আদত সাকিন পশ্চিম আফ্রিকা। বাঁদর হলেও মুখটা বিচিত্র বর্ণের। বড় বড় দাঁত। বুদ্ধি ও হাব-ভাবে মানুষের সঙ্গে কিছুটা মিলও আছে। তাই নামটাও ম্যানড্রিল (ম্যান্ড্রিলাস স্ফিংক্স)। পশ্চিম আফ্রিকার এই বিপন্ন প্রজাতির পাঁচটি বাঁদর আপাতত জামশেদপুরের টাটা জুলজিক্যাল গার্ডেনে। দর্শককুলের চিত্ত বিনোদনে আজই ১১৩৬ বর্গ মিটারের খোলামেলা ঘেরাটোপে এই ম্যানড্রিলদের ছেড়ে দেওয়া হল। পুজোর মুখে জামশেদপুরে এই নতুন অতিথিরা এসেছে জেরুজালেমের তিশ ফ্যামিলি জুলজিক্যাল গার্ডেন থেকে, উপহার হিসাবে।
মরু শহর জেরুজালেম থেকে ইস্পাতনগরী জামশেদপুরে ম্যানড্রিলরা এসে পৌঁছেছে অবশ্য এক মাস আগে। তবে নতুন দেশ, খাবার-দাবার ও পরিবেশের সঙ্গে তারা যাতে মানিয়ে নিতে পারে এক মাস ধরে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ তারই ব্যবস্থা করে গিয়েছেন। ম্যানড্রিলের লেজ এ দেশের দেশি বাঁদর বা হনুমানের মতো অতটা বড় নয়, বরং ছাগলের মতো ছোট আকারের। গলার লোমশ অংশটা বাসন্তী রংয়ের কেশরের মতো, নাকটা একেবারে গোলাপি। সরাসরি না তাকালে এদের চোখটা নজরেই পড়ে না। |
চিড়িয়াখানার অধিকর্তা বিপুল চক্রবর্তী জানান, ম্যানড্রিলরা জঙ্গলে গাছে শুতেই অভ্যস্ত। মাটিতে ঘুম ওদের পোষায় না। তাই এখানকার চিড়িয়াখানায় এদের জন্য উঁচু চৌকির ব্যবস্থা হয়েছে। আফ্রিকায় ক্যামেরুন বা গেবনের জঙ্গলে দিনভর গাছে-গাছে ফল-মূল, পোকামাকড় ও মৃত পশুমাংস খেয়ে বেড়ায় ম্যানড্রিলেরা। ইজরায়েলের চিড়িয়াখানায় নুড্ল্সও খেত এরা। জামশেদপুরে আসার পর থেকে ফলমূল ও ডিমের সঙ্গে রুটিও দেওয়া হচ্ছে। নতুন খাবার ওদের মনে ধরেছে। বিপুলবাবুর দাবি, “এ দেশের আর কোনও চিড়িয়াখানায় এই বিরল বাঁদরের দেখা মিলবে না।”
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পাঁচজনের দলে দ্রোর ও এরিক হল পুরুষ। টিপটিপ, তানিয়া ও ইয়ুডিথ মহিলা। তাদের ইজরায়েলি নামগুলোই এখানেও বজায় রাখা হয়েছে। কয়েক মাস আগে জামশেদপুরের চিড়িয়খানায় দু’টি সাদা বাঘ এসেছিল। এ বার পুজোর আকর্ষণ
এই ম্যানড্রিল। জামশেদপুরে এখন খোশমেজাজেই আছে ওরা পাঁচজন। এ দেশের জলহাওয়ায় ধাতস্তও হয়ে গিয়েছে অনেকটাই। |