উপকরণ শুধু সুপারি, নারকেল আর খেজুর গাছের অংশবিশেষ। শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় এগুলির সাহায্যেই পুজোর মণ্ডপে ফুটে উঠবে শিবপুরাণের নানা মুহূর্ত।
বাড়ির সামনেই মণ্ডপ তৈরির কাজ করছেন কালনার শিল্পী তপন গাইন। সঙ্গে রয়েছেন আরও পাঁচ শিল্পী। মাস চারেক আগে কলকাতার পূর্বরাজাপুর বাস্তুতলা এলাকার একটি ক্লাব তাঁকে মণ্ডপ সজ্জার দায়িত্ব দেয়। কয়েকটি পুরনো বই পড়ে তিনি বেছে নেন শিবপুরাণের থিমটি। গোটা মণ্ডপ সাজাতে প্রয়োজন ২৪টি মডেল। শিল্পীদের দাবি, মডেল তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। আজসোমবারই সেগুলি মণ্ডপে নিয়ে যাওয়া হবে। |
কাঠ দিয়ে নানা মডেল তৈরি করে ইতিমধ্যেই সুনাম পেয়েছেন কালনার এই শিল্পী। গত বছরও কলকাতার একটি মণ্ডপে একচালার প্রতিমা তৈরি করে প্রশংসাও পেয়েছিলেন তপনবাবু। তবে এ বার আর কাঠের কাজ নয়, এ বার উপকরণ সুপারি, নারকেল ও খেজুর গাছের বিভিন্ন অংশ। সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে কাজ কিছুটা ধীরে চললেও এখন পুরোদমে কাজ চলছে। কাঠের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি হয়েছে মডেলগুলি। গয়না, চুল-সহ বাকি অংশে বাকি অংশে ব্যবহার করা হয়েছে গাছের শুকনো ছাল। দেড় থেকে সাত ফুট উচ্চতার মডেলগুলির সাহায্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে শিবরাত্রির ব্রত, জ্ঞান সংহতি, মন্দার পর্বতে গুহার বাইরে শিব ও দেবগণের সঙ্গে অন্ধ দৈত্যের যুদ্ধ, কৈলাসে হর-পার্বতীর নিকট কার্তিকের ক্রোধ প্রকাশ-সহ শিবপুরাণের নানা মুহূর্ত। শুধু মডেলই নয়, নারকেলের খোল দিয়ে তপনবাবু তৈরি করেছেন টেবিল ল্যাম্প, ঝাড়বাতি-সহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক জিনিসও।
তপনবাবুর কথায়, “এখনও পর্যন্ত মন যা চেয়েছে, সেই ভাবেই মডেলগুলি তৈরি করেছি। আশা করি, পুরো বিষয়টি দর্শকদেরও ভাল লাগবে।” তাঁর সঙ্গেই কাজ করছিলেন সন্তু মল্লিক, খোকন মণ্ডল, সুভাষ মণ্ডলেরা।
তাঁরা বললেন, “যে যে উপকরণ দিয়ে মডেলগুলি তৈরি করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত। মানুষ তার কদর করলে ভবিষ্যতে আরও ভাল কাজ করা চেষ্টা থাকবে।” |