শিক্ষা সেলের পুনরুজ্জীবন ঘটাচ্ছে বামফ্রন্ট |
রাজ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে ‘অরাজকতা এবং নৈরাজ্যে’র বিরুদ্ধে এ বার আন্দোলনে নামতে চলেছে বামফ্রন্ট। ‘সন্ত্রাসে’র পরেই তারা হাতিয়ার করতে চাইছে শিক্ষার আঙিনায় একের পর এক ‘আক্রমণে’র ঘটনাকে। সেই লক্ষ্যে বামফ্রন্টের শিক্ষা সেলকে ফের জিইয়ে তোলার তৎপরতা চলছে। বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকাকালীনই ওই সেল দীর্ঘ দিন ধরে অকেজো হয়ে পড়েছিল। বামফ্রন্টের বৈঠকে শুক্রবার শিক্ষা ক্ষেত্রের ‘অরাজকতা’ নিয়ে আলোচনা হয়। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল ভেঙে দেওয়া থেকে শুরু করে শিক্ষা ক্ষেত্রের বিভিন্ন পদে ‘তৃণমূল-মনস্ক’ ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়ার নানা দৃষ্টান্তই আলোচনায় ওঠে। ইতিমধ্যেই বামপন্থী শিক্ষক ও শিক্ষা কমর্চারী সংগঠনগুলি সরকারের নানা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নেমেছে। এর পর থেকে যাতে শিক্ষা সেলের আওতায় আরও সুসংহত ভাবে আন্দোলন করা যায়, তার জন্য উদ্যোগী হয়েছেন বাম নেতৃত্ব। এমনকী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসাবে রাজ্যপালও যে সরকারের নানা সিদ্ধান্তে সায় দিচ্ছেন, সেই বিষয়টিকেও সমালোচনা করতে ছাড়ছেন না তাঁরা। বৈঠকের পরে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “রাজ্য সরকার এবং তার পরামর্শদাতা রাজ্যপাল শিক্ষার অঙ্গনে বিভিন্ন নির্বাচিত সংস্থা ভেঙে দিয়ে অগণতান্ত্রিক পথে চলেছেন। মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে যে সব সংস্থা সম্প্রসারিত মেয়াদে ছিল, সেগুলি ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচন করা হত বামফ্রন্টের জমানায়। আর এখন নির্বাচিত সংস্থা ভেঙে দিয়ে বলা হচ্ছে, বামফ্রন্টও নাকি এই কাজ করেছিল!” বিমানবাবুর অভিযোগ, কলেজের অধ্যক্ষ হওয়া সত্ত্বেও ‘তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ’ কেউ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের, কেউ স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হচ্ছেন। অথচ দু’টোই পূর্ণ সময়ের কাজ। বিমানবাবুর কথায়, “আগে সব দলতন্ত্র হত। এখন গণতন্ত্রের নামে এই যা হচ্ছে, সেটা কী?”
|
ফলে রাখলে ক্ষুদ্র শিল্পের জমিও ফেরত |
বড় ও মাঝারি যে-সব সংস্থা কারখানা গড়ার জন্য জমি নিয়েও ফেলে রেখে দিয়েছে, তাদের সেই সব জমি ফিরিয়ে নেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ বার ক্ষুদ্র শিল্পকে দেওয়া জমির ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক, কেন্দ্রের প্রতিনিধি-সহ ব্যাঙ্কের সদস্যদের নিয়ে শুক্রবার জরুরি বৈঠক করেন ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। পরে তিনি জানান, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নতির জন্য কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্প থাকলেও রাজ্যের সংস্থাগুলি তার সুফল নিতে পারছে না। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, অব্যবহৃত জমি ফিরিয়ে নিয়ে আগ্রহীদের দেওয়ার পাশাপাশি জেলা স্তরে সম্ভাবনাময় শিল্পগুলিকে চিহ্নিত করা হবে। প্রয়োজনে প্রতিটি জেলায় একটি করে কমিটিও গড়া হবে বলে জানান মানসবাবু। এই ধরনের কত জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে, তা জানার জন্য সমীক্ষাও শুরু হয়েছে। মানসবাবু জানান, ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসারে জেলা স্তরে যে কমিটি গড়া হবে, তাতে জেলাশাসক ছাড়া বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, বণিকসভা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিনিধিদের রাখা হবে।
|
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বদল পুজোর আগেই |
পুজোর আগেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আইন সংশোধন করবে রাজ্য সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বা অন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যে-নিষেধাজ্ঞা এখন রয়েছে, আইন সংশোধনের সঙ্গে সঙ্গে তা-ও তুলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শুক্রবার রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি। আচার্য তথা রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের জারি করা নিষেধাজ্ঞার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য এবং শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। একাদশ পঞ্চবার্ষিকী যোজনায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুন যে-সব শিক্ষকপদ মঞ্জুর করেছে, ৩১ মার্চের মধ্যে নিয়োগ না-হলে সেগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই সংশ্লিষ্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য রাজ্যকে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। ওই অনুষ্ঠানেই উচ্চশিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সুগত মারজিৎ বলেন, “এ বার থেকে বিভিন্ন নিজেদের খরচে চলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুণমানের উপরে নজরদারি চালানো হবে। এক বার ছাড়পত্র পেলেই ওই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলি রমরমা ব্যবসা চালাতে থাকবে এই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া হবে না।” |