের মধ্যে মঞ্জুশ্রী রায়কে আজও অনেকে মনে রেখেছেন গন উইথ দ্য উইন্ড-এর জন্য। কবিতা লিখতেন ‘মৌচাক’ পত্রিকায়। ‘সন্দেশ’-এও বহু কবিতা ও ছড়ায় গাঁথা ধাঁধা প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে জীবনযাপন করা মঞ্জুশ্রী যে আত্মজীবনীর ভিত্তিতে উপন্যাস লিখেছেন তা জানা ছিল না। ১৯৬৩-তে লেখা শেষ করেন সেই উপন্যাস, সোনার পিঞ্জরে। তাঁর বয়স তখন ৩২। আর আজ ৮১ বছর বয়সে তা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হল (পরি: শৈব্যা)। ত্রিশের দশক থেকে শুরু করে স্বাধীনতা-পরবর্তী কিছু সময় পর্যন্ত এ উপন্যাসের বিস্তার। সেই সময়ে জড়িয়ে আছে মন্বন্তর, স্বাধীনতা আন্দোলন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, দেশভাগ।

স্বাস্থ্যের বৃত্তে

আমাদের দেশে স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা খুবই কম। তার অন্যতম একটি কারণ হল, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জনপ্রিয় পত্রিকার অভাব। সেই অভাব পূর্ণ করতে ২৩ সেপ্টেম্বর, বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কলকাতা মেডিকেল কলেজের জেনারেল লেকচার থিয়েটারে প্রকাশ হবে পুণ্যব্রত গুণ সম্পাদিত ‘স্বাস্থ্যের বৃত্তে’ নামে নতুন একটি স্বাস্থ্য পত্রিকা। রোগ-প্রতিরোধ নিয়ে সহজ সরল ভাষায় লেখা নানা আলোচনা থাকছে এখানে। ওই অনুষ্ঠানে প্রয়াত যুক্তিবাদী চিকিৎসক পার্থসারথি গুপ্ত স্মৃতি বক্তৃতার আয়োজন করেছে ‘শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ’। সভায় ‘দ্বিতীয় সবুজ বিপ্লব কেন পূর্ব ভারতে?’ বিষয়ে বলবেন কল্যাণ রুদ্র এবং পরে ‘বিজ্ঞানের জনপ্রিয়করণ কাদের স্বার্থে?’ প্রসঙ্গে বলবেন আশিস লাহিড়ী।

প্রসঙ্গ অটিজম
সন্তানের প্রতিবন্ধকতা (মূলত ‘অটিজম’জনিত) অভিভাবকদের পক্ষে কতখানি সমস্যা, কী ভাবে তা অতিক্রম করা যায় এবং সমাজেরই বা কী দায়িত্ব এ সব কথা সম্প্রতি আলোচিত হল ‘অটিজম’ বিষয়ে তিন দিনের এক অনুষ্ঠানে। অটিজম সোসাইটি (ওয়েস্ট বেঙ্গল) আয়োজিত এই আলোচনায় ছিল কলকাতার নানা স্কুল ও সংস্থা, কল্যাণীর লাইফ ইনস্টিটিউট, শিলিগুড়ির গুডরিক, ঢাকার প্রয়াস স্কুল, আর বহু অভিভাবক। উঠে এল ‘ইনক্লুসিভ স্কুল’-এর কথা। মূল ধারার ছেলেমেয়েরা যে স্কুলে পড়াশোনা করে, সেখানে ‘অটিস্ট’ ছেলেমেয়েরাও পড়বে এমন শিক্ষাপদ্ধতি উদার হলেও ‘অটিস্ট’-দের জন্য সম্পূর্ণ অন্য ধারার শিক্ষাপদ্ধতি রাখা প্রয়োজন। অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন সোসাইটির ডিরেক্টর ইন্দ্রাণী বসু। নিজেদের জন্য নিজস্ব গৃহ তৈরির এক স্বপ্ন আছে এদের। এ দিকে সেই স্বপ্নই পূর্ণ হতে চলেছে ‘প্রয়াস’ সংস্থার। ২০০১-এ যাত্রা শুরু করে এঁরা এমন এক গৃহ গড়ে তুলছেন, যেখানে ‘স্পেশাল চিলড্রেন’দের বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকবে সন্তানরা। রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া-র নিয়ম মেনে গড়ে তোলা এই আবাস বারুইপুরের কাছে গোবিন্দপুরে, যেখানে তিন বিঘা জমি বাবা-মায়েরাই কিনেছেন, তাঁদের অবর্তমানে অসহায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে, জানালেন সংস্থার সচিব পার্থসারথি মিত্র।

হরিচরণীয়
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবহৃত মুখের ভাষার চেহারা ও চরিত্রের সন্ধানই কোরক-এর (সম্পা: তাপস ভৌমিক) সদ্য প্রকাশিত সংখ্যার মূল বিষয়: ‘পূর্ববঙ্গের কথ্যভাষা’। পশ্চিমবঙ্গের প্রতি জেলার কথ্যভাষার স্বরূপ সংগ্রহের কাজ এ-পত্রিকা কয়েক বছর আগে করলেও তাতে বাংলা ভাষার বহু বিচিত্র রূপের পরিচয় সম্পূর্ণতা পায়নি বলেই বাংলাদেশের কথ্যভাষার বৈচিত্র এ বারের বিষয়। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে ‘লেখকের উদ্ভাবিত শব্দ ও সাহিত্যে ব্যবহৃত ভাষা’। মধুসূদন-রবীন্দ্রনাথ থেকে জীবনানন্দ-বিষ্ণু দে অবধি সাহিত্যিকেরা বহুবিধ শব্দ তৈরি করেছেন সচেতন ভাবেই, সে সব নিয়েই নানা নিবন্ধ। সর্বোপরি রয়েছে বাংলা শব্দচর্চার বিস্ময়পুরুষ হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়-কে নিয়ে ক্রোড়পত্র, সম্পাদকীয়-তে জানানো হয়েছে: হরিচরণের বিপুল কর্মকাণ্ডের দিকে তাকালে আমাদের মনে হয় ইংরেজি ‘হারকিউলিয়ান টাস্ক’ কথাটির বাংলা হওয়া উচিত ‘হরিচরণীয় কাজ’।

শ্রীশম্ভু মিত্র
গত কয়েক বছর ধরে কলকাতায় বিখ্যাত ও বরেণ্য ঐতিহাসিক চরিত্র নিয়ে যে সব নাটক মঞ্চস্থ হয়ে চলেছে, সেখানে নতুন সংযোজন ‘শ্রীশম্ভু মিত্র’। শম্ভু মিত্রের অভিনীত চরিত্র এবং ব্যক্তিগত জীবন নাটকটি জুড়ে। এ নাটকের রচয়িতা ও শম্ভু মিত্রের চরিত্রায়ণে সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে তাঁকে আমরা সিরাজ, ডিরোজিও, গিরিশচন্দ্র, হ্যামলেট চরিত্রে দেখেছি। এই নাটকে রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তকে পাওয়া যাবে শ্রুতিভাষ্যে। নাট্যরঙ্গ-র এই প্রয়াসে কৌশিক সেন সাহায্য করেছেন মঞ্চ ভাবনায়, সংগীত করেছেন স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত, আলো তাপস সেনের পুত্র জয় সেন। গান গেয়েছেন নান্দীকার গোষ্ঠীর পার্থপ্রতিম দেব ও রূপা দেব। নির্দেশনায় স্বপন সেনগুপ্ত। ২৫ সেপ্টেম্বর মধুসূদন মঞ্চে নাটকটির প্রথম অভিনয়। সেখানেই বালিগঞ্জ স্বপ্নসূচনা’র সহযোগিতায় শম্ভু মিত্রকে নিয়ে একটি বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ পাবে। সুরজিৎকে শম্ভু মিত্র-র সাজে (সঙ্গের ছবি) সাজিয়েছেন মহম্মদ আলি। অন্য দিকে ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায় অবনীন্দ্র সভাগৃহে গান্ধার আয়োজিত ‘রবীন্দ্রসৃষ্টি ও প্রবাদপ্রতিম শম্ভু মিত্রের ভাবনা’ শীর্ষক বক্তৃতামালার দ্বিতীয় বক্তৃতাটি দেবেন জগন্নাথ বসু।

প্রয়াণ
কোচবিহারের হাওয়ার গাড়ি গ্রামে জন্ম তাঁর। শিক্ষকতার পাশাপাশি কবিতা লিখতেন। সত্তর-আশির দশকের বিশিষ্ট কবি তিনি, অরুণেশ ঘোষ (১৯৪১-২০১১)। কবিতা, উপন্যাস, নাটক মিলিয়ে মোট ১৮টি বইয়ের লেখক। সম্প্রতি প্রয়াত হলেন। আজ সন্ধে সাড়ে ছ’টায় মহাবোধি সোসাইটি হলে তাঁর স্মরণে একটি সভার আয়োজন করেছে ‘কবিতীর্থ’ পত্রিকা।

অন্য ফিল্মোৎসব
কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের সাজ-সাজ রব শুরু হওয়ার আগেই আন্তর্জাতিক ফিল্মোৎসবের স্বাদ পেতে চলেছেন শহরবাসীরা। ফোরাম ফর ফিল্ম স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যালায়েড আর্টস পাঁচ মহাদেশ থেকে ১৮টি দেশের ছবি নিয়ে আইসিসিআর-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সাজিয়ে তুলেছে এ-উৎসব। রবীন্দ্রনাথ টেগোর সেন্টারে সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে ১৯-২৯ সেপ্টেম্বর। সাম্প্রতিক নানা উৎসবে সম্মানিত এ-সমস্ত ছবির মধ্যে যেমন রয়েছে ইরানের জাফর পানাহির ‘অফসাইড’, তেমনই আছে ইতালির মার্কো বেল্লোচ্চিয়োর ‘ভ্যানসেয়ার’ যে ছবিতে মুসোলিনির বিরুদ্ধাচরণের জন্যে তাঁর প্রেমিকাকে ফ্যাসিস্ট সরকার সন্তান-বিচ্ছিন্ন করে মানসিক রোগী বানিয়ে জেলে পাঠিয়েছিল (সঙ্গের স্থিরচিত্র)। উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন ভারতী রায় অপর্ণা সেন অশোক বিশ্বনাথন গৌতম ঘোষ।

নাট্য আকাদেমি ২৫
পঁচিশ বছর ছুঁচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি, এই ২৬ সেপ্টেম্বর। ২৫-২৬ সেপ্টেম্বর, দু’দিন ব্যাপী উৎসব উদ্যাপন। নাটকপাঠ, বক্তৃতা, নাট্যাভিনয়ে সরগরম হয়ে উঠবে নাট্য আকাদেমি প্রাঙ্গণ, তৃপ্তি মিত্র নাট্যগৃহ, রবীন্দ্রসদন। এর পর সারা বছর ধরেই বাস্তবায়িত হবে নানা কর্মসূচি। ‘সারা রাজ্য জুড়েই চালু হবে, ইতিমধ্যেই হয়েওছে, নাটকের কর্মশালা, বিশেষত আবাসিক কর্মশালা। যাতে প্রত্যন্ত তরুণ-তরুণীটির কাছে পৌঁছতে পারে আকাদেমির উদ্যোগ, তরুণ প্রতিভা খুঁজে আনাই কাজ আমাদের। এমনই নানা উদ্যোগ, তার মধ্যে একটা যেমন কলকাতার আকাদেমি-ভবনেই ভিডিয়োতে নাটক দেখা, নাটক নিয়ে আড্ডা বা পাঠচক্র, গ্রন্থাগারের সমৃদ্ধি ও সদ্ব্যবহার।’ জানালেন আকাদেমি-সভাপতি মনোজ মিত্র।

পুতুলনাটক
ব্রিটিশ সরকারের সন্দেহভাজনদের তালিকা থেকে বাদ যাননি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও। হিন্দুমেলা থেকে ‘নাইট’ উপাধি ত্যাগ সবেতেই জড়িয়ে ছিল তাঁর স্বদেশপ্রেম। এই ভাবনাই এ বার উঠে এল পুতুলনাটকে। ভারতের প্রাচীনতম এই শিল্পকলা এখনও সচল মুষ্টিমেয় ক’জনের প্রচেষ্টায়। এদের মধ্যে ডল্স থিয়েটার অন্যতম (পরিচালক সুদীপ গুপ্ত)। ’৮৩ থেকে এ বিষয়ে সুদীপের চর্চা এবং গবেষণা। আ ওয়াইল্ড টেল, শতরঞ্জ কি খিলাড়ি, পদ্মগাথা বা নাক-কাটা রাজা-র পর এ বার নতুন প্রযোজনা ‘আগুনের পরশমণি’। সম্প্রতি মধুসূদন মঞ্চে দেখা গেল এটি। অনুষ্ঠানে খ্যাতকীর্তি পুতুল নাচিয়ে সুরেশ দত্ত-র হাতে প্রথম সূত্রধর সম্মান তুলে দিলেন নিরঞ্জন গোস্বামী।

স্মৃতির সুচিত্রা
এই দুনিয়ায় দারুণ মজা
আসল-নকল যায় না বোঝা,
গলাবাজির উচ্চরবে সবাই খুদে রাজা।
মিষ্টিমধুর বোল বোলাতে
আসছে যারা মন ভোলাতে,
নয়কো তারা আপন তোমার
এ সত্যটি সোজা

এ ছড়াটি যাঁর লেখা তাঁকে সকলেই চেনেন রবীন্দ্রসঙ্গীতের এক কিংবদন্তি শিল্পী-রূপে। তিনি সুচিত্রা মিত্র। আজ তাঁর জন্মদিন। এ বার সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ব্যক্তি ও শিল্পীকে ধরার চেষ্টা। তাঁকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিল সারেগামা,মলয় দাশগুপ্তের পরিচালনায়, তাঁর জীবনকালেই। আজ সেই তথ্যচিত্র, ‘সুচিত্রা মিত্র: দ্য লেজেন্ড’-এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ জি ডি বিড়লা সভাঘরে। থাকছে সুচিত্রা মিত্রর পরিকল্পিত ‘তাসের দেশ’ও, রবিতীর্থ প্রাক্তনীর উপস্থাপনায়। রবিবার উইভার্স স্টুডিওয় গাইলেন সুচিত্রার ছাত্রী

পরিমল গোস্বামীর
তোলা ছবি, হিমানীশ
গোস্বামীর সৌজন্যে
মনীষা বসু, রবীন্দ্রনাথ টেগোর সেন্টারে (আই সি সি আর) ‘নব রবি কিরণ’-এর আয়োজনে হয়ে গেল সুচিত্রা মিত্রের স্মরণে অনুষ্ঠান ‘তোমায় নতুন করে পাব বলে’। এ দিকে প্রকাশিত হয়েছে সুচিত্রার দুর্লভ ছবি ও ছড়া নিয়ে সংকলন স্মৃতির সুচিত্রা (পারুল)।
 
শতবর্ষে

ছবি শান্তা সেনের সৌজন্যে।
শতবর্ষ পূর্ণ হল উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌত্রী মৃণালিনী এমার্সনের, বন্ধু-মহলে যিনি পরিচিত ছিলেন মিনি এমার্সন নামে। জন্ম ১৯১১-র ৩১ মার্চ। বাবা রতনচন্দ্র, মা অমিয়াদেবী। অসময়ে মায়ের মৃত্যুর কারণে ছোট ভাইবোনেদের দেখাশোনার ভার পড়ে মৃণালিনীর উপরেই। মেধাবী মৃণালিনী কিন্তু তার মধ্যেও পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। সেন্ট জন’স্ ডায়োসেশন থেকে ম্যাট্রিক, স্কটিশ চার্চ থেকে বি এ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম এ-র পাশাপাশি আইনও পাশ করেন তিনি। প্রথমে কিছু দিন লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে পড়িয়ে তিনি যোগ দেন বেথুন-এ। পরে অধ্যক্ষও হন সেখানে। আচার-আচরণে সাহেবি ভাবাপন্ন মৃণালিনী প্রথম বাঙালি মহিলা বিমান-চালকের লাইসেন্সও পেয়েছিলেন। ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল ছিলেন তিনি। সংস্কৃত ও গ্রিক ভাষা জানতেন, শিখেছিলেন জার্মান ভাষা। ইচ্ছে ছিল জার্মান ভাষায় মহাভারত অনুবাদ করার, কাজটি শেষ করে যেতে পারেননি। সখ্য ছিল সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, রাজেশ্বরী দত্ত, বিষ্ণু
দে, যামিনী রায়, সুনীল জানা-র সঙ্গে। ‘দ্য স্টেটসম্যান’ পত্রিকার তৎকালীন সম্পাদক লিন্ডসে এমার্সনের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। মৃণালিনী থাকতেন বেথুন কলেজেই। তাঁর উদার হৃদয়, সদাশয়তার নানা কথা আজও সহকর্মীদের মনে উজ্জ্বল। ১৯৬৮-র ২৭ ফেব্রুয়ারি সেখানেই মারা যান তিনি। গত ৩ সেপ্টেম্বর, বেথুন কলেজ ও বেথুন কলেজ প্রাক্তনী সম্মেলনীর যৌথ উদ্যোগে মৃণালিনী এমার্সনের শতবর্ষ পালিত হল কলেজ-সভাগৃহে। ওই দিন প্রাক্তনী সম্মেলনীও পূর্ণ করল নব্বই বছর।
   


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.