বিস্ফোরণের বুধবার
|
কিনারা হয়নি বহু বিস্ফোরণের |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
রাজধানীতে বেশ কিছু বিস্ফোরণের কিনারা করতে পারেনি দিল্লি পুলিশ। গত ২৫ মে দিল্লি হাইকোর্টের বাইরে বিস্ফোরণ হয়। সেই ঘটনায় অনেককে জেরা করলেও রহস্যের সমাধান হয়নি। কিনারা হয়নি ২০০৬ সালে জামা মসজিদে বিস্ফোরণ, ২০০৮ সালে মেহরৌলি বিস্ফোরণ ও ২০১০ সালে জামা মসজিদের সামনে জঙ্গি হানার। অনেক ক্ষেত্রেই বিস্ফোরণে জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে পুলিশ। মে মাসে দিল্লি হাইকোর্টের সামনে বিস্ফোরণে উঠে আসে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের নাম। যে ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয় তা ওই সংগঠনই ব্যবহার করে বলে জানায় পুলিশ।
|
বলিউডের টুইট |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট টুইটারের মাধ্যমে বিস্ফোরণের নিন্দা করল বলিউড। অভিনেতা অনুপম খের লিখেছেন, “এ বার অন্তত জেগে উঠুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দয়া করে দেশের নাগরিকদের রক্ষা করুন।” একই কথা অভিনেতা বোমান ইরানিরও। টুইটারে তাঁর মন্তব্য, “কোনও জীবনই এ ভাবে চলতে পারে না।” পরিচালক কর্ণ জোহর লিখেছেন, “নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল।” পরিচালক শেখর কপূরের বক্তব্য, “একের পর এক মৃত্যুর খবর আসছে। ফের জঙ্গি-হামলা ভারতে!” অভিনেতা অভিষেক বচ্চন ও রীতেশ দেশমুখ আবার টুইটারে হেল্পলাইন নম্বরগুলি তুলে দেন।
|
সাদা পোশাকে |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
দিল্লি হাইকোর্টের পাঁচ নম্বর গেটের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন সাদা পোশাকের একটি লোক। সঙ্গে ছিল একটি ব্রিফকেস। কিছু ক্ষণের মধ্যেই একটা বিকট শব্দ। তার পর সেই লোকটিকে আর দেখা যায়নি। বিস্ফোরণের পরে পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছেন মহেন্দ্র নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী। এ দিনের বিস্ফোরণে ওই সাদা পোশাক পরা ব্যক্তিটি প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত বলে মনে করছে পুলিশ।
|
আইনজীবীদের ধিক্কার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
প্রতিবাদে সামিল আইনজীবীরাও। অল ইন্ডিয়া বার কাউন্সিলের সদস্য অশোক দেব জানিয়েছেন, আজ, বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের আইনজীবীরা কালো ব্যাজ পরে কাজ করবেন। এই ঘটনাকে ধিক্কার জানানোর পাশাপাশি বিস্ফোরণে নিহত আইনজীবীদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানিয়েছে কাউন্সিল।
|
সন্ত্রস্ত রাজধানী
|
‘কালো’ বুধবার |
বারবার বুধবার। কিন্তু কেন? সম্প্রতি দেশে বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলা বুধবার হওয়ার পরে এই প্রশ্ন উঠছে। গত ২৫ মে, বুধবার দিল্লি হাইকোর্টে একটি ছোট বিস্ফোরণ হয়। তার পরে ১৩ জুলাই মুম্বইয়ে যে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হয়, সেটিও হয়েছিল বুধবারেই। ২৬/১১-র দিনটিও ছিল বুধবার। ধারণা ছিল, হামলার জন্য জঙ্গিরা শুক্রবারকে বাছে। ১৯৯৩-এ মুম্বই বিস্ফোরণ, ২০০৬ সালে জামা মসজিদে বিস্ফোরণ কিন্তু শুক্রবারেই হয়েছিল।
|
সিসিটিভি নেই কেন |
মে মাসে দিল্লি হাইকোর্টের পার্কিং এলাকায় ছোটখাটো বিস্ফোরণ হয়েছিল। তাতে কেউ হতাহত হননি। আদালত চত্বরের নিরাপত্তার চেহারাটা তখনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরও যে প্রশাসনের টনক নড়েনি, বুধবারের বিস্ফোরণই তার প্রমাণ। আদালতের সব ক’টি গেটের বাইরে ক্লোজড্ সার্কিট টিভি (সিসিটিভি) বসানো হয়নি কেন? উঠছে প্রশ্ন।
|
বাঁচলেন সাংবাদিক |
অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন পিটিআইয়ের এক সাংবাদিক। রোজকার মতো বুধবার সকালেও আদালতে গিয়েছিলেন উপমন্যু ত্রিবেদী। তাঁর কথায়, “পাঁচ নম্বর গেট দিয়ে সবে ঢুকেছি। আচমকা একটা আওয়াজে পিছনে তাকাই। বুঝতে পারি বিস্ফোরণ হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে অফিসে খবর দিই। নিজে রক্ষা পেয়েছি। কিন্তু চারপাশে যা দেখলাম তাতে মনটা ভারী হয়ে গেল।”
|
গিলানির ক্ষোভ |
নিরীহ লোকদের মারা আসলে সন্ত্রাসবাদ, এমনই মন্তব্য হুরিয়ত কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলি শাহ গিলানির। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে গিলানি বলেছেন, “ভারত বা পাকিস্তান, যেখানেই হোক না কেন, নিরীহ লোকজন মারার অর্থই হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ। আর মানবতার শত্রুরাই এই ধরনের কাজ করে।”
|
কাজ পুরোদমে |
বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ছন্দে ফিরল দিল্লি হাইকোর্ট। কাজ হয় সুপ্রিম কোর্টের বেশ কয়েকটি বেঞ্চেও। আইনজীবীরা জানান, আদালত চত্বরে আতঙ্ক ছিল। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ যে জীবনকে থামাতে পারে না, তা প্রমাণ করতেই কাজ শুরু হয়। |
|
নিশানা দিল্লি |
• ১৮ জুন, ২০০০: লাল কেল্লার কাছে জোড়া বিস্ফোরণ। হত ২। |
• ১৩ ডিসেম্বর, ২০০১: সংসদ ভবনে ঢুকে পড়ে পাঁচ জঙ্গি। নিহত ১২ (৫ জঙ্গি-সহ)। পিছনে লস্কর, জইশ। |
• ২২ মে, ২০০৫: লিবার্টি সিনেমা হলে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ। হত ১, আহত ৬০। |
• ২৯ অক্টোবর, ২০০৫: সরোজিনী নগর, পাহাড়গঞ্জ বাজার ও গোবিন্দপুরীতে। হত ৫৯, আহত শতাধিক। |
• ১৪ এপ্রিল, ২০০৬: জামা মসজিদে জোড়া বিস্ফোরণ। আহত ১৪। |
• ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৮: কনট প্লেস, করোল বাগ ও গ্রেটার কৈলাসে ৫ বিস্ফোরণ। হত ২৫। আহত শতাধিক। |
• ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৮: কুতব মিনারের কাছে মেহরৌলি ফুল বাজারে বিস্ফোরণ। হত ৩। |
• ২৫ মে, ২০১১: দিল্লি হাইকোর্টের বাইরে পার্কিং এলাকায় বিস্ফোরণ। কেউ হতাহত হননি। |
|
|
হরকত উল জিহাদ আল ইসলামি
(হুজি) |
• পাকিস্তানে তৈরি। সক্রিয় ভারতে। ঘাঁটি বাংলাদেশেও
• গঠিত সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময়ে
• প্রথমে নাম ছিল জামিয়াত আনসারুল আফগানিন
• লক্ষ্য ভারত ও বাংলাদেশে ইসলামি শাসন
• আইএসআই- মদতে পুষ্ট, তালিবান-আল কায়দার সঙ্গে জড়িত
• উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থানে স্লিপার সেল
• বাংলাদেশে স্লোগান: আমরা সবাই হব তালিবান, বাংলা হবে আফগানিস্তান
|
নেতা |
• বশির আহমেদ মির (নিহত)
• কারি সইফুল্লা আখতার
• মহম্মদ ইলিয়াস কাশ্মীরি (নিহত বলে মার্কিন দাবি)
• মহম্মদ শাহিদ ওরফে শাহিদ বিলাল
|
অভিযুক্ত |
ভারতে
• হায়দরাবাদে বিশেষ টাস্ক ফোর্স অফিসে হানা
• শ্রমজীবী এক্সপ্রেসে হামলা
• হায়দরাবাদে লুম্বিনী পার্ক এবং গোকুল চাটে বিস্ফোরণ
• মক্কা মসজিদে বিস্ফোরণ
• বারাণসী, ফৈজাবাদ, লখনউ আদালত চত্বরে বিস্ফোরণ
বাংলাদেশে
• কবি শামসুর রহমানকে হত্যার চেষ্টা
• শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা
• ব্রিটিশ হাই কমিশনারের গাড়িতে হামলা
• দেশ জুড়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ
|
পিইটিএন কী? |
পেন্টাইরিথ্রিটল টেট্রানাইট্রেট। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আবিষ্কৃত প্লাস্টিক বিস্ফোরক। হৃদযন্ত্রের চিকিৎসায় লাগে, বিস্ফোরকেও। লস্কর, হিজবুল এবং আল কায়দা জঙ্গিদের প্রিয়। ভিতরে স্প্লিনটার না থাকলে মেটাল ডিটেক্টরে ধরা পড়ে না। ২০০১-এর জুতোবোমা বিস্ফোরণে ব্যবহার হয়েছিল পিইটিএন। গত বছর বারাণসী বিস্ফোরণেও ছিল বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ। |
|
|
|