|
|
|
|
নিজেদের পরিবর্তন চাই, দলে-ক্লাসে বার্তা দিলেন বিমান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতির ‘গুণগত পরিবর্তন’ হয়েছে। সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে নিজেদেরই ‘পরিবর্তন’ করতে হবে। দলের অন্দরে ফের এই বার্তাই স্পষ্ট করে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। বুঝিয়ে দিলেন, এই ‘পরিবর্তনে’র তালিকা থেকে কোনও স্তরের নেতাই বাদ পড়বেন না। তিনি নিজেও না।
রাজারহাটে দলের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের শিক্ষণ শিবিরে রবিবার বক্তা ছিলেন বিমানবাবু। সেখানে তিনি বলেন, রাজ্যের ‘ক্যানভাস’ বদলে গিয়েছে। পরিস্থিতির ‘গুণগত পরিবর্তন’ হয়েছে। সেইমতোই ছাত্রদের কাজের অভিমুখ বদলাতে হবে। মতাদর্শগত শিক্ষাকে কোনও ভাবেই কমজোরি হতে দেওয়া যাবে না। নিরন্তর প্রশিক্ষণ এবং মতাদর্শগত চর্চার মধ্যে দিয়ে নিজেদের আরও ‘ধারালো’ করে তুলতে হবে। একই সঙ্গে প্রাক্তন ছাত্র-নেতা বিমানবাবুর আশা, এখন যারা সিপিএমের ছাত্র বা অন্যান্য গণ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে আসবেন, তাঁরা এটা জেনেই আসবেন যে, দল আর ক্ষমতায় নেই। সে ক্ষেত্রে দলের মতাদর্শকে গ্রহণ করেই তাঁরা আসবেন। সেই হিসাবে তাঁদের মতাদর্শগত ভিত্তি মজবুত করতে বা অভিমুখ ঠিক রাখতে সুবিধাই হবে।
পরে বিকালে কলকাতায় সিপিএমের রাজ্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত দলীয় সদস্যদের এক সাধারণ সভাতেও বিমানবাবু পরিস্থিতির পরিবর্তনের কথা ব্যাখ্যা করেন। দলের সাম্প্রতিক দু’টি পার্টি চিঠির বক্তব্যের সুরেই রাজ্য সম্পাদক ব্যাখ্যা করেন, তাঁদের প্রাপ্ত ভোটের হার যে কমে আসছে, তা নিয়ে তাঁরা সময়মতো ‘সতর্ক’ হননি। গত ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২৩৫টি আসন পাওয়াই যে ‘কাল’ হয়েছিল, কার্যত তা-ই মেনে নেন বিমানবাবু। কারণ তার ফলে, ভোটপ্রাপ্তির হার হ্রাস পাওয়া নিয়ে আর আন্তরিক ভাবে চিন্তাভাবনা করা হয়নি। ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পরে রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক ভাবে যে ত্রুটি মেরামতের লক্ষ্য সামনে রাখা হয়েছিল, তা-ও পূরণ হয়নি। এখন রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর পরে মানুষের কাছে গিয়েই যে তাঁদের কথা শুনতে হবে এবং নিজেদের সংশোধিত হতে হবে, সেই কথাই ব্যাখ্যা করেন বিমানবাবু।
ছাত্র সংগঠনের প্রতি বিমানবাবুর পরামর্শ, বীরহোড়, টোটোর মতো আদিবাসী-সহ প্রান্তিক মানুষের শিক্ষার প্রসারে বামফ্রন্ট সরকার যে কাজ করেছিল, তা যেন ছাত্র-কর্মীদের ‘চেতনা’য় থাকে। যাতে তাঁরা প্রয়োজনমতো সেই তথ্য তুলে ধরতে পারেন। পাশাপাশি, সারা বিশ্বের দৃষ্টান্ত দিয়ে বিমানবাবু বুঝিয়েছেন, সমাজ এবং রাজনীতির পরিবর্তনের লড়াইয়ে ছাত্রদের ভূমিকা সব সময়েই উল্লেখযোগ্য থাকে। সে যেমন গত শতাব্দীতে ‘মে ফোর্থ মুভমেন্ট’-এ (ভার্সেই চুক্তির পরে ১৯১৯ সালের ৪ মে বেজিংয়ে ছাত্র বিক্ষোভ থেকে যে সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সূচনা) ছিল, তেমনই এখন গ্রিসের আন্দোলনে আছে। এখানেও প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধের আন্দোলনে ছাত্রদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান বিমানবাবু। প্রসঙ্গত, রাজারহাটে এসএফআইয়ের দু’দিনের শিক্ষণ শিবিরে শনিবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এ দিন বিমানবাবু ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত ‘ক্লাস’ নিয়েছেন। |
|
|
|
|
|