সুপ্রিম কোর্ট থেকে নন্দীগ্রাম-মামলা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। এতে সুপ্রিম কোর্ট রাজি হলে নন্দীগ্রামে গুলিচালনার ঘটনায় জড়িত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে মামলা করতে সিবিআইয়ের আর কোনও বাধা থাকবে না।
২০০৭-এর ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গুলিচালনায় জড়িত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা রুজুর অনুমোদন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা দায়ের করেছিল এপিডিআর। ওই বছরের ১৬ নভেম্বর হাইকোর্ট আবেদনকারীদের পক্ষেই রায় দেয়। গুলিচালনাকে ‘অসাংবিধানিক’ অ্যাখ্যা দিয়ে জড়িত অফিসারদের বিরুদ্ধে সিবিআই-কে নিম্ন আদালতে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
তদানীন্তন সরকার হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায়। যার প্রেক্ষিতে গত বছর সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রায়দান স্থগিত রেখে মন্তব্য করে, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের পরে যে সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা মামলা চালাতে রাজি না-ও হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে তারা কোনও নির্দেশ দিচ্ছে না।
নির্বাচনের পরে রাজ্যে নতুন সরকার এসেছে। এবং ক্ষমতায় এসেই নন্দীগ্রাম-মামলা সুপ্রিম কোর্ট থেকে তুলে নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে দফায় দফায় কথা বলেছেন তৃণমূল নেতারা। অবশেষে মামলাটি প্রত্যাহারেরই সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। আগামী সপ্তাহে রাজ্যের তরফে এ ব্যাপারে আবেদন জমা দেওয়া হবে বলে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আইনজীবী অভিজিত সেনগুপ্ত বুধবার জানান।
সুপ্রিম কোর্ট মামলা প্রত্যাহারের অনুমতি দিলে সিবিআই-কে ঠিক করতে হবে, কোন কোন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের হবে। সিবিআই-সূত্রে বলা হয়, গুলিচালনার পিছনে কারা ছিলেন, সে সম্পর্কে তারা তদন্ত করেছে। ওই ঘটনায় সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিট আপাতত সুপ্রিম কোর্টের জিম্মায়। রাজ্যের আবেদন সুপ্রিম কোর্ট মঞ্জুর করলে সিবিআই চার্জশিট মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে।
নন্দীগ্রাম-কাণ্ডে আহত, নিহত ও নির্যাতিতাদের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়েও এপিডিআরের তরফে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিল। পরে আরও সংগঠন এতে যুক্ত হয়। হাইকোর্ট আবেদনকারীদের পক্ষে রায় দিলেও তদানীন্তন সরকার সে নির্দেশও চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে। অভিজিৎবাবু জানান, নতুন সরকার ওই মামলা প্রত্যাহারের জন্যও সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে চলেছে। |