|
|
|
|
নিয়ম শিথিল করে রাজ্যের সড়ক উন্নয়নে অর্থ জয়রামের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
গ্রামীণ এলাকায় সড়ক নির্মাণ ও পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে রাজ্যকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল কেন্দ্র। এমনকী কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়মকানুনের বিধিনিষেধও শিথিল করা হয়েছে এ জন্য।
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা (পিএমজিএসওয়াই)-র আওতায় পশ্চিমবঙ্গের ১২৬০.৯০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে নীতিগত ভাবে সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। ২৪৫টি রাস্তায় ওই কাজের জন্য ৬৩৫.৪১ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে মন্ত্রক। গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ চিঠি লিখে মন্ত্রকের নীতিগত সম্মতির বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছেন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মাওবাদী অধ্যুষিত পশ্চিম মেদিনীপুরে সড়ক ব্যবস্থা উন্নতি করতে যে একাধিক প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সাহায্য চাওয়া হয়েছে, সেগুলির বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় গ্রামীণ পানীয় জল প্রকল্পেও কার্যত নিয়মের বাইরে গিয়ে রাজ্যের জন্য অর্থ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জয়রাম।
রাজ্যের সড়ক নির্মাণের হাল খতিয়ে দেখতে গত ১৬ অগস্ট কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব বি কে সিংহের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি বৈঠকে বসে। রাজ্যের পক্ষে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল রুরাল রোডস ডেভলপমেন্ট এজেন্সি-র কর্তা এন কে দাস এবং পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার এ কে দত্ত। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ২৬৮৩টি প্রকল্পের মধ্যে ১৮৭৭টির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি প্রায় ৩০ শতাংশের কাজ এখনও চলেছে। বকেয়া কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন মন্ত্রকের কর্তারা।
মন্ত্রকের পক্ষ থেকে রাজ্যের জন্য দ্রুত অর্থ মঞ্জুর করার প্রতিশ্রুতি দিলেও সমস্যা দেখা গিয়েছে অন্যত্র। পিএমজিএসওয়াই-এর আওতায় রাজ্য সরকার বিধানসভায় পূর্ণাঙ্গ বাজেট পাশ না করানোয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের অনুরোধ সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক বাকি টাকা দিতে পারছে না। রাজ্যকে এ কথা জানানোও হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যে সড়ক নির্মাণের গতি যে আশানরূপ নয়, সেই অভিযোগও করেছেন মন্ত্রকের কর্তারা। এ ছাড়া রাজ্য সরকারের পক্ষ যে থেকে চূড়ান্ত রিপোর্ট মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হচ্ছে এবং ‘ইনফরমেশন শিট’-এ যে তথ্য দেওয়া হয়েছে দু’টির মধ্যে বিস্তর গরমিল রয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রক। অবিলম্বে ওই ত্রুটি শোধরাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারকে। এ ছাড়া বাম আমলে ২০০৮-০৯ ও ২০০৯-০১০ সালের যে আর্থিক হিসাব এনআরআরডিএ-র কাছে পাঠানো হয়েছিল, তাতেও গরমিল পেয়েছে মন্ত্রক। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে। সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে যে ৯৫টি ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ রাজ্য সরকার এখনও এনআরআরডিএ-কে পাঠায়নি, তা-ও অবিলম্বে পাঠাতে বলা হয়েছে। বাম আমলে ২০০৮-০৯ ও ২০০৯-১০ (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) টাকা খরচের শংসাপত্র না পাওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের জাতীয় গ্রামীণ পানীয় জল প্রকল্পেও অর্থ মঞ্জুর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। মমতাকে লেখা আর একটি চিঠিতে জয়রাম জানান, ওই প্রকল্পের শংসাপত্র ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজের পাঠিয়ে দেওয়ার সময়সীমা থাকলেও তা এখনও আসেনি। ফলে জাতীয় গ্রামীণ পানীয় জল প্রকল্পে রাজ্যকে দিতে পেরেছে কেন্দ্র। প্রথম কিস্তির বাকি টাকা খুব শীঘ্রই রাজ্য পাবে বলে মমতাকে আশ্বস্ত করেছেন জয়রাম। তবে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে যেন মন্ত্রকের কাছে বকেয়া সমস্ত শংসাপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়। |
|
|
|
|
|