জীবনবিমার টাকা হাতানোর জন্য স্বামী তাঁকে গুলি করে খুন করতে চেয়েছিল বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন এক মহিলা। এর ভিত্তিতে ঘটনার সাত মাস পরে পুলিশ অভিযোগকারিণীর স্বামী ঋতেশ সাউকে গ্রেফতার করেছে। আজ, শনিবার তাকে ব্যারাকপুর আদালতে হাজির করা হবে।
পুলিশ জানায়, গুলিতে ঋতেশের স্ত্রী মধুমালার মুখের হাড় ভেঙে গিয়েছে। কথা বলতেও কষ্ট হয় তাঁর। বাঁ চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। একাধিক অস্ত্রোপচারের পরে এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি তিনি। তবু কিছুটা ঠিক হয়েই গত বৃহস্পতিবার থানায় অভিযোগে দায়ের করেন মধুমালা। পুলিশ জানায়, দু’বছর আগে হাওড়ার বেলিলিয়াস রোডের বাসিন্দা মধুমালা ও বরাহনগরের নেতাজি কলোনির ঋতেশের বিয়ে হয়। ঋতেশ তাঁর জন্য বিয়ের ঠিক আগে মেডিক্যাল বিমা ও বিয়ের দু’মাসের মধ্যেই ১ কোটি টাকার জীবনবিমা করান বলে দাবি মধুমালার। তাঁর অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বিয়ের পর থেকেই পণের টাকার জন্য ঋতেশ শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত বলেও পুলিশকে অভিযোগে জানিয়েছেন মধুমালা। গত ৩০ জানুয়ারি রাত দশটা নাগাদ খড়দহের একটি রেস্তোরাঁয় খেয়ে ফেরার পথে ঋতেশ তাঁর মুখ তাক করে গুলি ছোড়ে বলে তাঁর অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার নাকের নীচ দিয়ে ঢুকে গালের হাড় ভেঙে বেরিয়ে যায় গুলিটি। ঘটনার পরে ঋতেশই তাঁকে নিয়ে যায় হাসপাতালে। রোজ সে হাসপাতালে স্ত্রীকে দেখতে যেত বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।
কেন ঘটনার ছ’মাস পরে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন মধুমালা? শুক্রবার ওই মহিলা বলেন, “আসল কথা বললে আমার বাচ্চা, বাবা-মা-ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল ও। বলেছিল, জীবনবিমার ১ কোটি টাকা পেতেই আমাকে মারতে চায়। প্রথমে আমি ভয়ে কিছু বলিনি। তার পরে দেখলাম লোকের চোখে ধুলো দিতে ও এফআইআর করছে, আমার চিকিৎসাও করাচ্ছে। সবাই তা দেখে ওকে ভগবান ভাবছে। আর চুপ করে থাকতে পারিনি। এক দিন ভাইকে সব বলে ফেলি।” পুলিশ জানায়, ঋতেশের দায়ের করা এফআইআরে জানানো হয়েছিল, কয়েক জন অচেনা দুষ্কৃতীর ছোড়া গুলিতে জখম হয়েছেন মধুমালা।
এ বার খড়দহ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মধুমালা। অভিযোগ জানানো হয় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পুলিশ সুপারের কাছেও। শুক্রবারই ঋতেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। |