মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ
নিখোঁজ সুপ্রতীকের সন্ধানে ডুবুরি নামল
সুপ্রতীকের সন্ধানে গঙ্গায় ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি শুরু করল পুলিশ।
গত ১৬ই আগস্ট উত্তরপাড়ার দোলতলা ঘাটে এক বন্ধুর সঙ্গে স্নান করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সুপ্রতীক ঘোষ। স্নান করতে তার সঙ্গেই গিয়েছিল এক বন্ধু। সে-ই জানায়, গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে সুপ্রতীক।
এ দিকে, এখনও পর্যন্ত ছেলের খবরাখবর না পেয়ে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন সুপ্রতীকের মা সুলগ্নাদেবী। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেন তিনি। ছেলে ‘ষঢ়যন্ত্রের শিকার’ হয়ে থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন। উদ্বিগ্ন মায়ের কথা শুনে মহাকরণের অলিন্দে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী তৎক্ষণাৎ এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) সুরজিৎ করপুরকায়স্থকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। সুলগ্নাদেবীকে তিনি সুরজিৎবাবুর সঙ্গে দেখা করতেও বলেন। সুরজিৎবাবু হুগলির পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরীকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন।
তন্ময়বাবু আবার তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অমিতাভ বর্মার উপর। রবিবার দুপুর থেকে গঙ্গায় তল্লাশি শুরু হয়। উত্তরপাড়ার দোলতলা ঘাট থেকে শুরু করে বেলুড় পর্যন্ত তল্লাশি চলে। সুপ্রতীকের বাড়ির লোকজনও ছিলেন সঙ্গে। অমিতাভবাবু বলেন, “কলকাতা পুলিশের ৪ জন ডুবুরি, সিভিল ডিফেন্সের ৮ জন এবং চারটি স্পিডবোট গঙ্গায় নামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। তা ছাড়াও, আমাদের হুগলি পুলিশের একটা দল তল্লাশিতে সামিল হয়। বেশ কয়েক ঘণ্টা তল্লাশি চলে। কিন্তু নিখোঁজ সুপ্রতীকের দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে আমরা ঘটনার দুই প্রত্যক্ষদর্শীকে পেয়েছি।” গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্তা। এ দিন সুপ্রতীকের পরিবারের তরফে উত্তরপাড়া থানায় নতুন করে আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সুপ্রতীকের সেই সঙ্গী ও তার পরিবারকে ইতিমধ্যেই একাধিকবার জেরা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ। তাদের বক্তব্য, ১৬ অগস্ট অভিযোগ পেয়েই দফায় দফায় তল্লাশি হয়েছিল গঙ্গায়। ১৯ অগস্ট বিভিন্ন মহলকে এ ব্যাপারে সতর্কও করে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনাটিকে ‘দুঃখজনক’ বলে জানানো হয়েছে জেলা পুলিশের তরফে। উদ্ধারের চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি বলেও তাদের দাবি।
প্রত্যক্ষদর্শীদেরই এক জন বছর ষোলোর অভ্র মুখোপাধ্যায়। সে এ দিন বলে, “আমি ও আমার এক বন্ধু গঙ্গায় সে দিন স্নান করছিলাম। হঠাৎই দেখি, দু’জন জলে হাবুডুবু খাচ্ছে। এক জন পাড়ের কাছে ছিল। এক জন বেশ খানিকটা দূরে চলে গিয়েছিল। আমরা আগে দূরের ছেলেটিকেই উদ্ধার করতে জলে ঝাঁপাই। তাকে টেনে আনি জল থেকে। কিন্তু পাড়ের কাছে থাকা ছেলেটি তত ক্ষণে ডুবে গিয়েছে। আমরা ওকে খুঁজে পাইনি।” অভ্রর আক্ষেপ, এক জনকে বাঁচাতে পারলেও আর এক জন চোখের সামনে তলিয়ে গেল।
সুলগ্নাদেবী মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, ঘটনার পরে তিনি উত্তরপাড়ায় থানায় এফআইআর করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু আইসি প্রথমে তা নিতেই চাননি। পরে এফআইআর নেওয়া হলেও সুপ্রতীকের সেই বন্ধুর নাম লিখতে বারণ করে পুলিশ। স্থানীয় পুলিশ এটাকে ‘নিছকই দুর্ঘটনা’ বলে দেখছে বলে অভিযোগও করেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। ঘাটেই ছেলের মানিব্যাগ, প্যান্ট, মোবাইল পড়ে ছিল বলে জানান সুলগ্নাদেবী।
তিনি এ দিন বলেন, “আমি ছেলেকে ফেরত চাই। এখনও তো কিছুই হল না।” মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও তিনি কিছু বলতে চাননি। শুধু বলেন, “সন্তোষ প্রকাশ করা বা না করার কোনও প্রশ্নই নেই এই মুহূর্তে। আগে ছেলে ফিরুক।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.