লিওনেল মেসি এবং জেভিয়ার মাসচেরানোর জন্য সংগঠকদের কাছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা চাইল আর্জেন্তিনার টিম ম্যানেজমেন্ট। শুধু তাই নয়, বদলে ফেলা হল ফুটবল রাজপুত্রের শহরে আসার সূচিও। মঙ্গলবার নয়, বুধবার গভীর রাতে কলকাতায় আসছেন দুই ফুটবলার। পরিস্থিতি যা তাতে কলকাতার ইতিহাসের অন্যতম মেগা ইভেন্ট শুরুর কার্যত এক দিন আগে আসছেন বার্সেলোনার দুই তারকা।
মোট সাত দফায় কলকাতায় আসছে আর্জেন্তিনা। কোচ আলেসান্দ্রো সাবেইয়া-সহ ১৬ জনের দ্বিতীয় দলটি আসবে আজ সকালে। এক জন বাদে সবাই কর্তা। মেসির দলের ম্যানেজার পেরনাস এ দিন পাঁচ জনের যে দলটি নিয়ে কলকাতায় এসেছেন তাতে টেকনিক্যাল কমিটির লোকজনের সঙ্গে এসেছেন এক জন শেফলেকো ভানি। এক জন টেকনিক্যাল ফিজিও—পাওলো ব্রাঙ্কো। রাত জেগে এ দিন ভোরে শহরে পৌঁছলেও দুপুর থেকেই কাজ শুরু করে দেন দু’জনেই। সন্ধ্যায় যুবভারতী দেখতে যাওয়ার আগে হায়াত রিজেন্সির হোটেল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে তিন দফা আলোচনা করেন তাঁরা। সব কিছু নিখুঁত করতে।
প্রথমে হোটেলের রান্নাঘরে মেসি-আগুয়েরোদের খাবার নিয়ে হায়াতের চিফ শেফ বিক্রম গানপুলের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিশাল চেহারার লেকো। কী খাবে আর্জেন্তিনা তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল হোটেল কর্তৃপক্ষকে। সেই মতো মেনু ধরে ধরে আলোচনা হয়। বিক্রম জানিয়ে দেন, খাদ্য তালিকা যতটা সম্ভব অবিকৃত রেখে (আর্জেন্তাইন খাবারের গন্ধ) তৈরি করে দেবেন।
|
সব কিছু ঠিকঠাক। রান্নাঘরে মেসিদের চিফ শেফ দিয়াগো
এ কথাই কি বলছেন হোটেলের শেফদের। ছবি: উৎপল সরকার |
এর পর বাজারে নামেন পাওলো ব্রাঙ্কো। ইন্ডোর প্র্যাক্টিসের জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষের জন্য একটি বড় ঘর চান তিনি। ঠিক হয়, হোটেলে ঢুকেই ডান দিকের যে বলরুম সাধারণত বিভিন্ন বড় পার্টির জন্য ব্যবহার করা হয়, সেটি সামনের ক’দিন মেসিদের ফিজিক্যাল ট্রেনিং-এর জন্য ব্যবহার করা হবে। পা দিয়ে ঘর মেপে পাওলো জানিয়ে দেন সমস্যা হবে না। যে-হেতু কোচ হওয়ার পর এই প্রথম সাবেইয়া পুরো দলকে হাতে পাবেন সে জন্য যুবভারতীর পাশাপাশি মেসিদের ইন্ডোর ট্রেনিংয়ের উপর জোর দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। দোভাষী মারফৎ পাওলো যা বোঝালেন তাতে কলকাতায় থাকার সময় মেসিদের বেশির ভাগ সময় কাটবে হোটেলের ইন্ডোর রুমে এবং সুইমিং পুলে। দুটির বদলে তিনটি মাসাজ রুমও চাওয়া হয়েছে।
পুরো আর্জেন্তিনা টিম ম্যানেজমেন্ট কলকাতার ম্যাচ খেলেই পরের দিন বাংলাদেশ যেতে চাইছে না। আরও দু’দিন থাকার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই সে দেশের ফুটবল ফেডারেশন থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে থাকার পুরো ব্যাপারটিই নির্ভর করছে উদ্যোক্তা সি এম জি-র উপর। এ দিন অবশ্য আলোচনায় ঠিক হয় প্রতিটি বিলাসবহুল ডাবল বেড রুম আপাতত সিঙ্গল রুম করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ মেসি একাই একটি ঘরে থাকবেন। মাসচেরানো, আগুয়েরোদেরও প্রত্যেকের আলাদা ঘর। হোটেলের তিন তলায় কোন ঘরে কে থাকবেন তা-ও বলে দেওয়া হয়। তবে হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়, নিরাপত্তার স্বার্থে তা যেন কোনওভাবেই বাইরে না বেরোয়।
আলোচনার পর কফি শপে কিছুক্ষণ কাটিয়েই যুবভারতী দেখতে যায় টেকনিক্যাল কমিটির পুরো দলটি। প্রায় পঁচানব্বই ভাগ সম্পূর্ণ যুবভারতী দেখে অবশ্য প্রচণ্ড খুশি পেরনাস। আলোকিত স্টেডিয়ামের মাপ ফিতে দিয়ে মেপে দেখেন তাঁরা। ঘুরে দেখেন ড্রেসিংরুম, মিডিয়া রুম। জানতে চান কত বছর বয়স স্টেডিয়ামের? পি ডব্লিউ ডি-র এক অফিসারের পিঠ চাপড়ে দিয়ে আর্জেন্তিনার সহকারি কোচ কামিনোর সঙ্গে আগে ঘুরে যাওয়া পেরনাস বলেন, “আমি ভাবিনি এত দ্রুত কাজ শেষ হয়ে যাবে।” |