|
|
|
|
ধোনিদের না আসাটা লজ্জার, বলছেন লর্গ্যাট |
পুরস্কার অনুষ্ঠান ঘিরে আইসিসি-বোর্ড ধুন্ধুমার |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
লন্ডনের পুরস্কার অনুষ্ঠানে ধোনিদের না যাওয়া নিয়ে ফের বেঁধে গেল আইসিসি এবং ভারতীয় বোর্ডের মধ্যে। আইসিসি চিফ এগজিকিউটিভ হারুন লর্গ্যাট এ দিন চাঁচাছোলা ভাষায় ধোনিদের আক্রমণ করে বলেছেন, “পুরস্কার অনুষ্ঠানে ধোনিদের না থাকাটা দুর্ভাগ্যজনক। বেশ কিছু মাস আগেই ওদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এমনকী ভারতীয় দল এই সময়ে লন্ডনে থাকবে বলেই এই দিনটা ঠিক হয়েছিল। অথচ, ধোনিরা এল না। ইংল্যান্ড দল কিন্তু এসেছিল।” লর্গ্যাট আরও যোগ করছেন, “সবাই চেয়েছিল ভারতীয়দের দেখতে। কিন্তু ওরা কেউ এলই না। আমিও অত্যন্ত হতাশ।”
ভারতীয় দলের ম্যানেজার শিবলাল যাদব যদিও এ দিন ফের দাবি করেছেন, “দুপুর বারোটা নাগাদ আইসিসির এক কমিউনিকেশন অফিসারের থেকে অনুষ্ঠানের কথা জানতে পারি। ততক্ষণে ক্রিকেটাররা বেরিয়ে পড়েছে। কেউ শপিং করতে। কেউ বেড়াতে। কারণ, লন্ডনে আমাদের থাকার এটাই শেষ দিন ছিল।” লর্গ্যাটের আক্রমণের আসল লক্ষ্য ধোনিরা নন, ভারতীয় বোর্ড। “ভারতীয় ক্রিকেটারদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বোর্ডের মাধ্যমে। এখন ভারতীয় বোর্ডের কাছে এই ঘটনার জবাবদিহি চাওয়া উচিত,” বলেন লর্গ্যাট। তিনি আরও বলেন, “মাত্র দু’মাস আগেও ওরা টেস্টের এক নম্বর দল ছিল। বিশ্বচ্যাম্পিয়নও হয়েছে এ বছরেই। তার পরেও ওদের অনুষ্ঠানে না আসাটা খুবই লজ্জার ঘটনা।”
আশ্চর্যের হচ্ছে, যে অনুষ্ঠানে ক্রিকেটারেরা গেলেন না সেখানে হাজির ছিলেন বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্ল। যা শুনে অনেকেই বিস্মিত। তার মানে ভারতীয় বোর্ড অনুষ্ঠান সম্পর্কে সম্পূর্ণ অন্ধকারে ছিল, বলা যাচ্ছে না। শুক্ল আবার বলেছেন, “আমি তো ভেবেছিলাম যারা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে তারা অন্তত আসবে। এটা প্লেয়ারদের ব্যাপার তারা আসবে কি আসবে না।” ক্রিকেটমহলে কারও কারও পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, এটা আইসিসি বনাম ভারতীয় বোর্ড নয়। শরদ পওয়ার বনাম ভারতীয় বোর্ড সংঘাতের নয়া রাউন্ড। সেই কারণেই পুরস্কার অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি তারা। কেউ কেউ মনে করছেন, বোর্ডই শুক্লকে পাঠিয়েছে। বোর্ডই ক্রিকেটারদের যেতে বারণ করেছে। তাতে আমন্ত্রণ রক্ষা হল, আবার প্রতিবাদও হল।
কয়েক দিন পরেই বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভা। সেখানে নয়া প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার কথা শ্রীনিবাসনের। সচিব পদের দৌড়ে রয়েছেন শুক্ল। কিন্তু শুক্লের আইসিসি পুরস্কার সভায় যোগ দেওয়া তাঁর প্রার্থীপদের উপর কোনও প্রভাব ফেলবে কি না সেটা এখন দেখার। কোষাধ্যক্ষ পদের জন্যও একাধিক বোর্ড কর্তা লড়ছেন। তাতে পওয়ারের একেবারে ভূমিকা থাকছে না, কেউ জোর দিয়ে বলতে পারছেন না। কয়েক দিন আগেই যেখানে পওয়ারের সমর্থনে বিলাসরাও দেশমুখ মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার হেভিওয়েট নির্বাচন জিতেছেন।
শোনা যাচ্ছে, আইসিসি অনেক আগেই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রণ পাঠিয়েছিল বোর্ডকে। কিন্তু সেই ই-মেল পৌঁছয় শুধু মুম্বইয়ের বোর্ডের সরকারি কার্যালয় ক্রিকেট সেন্টারে। বোর্ড কর্তারা ধরে রাখেন, খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনও ই-মেল হলে সেটা বোর্ড প্রেসিডেন্ট বা বোর্ড সচিবের অফিসেও আসবে। এক্ষেত্রে সেটা হয়নি বলে তাঁরা কিছুটা মনঃক্ষুণ্ণও হয়েছিলেন। আইসিসি প্রেসিডেন্টের নাম শরদ রাও পওয়ার হওয়ায় জেদাজেদি আরও বেড়ে যায়।
ইংল্যান্ডে ০-৭ স্কোরলাইন এবং একমাত্র টাই নিয়ে বিধ্বস্ত ক্রিকেটারদের অবশ্য লর্গ্যাটের মন্তব্য নিয়ে আলোড়িত হওয়ার উপায় নেই। শুক্রবার কার্ডিফে সফরের শেষ ম্যাচ। একমাত্র জয় নিয়ে যদি এখন দেশে ফেরা যায়! |
|
|
|
|
|