...গন্ধ এসেছে মহানগর মাতবে এ বার ‘যুগলবন্দি’র শিল্পকর্মে
ড়ের মাঠে ফুটবলারদের জুটি ছিল আমজনতার চেনা চিত্র। পুজোর বাজারে এ বার শিল্পীরাও নেমে পড়েছেন জুটি বেঁধে। কোথাও যুগলবন্দি তো কোথাও পুজোয় মণ্ডপ সাজাচ্ছে গোটা একটা দল।
সমরেশ-গৌতম, হাবিব-আকবর, আনচেরি-বিজয়নের জুটি কলকাতার ময়দানে খুব চেনা। কোথাও আবার জুটিটা গৌতম-প্রসূন-সুভাষের। তবে গুরু শিষ্যের লড়াই কলকাতার ময়দানে দেখা যায়নি কখনও। পুজোর ময়দানে কিন্তু তা ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে।
গুরু তরুণ দাসকে সামনে রেখে গোটা একটা দল হিসেবে আবার কাজ করছেন তাঁর ছাত্র ভবতোষ সুতার, নির্মল মালিকেরা। গত বছর বড়িশা ক্লাবের পুজোর পরে এ বার ওই দল তৈরি করছে সেলিমপুর পল্লির মণ্ডপ। সেলিমপুরে ওই শিল্পীগোষ্ঠী তুলে আনছে ধ্বংসের মধ্যে সৃষ্টির থিম। শিল্পীরা জানান, দেবতাদের যজ্ঞের মাধ্যমে সৃষ্টি হন দুর্গা। সেই বিষয়টি ফুটে উঠছে। মাইকেলএঞ্জেলোর সিস্টিন চ্যাপেলের কারুকার্যের ছোঁয়াও থাকছে সেই মণ্ডপে।
বালিগঞ্জ পূর্ব পল্লিতে এ বারের থিম ‘পুজো-আর্কাইভ’। শহরের ১৫ জন সেরা থিমমেকার গত ১৫ বছর ধরে তাঁদের যে শিল্প কলকাতার পুজোকে উপহার দিয়েছেন, তার নিদর্শন থাকছে এই মণ্ডপে। অতীতের নজর কাড়া প্রতিমা এবং মণ্ডপগুলিকে আর এক বার দেখে নেওয়া যাবে এই মণ্ডপ-প্রাঙ্গণে। সেখানে হাত মিলিয়েছেন অমর, ভবতোষ, সনাতন, দীপক, পূর্ণেন্দু সবাই। প্রতিমায় রয়েছে বির্বতনের ছাপ।
উত্তর থেকে দক্ষিণ, দর্শক টানার লড়াইয়ে কলকাতার বিভিন্ন মাপের পুজো কমিটির ভরসা এ বার শিল্পীদের জুটি। ৪১ পল্লিতেও কাজ করছে গুরু-শিষ্যের যুগলবন্দি সৌরভ জানা-মহেন্দ্র পাল। দর্শক টানতে তাঁদের অস্ত্র ‘অন্নপূর্ণার ভাণ্ডার’। মণ্ডপের ভিতরে বিশাল হাঁড়ি সাজিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে ভাঁড়ার ঘর। মণ্ডপের আবহে থাকছে মন্বন্তরের ছোঁয়া। এক পুজোকর্তা জানালেন, ক্ষুধার্ত অসুর খাবার চাইছেন মায়ের কাছে। এটাই তাঁদের ভাবনা।
এ বার জুটির শরণাপন্ন হয়েছে হরিদেবপুর অজেয় সংহতি-ও। বছর আটেক আগে এই পুজোতেই হাত পাকিয়েছিলেন অমর সরকার-ভবতোষ সুতার। এ বার দায়িত্বে শিল্পী বিভাস মুখোপাধ্যায় ও সুব্রত মণ্ডলের জুটি। গত বার হিন্দুস্থান পার্ক সর্বজনীনের পরে এই জুটি এ বার অজেয় সংহতিতে। থিম ‘তিনে নেত্র’। মণ্ডপে থাকছে ১০ হাজারেরও বেশি কাজললতা।
রামলালবাজারে এ বার রাজা সরকার ও চঞ্চল হালদারের জুটি। থিম বৃক্ষদেবতা। চঞ্চল জানান, মানুষ কেন গাছকে দেবতা হিসেবে পুজো করে, সে উত্তরের সন্ধানই ওই পুজোয়। গত বার যোধপুর পার্ক পল্লিমঙ্গলের পরে রাজা-চঞ্চল এ বার রামলালবাজারকে নতুন অভিজ্ঞতা দিতে চান।
দমদম মেট্রো স্টেশনের গা ঘেঁষে ১৪ পল্লি সর্বজনীনের মণ্ডপ। ভিতরে ঢুকলেই চোখে পড়ে একটুকরো আন্দামান। মণ্ডপ গড়ছেন শিল্পী সঞ্জয় অধিকারী ও বাবলা গৌরের জুটি। আশা করছেন, অন্যদের টেক্কা দিয়ে এ বছর বেশ ভিড় টানবে তাঁদের কাজই।
একই আশা শিবু দত্ত ও সমীর দে-র। শীতলাতলা কিশোর সঙ্ঘের পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন তাঁরা। পুজো কমিটির এক কর্তা জানালেন, এ বার তাঁদের থিম ‘বায়োস্কোপে দুর্গা’। ছোটবেলায় দেখা সেই ‘ম্যাজিক বাক্সের’ স্মৃতি ফিরিয়ে এনে চমক দিতে তৈরি হচ্ছেন এই পুজো-কর্তারা।
দক্ষিণ কলকাতার নেতাজি সেবাদলে এ বার মণ্ডপ গড়ছেন ‘ঘরের ছেলে’ চঞ্চল দে আর দেবনাথ রায়। গত বছর এই জুটি কোথাও কাজ করেনি। এ বার তাঁরা তৈরি করছেন ত্রিপুরার উনকোটি পাহাড়। উপকরণ ফাইবার গ্লাস ও প্যারিস। পাশাপাশি, এ বার তাঁরা যুক্ত কসবা জগন্নাথ ঘোষ রোডের পুজোতেও। সেখানে তাঁদের নিবেদন দৃষ্টিহীনদের ‘ব্রেল’।
ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে এ বার পুজোয় সামিল তিন শিল্পী। বন্দন রাহা, সঞ্জিত ঘোষ ও সুবোধ রায়। দমদমপার্ক তরুণ সঙ্ঘের পুজোর কারিগর বন্দন। সঞ্জিত তাঁর শিল্পকর্ম দেখাবেন সল্টলেক এফডি ব্লক এবং ৯৫ পল্লিতে। সুবোধ রায় পুজোর কাজ করবেন না ভেবেও শেষ পর্যন্ত হাত লাগিয়েছেন ভবানীপুরের গোলমাঠের কারুকার্যে।
এ বারের পুজোয় কলকাতা দেখতে পাবে না শান্তিনিকেতনের এক শিল্পীর কাজ। কমলদীপ ধর এ বার কলকাতার পুজোয় নেই। নেই বলা ভুল হবে, তিনি অবশ্যই থাকছেন নিজের ছাত্রদের কাজের মধ্য দিয়ে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.