নিম্ন মানের মাল-মশলা ব্যবহার করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে শুক্রবার লালগড়ের সারদামণি বালিকা বিদ্যালয়ের একটি ছাত্রী নিবাসের ভিত ঢালাইয়ের কাজ বন্ধ করে দিলেন তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীরা।
গত ২১ অগস্ট স্কুল পরিচালন কমিটির নির্বাচনে অভিভাবক প্রতিনিধির ৬টি আসনেই জয়ী হন তৃণমূল সমর্থিতেরা। কিন্তু প্রশাসনিক ভাবে পরিচালন কমিটির হাত-বদল এখনও হয়নি। সিপিএমের দখলে থাকা বিদায়ী পরিচালন কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ অক্টোবর। তৃণমূলের লালগড় ব্লক সভাপতি বনবিহারী রায়ের অভিযোগ, “ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার আগে সিপিএমের বিদায়ী পরিচালন কমিটি হস্টেল-ভবনের কাজ শুরু করেছে। নিম্ন মানের সরঞ্জাম দিয়ে ভিতের কাজ করানো হচ্ছিল। উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ অর্থ আত্মসাতের চক্রান্ত রুখে দিয়েছেন দলীয় কর্মীরা। কিছুদিনের মধ্যেই নতুন পরিচালন কমিটি দায়িত্ব নেবে। তার আগে সিপিএমের এই ‘উদ্যোগ’ কেন তা এলাকাবাসীরা বুঝে গিয়েছেন।” |
উত্তরে লালগড়ের সিপিএম নেতা তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “উন্নয়ন নিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থে কুৎসা প্রচার করা হচ্ছে। আমরাও চাই হস্টেল-ভবন তৈরির কাজ ভাল হোক। তৃণমূল-পন্থীরা সর্বোচ্চ মানের মালমশলা দিয়ে কেমন ভবন তৈরি করেন, সে ব্যাপারে আমরাও নজর রাখব।” তরুণবাবুর বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনের জন্য হস্টেল ভবন তৈরির কাজ বিলম্বিত হয়। স্কুল পরিচালন কমিটির নির্বাচনের আগেই ভবনের জন্য ভিত খোঁড়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল।
স্কুল সূত্রে খবর, তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত ছাত্রীদের আবাসন তৈরির জন্য গত বছর জেলা পরিষদের মাধ্যমে ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর। চলতি বছরের মার্চে প্রথম পর্যায়ে ১২ লক্ষ টাকা হাতে পান স্কুল-কর্তৃপক্ষ। হস্টেল নির্মাণ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট সরকারি নিয়মে বলা আছে, ভবন তৈরির জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা যাবে না। ব্লক পর্যায়ের সরকারি বাস্তুকারদের তত্ত্বাবধানে স্কুল-কর্তৃপক্ষই হস্টেল ভবন তৈরির দায়িত্ব নেবে। সেই মতো মাস খানেক আগে স্কুলের সামনে ভিত খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার একপ্রস্থ ভিত ঢালাইয়ের কাজ হয়। শুক্রবার সকালে ফের কাজ শুরু হতেই বাধা দেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা।
এ দিন স্কুল প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, ঢালাই করা ভিতের অংশ কোদাল-গাঁইতি দিয়ে ভেঙে ফেলছেন উত্তেজিত তৃণমূল কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, অত্যন্ত নিম্ন মানের গুটি (স্টোন চিপস্) দিয়ে ভিত ঢালাইয়ের কাজ হচ্ছিল। এ দিন কাজ শুরুর সময় উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী পরিচালন কমিটির সম্পাদক সিপিএমের তারাপদ রুইদাস। উত্তেজিত তৃণমূল কর্মীদের দেখে দ্রুত স্থান-ত্যাগ করেন তারাপদবাবু। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে কোনও কথা বলতে রাজি হননি তিনি। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সান্ত্বনা সরকার বলেন, “নতুন গুটি এনে তবেই ফের ভিত ঢালাইয়ের কাজ শুরু হবে।” |