শিশির মঞ্চে ‘অনুশীলন’ নিবেদন করল পঞ্চকবির গান। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, দ্বিজেন্দ্রলাল, অতুলপ্রসাদ, রজনীকান্ত। যাঁরা গাইলেন তাঁদের অধিকাংশই নতুন। সে জন্য তাঁদের এই প্রয়াস অভিনন্দনযোগ্য।
কুমকুম বন্দ্যোপাধ্যায় নিবেদন করলেন রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘আজি ঝড়ের রাতে’। দেবরানি কর গাইলেন দ্বিজেন্দ্রলালের গান ‘একবার গালভরা মা ডাকে’, নজরুলগীতি ‘শ্যামা মায়ের পায়ের’ ইত্যাদি গান। কণ্ঠ সুমধুর হলেও মাঝে মাঝেই স্বরবিচ্যুতি ঘটেছে। পরের শিল্পী মৌসুমি সেন শোনালেন নজরুলগীতি ‘স্নিগ্ধশ্যাম বেণী বর্ণা’, ‘শাওন আসিল ফিরে’। এ দিন ভাল গেয়েছেন উদিতা সরকার। মলিনা রুদ্রও নজরুলগীতি শুনিয়ে প্রশংসা পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রজনীকান্ত, অতুলপ্রসাদ, দ্বিজেন্দ্রগীতির জনপ্রিয় গায়িকা নীলা মজুমদার। তিনি প্রথমে নিবেদন করলেন সেই গানটি যা বারবার গেয়ে শ্রীরামকৃষ্ণকে আনন্দ দিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ - ‘মন চল নিজ নিকেতনে’। এর পর দু’খানি দ্বিজেন্দ্রগীতিও শোনালেন তিনি। অনুষ্ঠানে তাঁর শেষ গান ‘তোমারেই ভালবেসেছি তোমারেই ভালবাসিব’। শ্রোতারা সত্যিই অভিভূত। এ দিন মাইক্রোফোনের উচ্চকিত আওয়াজ কখনও কখনও শ্রোতাদের কাছে বিরক্তির কারণ হয়েছে।
|
সম্প্রতি রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবনে গীতায়ন সঙ্গীত অ্যাকাডেমি আয়োজন করেছিল একটি সুন্দর রবীন্দ্র-সন্ধ্যা। গৌতমবরণ অধিকারী ও স্নিগ্ধা কর আচার্যের পরিচালনায় এই অনুষ্ঠান ছিল অন্য মাত্রার। এর মধ্যে যাদের নাম উল্লেখের দাবি রাখে তাঁরা হলেন গোপাল পাত্র, সুবীর নন্দী, সুছন্দা ঘোষ, গিণিমালা দে প্রমুখ। সুছন্দা ঘোষের ‘দাঁড়াও আমার আঁখির আগে’ ও গিণিমালা দের কণ্ঠে ‘আঁধার রাতে একলা পাগল’ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। শুভ্রা গোস্বামীর কণ্ঠে ‘রুদ্র বেশে কেমন খেলা’, শুক্লা দাসের ‘আজ শ্রাবণের পূর্ণিমাতে’ ও সুমিত্রা দাসের ‘যখন এসেছিলে’ ভাল লাগে। যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন পার্থ ভট্টাচার্য, সোমনাথ দাস, দেবপ্রসাদ দে, অরবিন্দ প্রধান, পঞ্চানন বড়াল প্রমুখ।
|
রবীন্দ্রসদনে ‘স্বতন্ত্র’ আয়োজিত কাজল শূরের পরিচালনায় ‘আমার দোসর যে জন’ ও মাধবী বর্মনের পরিচালনায় ‘চণ্ডালিকা’। কাজল পাঠ করলেন ‘পার্টনার’ এবং রবীন্দ্রনাথের ‘রক্তকরবী’, ‘শেষের কবিতা’ প্রভৃতি। কাজলের রবীন্দ্রগান ও পাঠ এবং সহ-শিল্পী শর্মিষ্ঠার কণ্ঠমাধুর্য অনবদ্য। তুলনায় অলক সিকদার কবিতা পাঠে অত উজ্জ্বল নন। সিতাংশুর আবহ চমৎকার।
নৃত্যনাট্য ‘চণ্ডালিকা’য় চৈতালি সরকার, মাধবী বর্মন, নীহার ঘোষ তাঁদের নৃত্যনৈপুণ্যে মুগ্ধ করেন। শুরুতে শিশুশিল্পীদের নৃত্যপ্রদর্শন ব্যাহত হওয়ায় অনুষ্ঠানটিকে পুরোপুরি স্বতন্ত্র বলা গেল না।
|
সুরঙ্গমার ছাত্রছাত্রীদের সমবেত সঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা। গৌতম মিত্র গাইলেন ‘কবে আমি বাহির হলেম’। প্রাণবন্ত নিবেদন। কৌশিকী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কতবার ভেবেছিনু’ গানটি কেন তিনি মাঝখান থেকে শুরু করলেন তা শ্রোতাদের কাছে বোধগম্য নয়। সুচিন সিংহের দু’টি গানের মধ্যে ‘আমার মনের কোণের’ গানটি শ্রোতাদের কাছে প্রশংসা পায়। মানসী ভট্টাচার্য, বেলা সাধুখাঁ, মধুছন্দা ঘটকের গানও সুখশ্রাব্য। অমিতেশ চন্দকে মাইকের ব্যবহারে আরও যত্নবান হতে হবে। এ দিন আবৃত্তিতে ছিলেন তাপস নাগ, প্রসূন গুহ। পরিচালনায় সুপ্রকাশ মুখোপাধ্যায়। |