নাটক সমালোচনা...
নাটকীয় অভিঘাতে টানটান উত্তেজনা
সবা অর্ঘ্যের ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ (পরিচালক মণীশ মিত্র) নিঃসন্দেহে ইদানীং কালের অন্যতম উল্লেখযোগ্য প্রযোজনা। মধুসূদনের মহাকাব্য প্রকাশের দেড়শো বছর পূর্তি উপলক্ষে সাহিত্যনির্ভর এই মঞ্চ প্রযোজনা বলা যেতে পারে বাঙালির উনিশ শতকের প্রতি একুশ শতকের অর্ঘ্য। মেঘনাদবধ নিয়ে নাটক এই প্রথম নয়। প্রথম যা তা হল মঞ্চের ভাষায় ও পরিসরে, বিন্দুতে সিন্ধুর মতো গোটা মহাকাব্যকে ধরবার প্রয়াস। কাব্য, নাটক, বর্ণাঢ্য দৃশ্যময়তা, জলদমন্দ্র ভাষা, মহাকাব্যিক বিস্তার ও প্রাচুর্য পাঁচটি দৃশ্যে নাটকের নিজস্ব ভাষায় ধরা দুঃসাধ্য। তবু এই প্রযোজনায় মহাকাব্যনাট্যের গাঢ় অভিঘাত ঘটাতে পেরেছেন পরিচালক। রিচুয়্যালের মতো বর্ণময় প্রথম দৃশ্য থেকে নাটকের সমাপ্তি পর্যন্ত বহুমাত্রিক মঞ্চপ্রয়োগে সমৃদ্ধ প্রযোজনা। কোরাসের মতো কথক ও কুশীলবদের উচ্চারণে মূল কাব্য মঞ্চে কখনও দৃশ্য রচনা করে, কখনও নাট্যমুহূর্ত সৃষ্টি করে,কখনও আখ্যানকে এগিয়ে নিয়ে যায়। ধ্রুপদী ও লৌকিক নৃত্য, কেরলের কথাকলি, কুরিয়াট্টম ও পুরুলিয়া ছৌ-এর পৌরাণিক অনুষঙ্গ এবং বীররসের যোগ্য পৌরুষদীপ্ত নৃত্যভাষা, গান ও সঙ্গীতের ঘন আবহ এবং বীরত্বব্যঞ্জনার বা বিলাপদৃশ্যের বিভিন্ন ভূমিকায় কুশীলবদের অভিনয় মূল রচনাকে দিয়েছে এক ঋজু নাট্যশরীর।
নাটকের শীর্ষ মুহূর্ত আসে মেঘনাদ হত্যার তৃতীয় দৃশ্যে। জমাট নাটকীয় অভিঘাতের টানটান এই দৃশ্যের অভিনয় কৃতিত্ব অনির্বাণ ঘোষের (মেঘনাদ, লক্ষ্মণ, বিভীষণ)। আগের দু’টি দৃশ্যের প্রাণ রণিত মোদক (রাবণ, চিত্রাঙ্গদা, মেঘনাদ) ও সীমা ঘোষ (প্রমীলা)। কিন্তু কাব্যের প্রমীলার তুলনায় মঞ্চের প্রমীলা নিষ্প্রভ। তা ছাড়া তৃতীয় দৃশ্যের পর নাটক জমে না। যদিও প্রযোজনার চমৎকার করুণ নাটকীয় পরিণতি ঘটে মেঘনাদ ও প্রমীলার শ্মশানশয্যায়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.