সদ্যজাত শিশু বদলের অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠল বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। রবিবার সকাল থেকে ওই প্রসূতির আত্মীয় ও অন্যান্য রোগীর আত্মীয়েরা দফায় দফায় হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান। পরস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিকেলে পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, অভিযোগটি তদন্ত করে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।
ওই প্রসূতির নাম মামণি কোনার। ওন্দার আসনাশোল গ্রামে তাঁর বাড়ি। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে মামণিকে রবিবার সকাল প্রায় ৬টায় বাঁকুড়া মেডিক্যালের স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তাঁর শ্বশুর স্বপন কোনারের অভিযোগ, “ভর্তি করার প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, মামণি’র ছেলে হয়েছে। এর আধ ঘণ্টা পরে একটি সদ্যজাত প্রতিবন্ধী ছেলেকে মামণির সন্তান বলে দেখান হয়।” |
তাঁর প্রশ্ন, “মামণির জন্ম দেওয়া ছেলেটি যদি প্রতিবন্ধী হয়, তাহলে জন্মের পরেই তা জানানো হল না কেন?”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির দু’টি হাতে আঙুল নেই, দু’টি পা গোড়ালি পর্যন্ত। ঠোঁট কাটা, লম্বাটে মাথা। মামণির স্বামী অরূপের অভিযোগ, “মামণির সন্তানকে বদলে দিয়ে অন্যের প্রতিবন্ধী সন্তানকে জোর করে আমাদের দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই কারসাজি করে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।” এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে মামণির আত্মীয়দের সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি থাকা অন্য রোগীর আত্মীয়েরা প্রসূতি বিভাগের সামনে বিক্ষোভ দেখান। দিনভর বিক্ষোভ চলে। মামণিদেবীর দাবি, “প্রথম সন্তানের জন্ম দিলাম। কিন্তু, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার সন্তানকে বদলে দিয়ে অন্যের সন্তান দিয়েছে। এই প্রতিবন্ধী সন্তানকে নেব না। আমার সত্যিকারের সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে হবে।”
পরে, অরূপবাবু হাসপাতালের ডেপুটি সুপার নিমাইচাঁদ দেবনাথের কাছে লিখিত অভিযোগ করে জানান, তাঁদের সন্তান বদলে দিয়ে একটি প্রতিবন্ধী ছেলেকে দেওয়া হচ্ছে। ডেপুটি সুপার বলেন, “অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |