দাসেরবাঁধের কঙ্কাল-কাণ্ডে সুশান্ত ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত এক সিপিএম নেতাকে কলকাতার উপকণ্ঠ থেকে গ্রেফতার করল সিআইডি। শঙ্কর সাউ নামে অবসরপ্রাপ্ত এই প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক গড়বেতার বহরাশোলের সিপিএম লোকাল কমিটির সদস্য। বেনাচাপড়ায় সুশান্তবাবুর আদিবাড়ির কাছেই বীরসিংহপুর গ্রামে বাড়ি শঙ্করবাবুর। জুনের গোড়ায় দাসেরবাঁধ থেকে কঙ্কাল উদ্ধারের পর থেকেই তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন।
২০০২-এর ২২ সেপ্টেম্বর কেশপুরের পিয়াশালায় তৃণমূল কর্মীদের ‘হত্যা’ এবং নিহতদের দেহ দাসেরবাঁধে কবর দেওয়ার ঘটনায় শঙ্করবাবু ‘প্রত্যক্ষ’ ভাবে জড়িত বলেই দাবি সিআইডি-র। তাঁকে নিয়ে এই মামলায় এ পর্যন্ত ১১ জন গ্রেফতার হলেন। আজ, শনিবার ধৃতকে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করানো হবে বলে সিআইডি সূত্রে জানানো হয়েছে। শঙ্করবাবুকে গ্রেফতার করতে পারা, তদন্তে ‘বড় সাফল্য’ বলেই দাবি করছে সিআইডি। কারণ, এফআইআরেও কেশপুরের সিপিএম নেতা তথা বর্তমানে কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক তরুণ রায়, প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্তবাবুর পরেই নাম রয়েছে শঙ্করবাবুর। সুশান্তবাবু ইতিমধ্যেই জেলবন্দি। আর তরুণবাবুর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে হাইকোর্টে। |
মুকুন্দপুরের ১৭ নম্বর কৃষকপল্লি রোডের ওই বাড়ি থেকে বেরোতেই এ দিন সকালে শঙ্করবাবুকে ধরা হয়। পরে শঙ্করবাবু যে ঘরটিতে থাকতেন, সেখানে তল্লাশি চালিয়ে নগদ কিছু টাকা, একটি ডায়েরি, দু’টি ‘মোবাইল হ্যান্ডসেট’ এবং জামাকাপড়-সহ ছোট একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি সিআইডি-র। শঙ্করবাবুর সঙ্গে দেখা করতে কে বা কারা আসত, সে সংক্রান্ত তথ্য জোগাড় করছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। সিআইডি-র এক পদস্থ আধিকারিকের দাবি, অন্তত মাস দু’য়েক ধরে কলকাতার আশেপাশেই নানা জায়গায় গা-ঢাকা দিয়ে থাকছিলেন বলে জেরায় শঙ্করবাবু তাঁদের কাছে স্বীকার করেছেন। কোথায় কোথায় তিনি ছিলেন, তা জানারও চেষ্টা চালাচ্ছেন গোয়ান্দারা।
মুকুন্দপুর লাগোয়া এলাকায় একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। সেগুলিতে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা করাতে আসা রোগী বা তাঁদের আত্মীয়দের জন্য অতিথিশালাও গড়ে উঠেছে। এলাকার সাধারণ মানুষ ছোট ছোট বাড়িও মাসিক-চুক্তিতে ভাড়া দেন।
সিআইডি সূত্রের খবর, শঙ্করবাবু যে বাড়িটিতে ভাড়া ছিলেন বৃহস্পতিবার রাত থেকেই গোয়েন্দাদের একটি দল তার সামনে অপেক্ষা করছিল। এ দিন বাড়ি থেকে বেরোনোর পরে শঙ্করবাবুকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। সিআইডি-র ডিআইজি (অপারেশন) কে জয়রামনের বক্তব্য, “আমরা ধৃতকে প্রাথমিক জেরা করেছি। কিছু তথ্যও পাওয়া গিয়েছে।” তবে শঙ্করবাবু কোনও অভিযোগই স্বীকার করেননি বলে সিআইডি সূত্রের খবর। |