|
|
|
|
ধৃতের বাড়িতে আগুন দিল জনতা |
স্বরূপনগরে মেয়ের সহপাঠীকে খুনের দায়ে গ্রেফতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • স্বরূপনগর |
মেয়ের সহপাঠী আন্না খাতুনকে খুন করার অভিযোগে স্বরূপনগরের আজমল গাজিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার গভীর রাতে বাংলানি গ্রামের বাড়ি থেকেই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। রবিবার বসিরহাট আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতকে ১৪ দিন জেল-হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এ দিনই সন্ধ্যায় আন্নার দেহ গ্রামে এলে জনতা আজমলের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।
আজমলের মেয়ে মাসুরা খাতুনের সহপাঠী ছিল বাংলানি গ্রামের ১১ বছরের আন্না খাতুন। গত ২৫ অগস্ট বই নিয়ে বচসা হয় দুই বন্ধুর। মাসুরা আন্নার বই নিয়ে নেয়। অভিযোগ, আন্না মাসুরাকে চুরির অপবাদ দেয়। মাসুরা সে কথা তার বাবাকে বলে। আজমলের বউদি আকলিমা বিবির কাছে আন্না আরবি পড়ত। ২৬ অগস্ট আন্না আজমলদের বাড়ির বারান্দায় বসে পড়ছিল। মাসুরা তখন ফের পুরনো কথা তোলায় আন্না তাকে ‘ডিস্টার্ব’ করতে বারণ করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছে, আজমল মেয়ের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে গেলে আন্না তাঁকেও ‘ডিস্টার্ব’ করতে বারণ করে। এতেই রেগে গিয়ে আজমল ভাবেন, তাঁকে ইংরেজিতে গালাগাল দিচ্ছে আন্না। এর পরেই তিনি গলার টুঁটি চেপে আন্নাকে মাটিতে আছড়ে, মারধর করেন বলে অভিযোগ। আন্না অসুস্থ হয়ে পড়ে। শুক্রবার বিকালে কলকাতার হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। আন্নার বাবা নজরুল গাজি পুলিশের কাছে আজমলের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশের দাবি, জেরায় আজমল তাদের কাছে জানিয়েছেন, ‘রাগের বশে’ তিনি ওই ‘কাণ্ড’ ঘটিয়ে ফেলেছেন। আন্না ইংরেজিতে যা বলেছিল, তা তিনি বুঝতে পারেননি। ভেবেছিলেন, মেয়েটি তাঁকে গালাগাল দিচ্ছে। আজমলের বাবা গোলাম গাজিও বলেন, “আমার ছেলে ইচ্ছাকৃত ওই ঘটনা ঘটায়নি। আমরা তদন্তে পুলিশকে সব রকম সাহায্য করতে চাই। সেই কারণেই মেয়েটিকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছিল, আমরা গিয়েছিলাম। থানায় আন্নার বাবা যখন ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করছিলেন, তখনও আমি ছিলাম।” আন্নার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়না-তদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ।
ময়না-তদন্তের পরে রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতা থেকে আন্নার মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। সেই সময়ে গ্রামবাসীদের একাংশ উত্তেজিত হয়ে আজমলের বাড়িতে আগুন লাগান বলে অভিযোগ। পুড়ে যায় রান্নাঘর, ধান ও পাটের গোলা। অন্য গ্রামবাসীরা অবশ্য এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান। পুলিশের সঙ্গে তাঁরাই আগুন নেভানোয় হাত লাগান। ফের গোলমালের আশঙ্কায় গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। |
|
|
|
|
|