সেনা ছাউনির জলাধারে পড়ে যাওয়া একটি হস্তিশাবককে প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় উদ্ধার করে বুনো হাতির পালে ফিরিয়ে দিলেন বনকর্মীরা। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে শিলিগুড়ির অদূরে বেংডুবিতে সামরিক ছাউনি এলাকায়। ৩৫টি বুনো হাতির
পালের সঙ্গে ভোর রাতে জঙ্গলে ফেরার সময়ে ওই জলাধারে পড়ে যায় বছর চারেকের ওই পুরুষ শাবকটি। ছয় ফুট উঁচু কংক্রিটের জলাধার
থেকে নিজে থেকে বার হতে
না-পেরে চিৎকার করছিল। বাগডোগরা এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের কর্মীরা গিয়ে দেখেন বুনো হাতির পালও জলাধার ঘিরে ধরে সমানে চিৎকার করে যাচ্ছেন। বাগডোগরার রেঞ্জ অফিসার বিজন তালুকদার, সুকনা এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের
রেঞ্জ অফিসার কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায় দলবল নিয়ে ছুটে যান। সামরিক বাহিনীর কর্মীরাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
পে-লোডার দিয়ে জলাধারের একপাশ ভেঙে শাবকটিকে জলাধার থেকে বার করা হয়। জলাধার থেকে বেরিয়েই শাবকটি দফায় দফায় হামলা করে গাড়িটির উপরেই। |
শেষ পর্যন্ত শূন্যে ৪ রাউন্ড গুলি চালিয়ে, পটকা ফাটিয়ে শাবকচিকে জঙ্গলমুখো করা হয়। কার্শিয়াং বন বিভাগের ডিএফও ওয়াই টি এডেন বলেন, “শাবকটি দলের সঙ্গে ভিড়ে যাওয়ায় আমরা খুশি। না-হলে সমস্যা হত।” এর আগে৮ অগস্ট ওই এলাকাতেই একটি জলাধারে একটি স্ত্রী হাতি ও সেটির শাবক পড়ে যায়। ৬ ঘণ্টার চেষ্টায় বনকর্মীরা ১৪ ফুট গভীর কংক্রিটের জলাধারের একপ্রান্ত ভেঙে শাবক ও স্ত্রী হাতিটিকে জলাধার থেকে তুলে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়। তার আগে পাম্পের সাহায্যে জলাধার থেকে জল কমানো হয় যাতে সে গুলির প্রাণ সংশয় না-হয়। জলাধার থেকে ওঠার পরে সেদিনও হাতিটি যন্ত্রের উপরে হামলা চালায়। শূন্যে গুলি চালানোর পরে সেটি জঙ্গলে পালায়। তবে এ দিন শাবকটির তেজ দেখে অবাক হয়েছেন বনকর্মীরা।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেংডুবির জঙ্গলে প্রায় ৬০টি বুনো হাতি ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। তার মধ্যে শাবক রয়েছে ৮-১০টি। অন্য দিকে, সামরিক ছাউনি এলাকায় এই ধরনের ৩০টির বেশি জলাধার রয়েছে। বুনো হাতির পাল এখানে জল খেতে আসার পরে ঠেলাঠেলির জেরে জলে
পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। বন দফতরের তরফে ওই সমস্ত জলাধার লোহার জাল দিয়ে ঘেরার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ দিনের ঘটনাটি ঘটে অবশ্য সামরিক ছাউনির বাইরের দিকে তুলনায় অগভীর একটি জলাধারে। এই জলাধারে মাত্র আড়াই ফুট জল ছিল। তাতে শাবকটির জীবন সংশয় হয়নি বলে মনে করছেন বনকর্তারা। পাশাপাশি, বুনো হাতির পাল যদি ভোর রাতে জলাধার ঘিরে সমানে চিৎকার না-করত তাহলে বনকর্মীদের টের পেতে অনেক সময় লাগত বলেও তাঁরা মনে করছেন। |