কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরেই কোথাও ডাঁই করে রাখা হাসপাতালের পরিত্যক্ত জিনিসপত্র। সেখানে জমা জলে থিকথিক করছে মশার লার্ভা। কোথাও আবার বন্ধ হয়ে রয়েছে নিকাশির মুখ। সেখানেও জল জমে যাচ্ছে প্রতিদিন। তার মধ্যেও মিলেছে মশার লার্ভা। শুক্রবার সকালে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের পরিদর্শকেরা আচমকা ওই হাসপাতালে গিয়ে এমনই সব দৃশ্যের সাক্ষী হলেন।
পুর-স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ বলেন, “পুরসভার তরফে আমরা হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠাচ্ছি। দু’এক দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। শুধু লার্ভা নয়, মশার কামড়ে সেখানে টেকা দায়। আমরা মশা মারার ওষুধ দিয়েছি। সেখানে ১৩টি খোলা ওভারহেড ট্যাঙ্ক পেয়েছি। সেগুলি ম্যালেরিয়া-ডেঙ্গির মশার আঁতুড়ঘর।” |
মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে পড়ুয়াদের হস্টেল এবং ইডেন হাসপাতালের মাঝের একটি জায়গায় বহু দিন ধরেই রাখা আছে হাসপাতালের পরিত্যক্ত জিনিসপত্র। বুজে গিয়েছে একটি নর্দমা। মশার লার্ভা মিলেছে স্বর্ণময়ী হস্টেল এবং ইডেন হাসপাতালের একতলায়। স্বর্ণময়ী হস্টেলের ওভারহেড ট্যাঙ্কের মুখও খোলা ছিল বলে পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, এই সব খোলা জলাধারে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গির মশা জন্মায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এগুলি দ্রুত বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
গত বছরেও ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গির মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছিল মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, এমন পরিবেশের জন্যই হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে অনেকে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। গত বছরেই এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নোটিস দেওয়া হয়েছিল।
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বলেন, “গত বার ইডেন হাসপাতালেই ৪০টি জায়গায় মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এ ছাড়া, হাসপাতাল চত্বরে অনেকগুলি খোলা চৌবাচ্চা ছিল। সেখানেও মশার লার্ভা মেলে। তবে ওই চৌবাচ্চাগুলি এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ উৎপল দত্ত বলেন, “গত বার পুরসভা অভিযান চালানোর পরে আমাদের যা যা ব্যবস্থা নিতে বলেছিল, তার অনেকটাই নিয়েছি। কিছু কাজ বাকি। সেগুলি দ্রুত শেষ করা হবে। তবে আজকের অভিযান সম্পর্কে কিছু জানি না।”
এ দিন পুরসভার পরিদর্শকেরা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও পরিদর্শন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনের সামনে পড়ে থাকা ডাবের খোলায় মশার লার্ভা মিলেছে বলে জানিয়েছেন অতীনবাবু। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের মধ্যে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গি প্রতিরোধের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে পুরসভার তরফে একটি শিবির করা হবে বলেও জানান তিনি। |