প্রথাগত ভাবে ভারতীয় চা পানের প্রচলন তুলনায় কম, এমন দেশগুলিকেই রফতানির সম্ভাবনাময় ‘নতুন’ বাজার হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে টি বোর্ড। আর সেই লক্ষ্যেই কানাডাকে পাখির চোখ করছে এ দেশের চা শিল্প।
টি বোর্ডের ডেপুটি চেয়ারম্যান রোশনি সেন জানান, অন্যতম সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবেই কানাডাকে দেখছেন তাঁরা। অক্টোবরে প্রদর্শনীতে যোগ দিতেও সে দেশে যাচ্ছে বোর্ড ও চা শিল্পের যৌথ প্রতিনিধিদল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, বছরে গড়ে প্রায় ২ কোটি কেজি চা আমদানি করে কানাডা। এর মধ্যে সাধারণ চায়ে আধিপত্য ব্রিটেনের (২২%)। এর পরেই থাকলেও, বেশ কিছুটা পিছনে ভারত (১২%)। প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে কেনিয়া, শ্রীলঙ্কার তরফেও। আর ‘গ্রিন টি’-র ক্ষেত্রে চিন ও জাপানই মূল বিক্রেতা। টি বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, ২০০৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কানাডায় ভারতীয় চায়ের রফতানি বাড়ছিল। ২০০৭-এ ১০ লক্ষ কেজি চা কানাডায় রফতানি হয়। মূল্য প্রায় ১৩ কোটি টাকা। পরের বছর ১০.৫২ লক্ষ কেজি রফতানি ব্যবসার মূল্য ছিল ২৫ কোটি। আর ২০০৯-এ রফতানি হয় প্রায় ২৫ লক্ষ কেজি চা। ২০১০-এর প্রাথমিক হিসাবে অবশ্য তা কমে ২১ লক্ষ কেজি হবে বলে আশঙ্কা।
তবে বোর্ড কর্তাদের বক্তব্য, শুধু যে ভারত থেকেই ভারতীয় চা রফতানি হয়, এমন নয়। যেমন, ব্রিটেনে রফতানি হওয়া ভারতীয় চায়ের কিছুটা আবার কানাডায় বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। তাই ওই চা সরাসরি ভারত থেকেই রফতানি করা গেলে দেশের ভাঁড়ারে বিদেশি মুদ্রার আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা। তা ছাড়া, কানাডা-র ক্রমবর্ধমান চায়ের বাজারে সরাসরি বিক্রি বাড়ানোও লক্ষ্য চা শিল্প মহলের।
প্রসঙ্গত, দেশে চায়ের বাজার উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও রফতানি ততটা বাড়েনি। তাই তা বাড়াতে ‘৫৫৫ কর্মসূচি’ নিয়েছে টি বোর্ড। যা অনুযায়ী, রাশিয়া, ইরান, কাজাখস্তান, আমেরিকা ও মিশরএই পাঁচ দেশে পাঁচ বছর ধরে ফি-বছর পাঁচটি করে ‘উদ্যোগে’র পরিকল্পনা রয়েছে টি বোর্ডের। যার মাধ্যমে ওই সব দেশে ভারতীয় চায়ের বাজার বাড়াতে চায় তারা।
পাশাপাশি, যে সব আন্তর্জাতিক বাজার পণ্য কেনাবেচার মূল কেন্দ্র, জোর দেওয়া হচ্ছে সেগুলির উপরেও। সিঙ্গাপুর, হংকং-এর মতো দেশ এই তালিকায় রয়েছে। বোর্ডের মতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পণ্য লেনদেনের ক্ষেত্রে ওই দুই দেশের গুরুত্ব অপরিসীম। যে জন্য ইতিমধ্যেই ওই সব দেশে গিয়েছে প্রতিনিধিদল। |