|
|
|
|
তৃণমূলের নামে ‘শ্রমিক বয়কট’ করানোর নালিশ |
মামলার হুমকি প্রাক্তন বিধায়কের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
তৃণমূল কংগ্রেসের হুমকিতে দিনমজুররা কাজ করতে না-চাওয়ায় পুকুরের মাছ, গোলার ধান ও গুদামের পাট বিক্রি করে আর্থিক উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, এই অভিযোগে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছেন সিপিএমের এক প্রাক্তন বিধায়ক। এক মাসের মধ্যে অভিযোগের সুরাহা না হলে হিসেব কষে পুরো সাড়ে তিন লক্ষা টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তিনি। কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থানার দেওচড়াইয়ের বাসিন্দা ওই প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের নাম তমসের আলি। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তিনি। রাজ্যপালের পাশাপাশি মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র, সচিব, কোচবিহারের জেলাশাসককে লিখিত অভিযোগে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাসে চলতি মরসুমে চাষাবাদে আর্থিক ক্ষতির পুরো বিবরণও দিয়েছেন ওই সিপিম নেতা। সিপিএমের টিকিটে ২০০১ ও ২০০৬ সালে কোচবিহারের নাটাবাড়ি কেন্দ্র থেকে পরপর জয়ী হন তমসের। এবার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কাছে হেরে গিয়েছেন। প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের অভিযোগ, তৃণমূল জেলা সভাপতির নির্দেশেই তাঁর অনুগামীরা চাষাবাদ বন্ধ করে দিয়েছেন। শুক্রবার কোচবিহারে দলের জেলা দফতরে প্রাক্তন সভাধিপতি জ্ঞানেন্দ্রচন্দ্র চন্দ, যুব নেতা মহানন্দ সাহাকে দু’পাশে বসিয়ে তমসের আলি বলেন, “এ বার ১০ বিঘা জমিতেই ভাল পাট হয়েছিল। বিঘা প্রতি ১৯-১২ মণ ফলন উঠত। এপ্রিল নাগাদ পুকুরে ছাড়া ১০ কেজি চারাপোনাও কয়েকমাসে বেড়ে অন্তত ১০ কুইন্টাল হয়ে যেত। তৃণমূলের শ্রমিক বয়কটে একটা পাটও কাটতে পারেনি। এরাই পুকুরের মাছও তুলে নিয়ে গিয়েছে। ধান চাষও করা হল না শ্রমিক সমস্যায়। সব কিছু জানিয়েই রাজ্যপালকে ফ্যাক্স করেছি। এক মাসের মধ্যে প্রতিকার না পেলে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে যাব ঠিক করেছি। প্রতিহিংসার এমন ঘৃণ্য রাজনীতি মুখ বুজে মেনে নেওয়া যায় না। আমার ভাই সহ গ্রামের বন্ধু সমর্থকেরও একই অবস্থা।” কোচবিহারের ভারপ্রাপ্ত জেলাশাসক গোদালা কিরণকুমার বলেন, “কিছু দিন আগে প্রাক্তন বিধায়ক বেশ কিছু অভিযোগ দিয়েছিলেন। পুলিশকে সব তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার উনি দফতরে কি অভিযোগ জমা দিয়েছেন তার কপি এখনও আমার হাতে আসেনি। খোঁজ নিচ্ছি।” কোচবিহারের বর্তমান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন প্রাক্তন বিধায়কের অভিযোগের প্রতিলিপি পেলে খতিয়ে দেখবেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছেন, “সব অভিযোগই ভিত্তিহীন।” উল্টে রবীন্দ্রনাথবাবুর কটাক্ষ, “ক্ষমতার গরমে শরিকি আত্মীয়দের ভাগ না দিয়ে তমসের আলি নিজেই পুকুর ভোগ করছেন। ন্যায্য প্রাপকদেরও মাছের ভাগ দেননি। তা ছাড়া শ্রমিকদের ভয় দেখিয়ে উপযুক্ত পারিশ্রমিক না দিয়ে জমিতে কাজ করাতে বাধ্য করেছেন। এখন সেসবের ফল ভুগতে হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের দলের কেউ ওরকম কোনও ঘটনার সঙ্গেই জড়িত নন।” অভিযুক্তদের তালিকা থাকা তৃণমূলের দেওচড়াই অঞ্চল সভাপতি কবীর আলি বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষকতা করতেন তমসের। গরিবের পার্টির টিকিটে বিধায়ক হয়ে ধনী হয়েছেন। এখন মিথ্যা অভিযোগ করে বাজার গরম করতে চাইছেন। ২০ বছর আগে ওঁর কি ছিল, সেটা সবাই জানেন।” |
|
|
|
|
|