|
|
|
|
রেশন দোকানে হানা দিয়ে অসঙ্গতি পেলেন বিডিও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • উস্তি |
বেশ কিছু দিন ধরেই এলাকার রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলছিলেন মগরাহাট-১ ব্লকের গ্রাহকেরা। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শনিবার বিভিন্ন রেশন দোকানে হানা দিয়ে বেশ কিছু অসঙ্গতি খুঁজে পেলেন বিডিও অমিতাভ সরকার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ব্লকের দুই খাদ্য পরিদর্শক।
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রেশন দোকান চালাতে হলে তাদের দেওয়া লাইসেন্স ছাড়াও ডিলারের নিজস্ব চাল-গম-তেল রাখার গুদাম থাকা বাধ্যতামূলক। দোকানের সামনে গ্রাহকদের জন্য থাকবে ডিসপ্লে বোর্ড। বোর্ডে লেখা থাকবে কোন দিন থেকে কত চাল-গম, চিনি বা কেরোসিন বণ্টন করা হবে, মাথাপিছু তার পরিমাণ কত। প্রত্যেক গ্রাহককে ক্যাশমেমো দিতে হবে এবং মজুত কী থাকছে সে সম্পর্কেও জানাতে হবে।
শনিবার সারাদিন বিডিও-র নেতৃত্বে ওই দলটি ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামের রেশন দোকানে যায়। বেশির ভাগ জায়গায় রেশন দোকান বন্ধ ছিল। যদিও তা থাকার কথা নয়। কোনও ডিলারের পরিবারের লোকজন জানালেন, ডিলার চিকিৎসা করাতে গিয়েছেন। কোথাও আবার ওই দলটিকে শুনতে হল, ডিলার চাবি নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। তাই দোকান খুলে মালপত্র বা নথিপত্র দেখানো যাবে না।
ঘোলা-নওয়াপাড়া বাজারের একটি রেশন দোকান থেকে সুনীল সরকার নামে এক গ্রাহককে চাল-গম নিয়ে বেরোতে দেখে বিডিও জানতে চান, কত চাল পেয়েছেন। সুনীলবাবু জানান, এক কেজি। কিন্তু তাঁর পাওয়ার কথা দেড় কেজি। দোকানে ডিলার ছিলেন না। ম্যানেজারকে বিডিও বাকি চালের কথা বলতেই আরও ৫০০ গ্রাম চাল পান সুনীলবাবু। বিডিও বেরোতেই তাঁর কাছে রেশনের চাল-গম ঠিকমতো পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন গ্রাহকেরা।
দুপুরে ইয়ারপুর গ্রামে ঢুকে একটি রেশন দোকান বন্ধ দেখেন বিডিও। তবে তিনি ডিলার ভুবন হালদারকে পেয়ে যান। ভুবনবাবু বিডিওকে জানান, সকালে মাল দেওয়া হয়েছে। বিকালে আবার মাল দেওয়া হবে। কিন্তু নথিপত্রে মজুত এবং বন্টনে নানা গরমিল পান বিডিও। ভুবনবাবু তাঁকে জানান, কর্মী কম থাকায় এবং গ্রাহক বেশি হওয়ায় খাতাপত্র সব সময় লেখা যায় না। হরিহরপুর গ্রামে মহিলা রেশন ডিলারের দেখা না পেলেও তাঁর স্বামীর কাছে গিয়ে বিডিও রেশনের নথিপত্র দেখতে চান। একই পরিস্থিতি হয়। একই কথা শুনতে হয় বিডিওকে। ওই ডিলারদের ব্লক অফিসে আসার নির্দেশ দেন বিডিও। গোটা অভিযানে তাঁকে বারেবারে শুনতে হয় মালপত্র না পাওয়ার অভিযোগ।
বিডিও বলেন, “রেশন ডিলারদের সরকারি নিয়ম মেনে গ্রাহকদের সরকারি পরিষেবা দেওয়ার জন্য সভা ডেকে বলে দেওয়া হয়েছিল। তবু অনেকেই তা মানছেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।” খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “ওই এলাকায় ডিলার এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের মধ্যে অশুভ আঁতাত গড়ে উঠেছে। তা ভাঙা হবে। খাদ্য দফতরের ওই এলাকার আধিকারিকদের বলা হয়েছে, দুর্নীতিগ্রস্ত ডিলারদের লাইসেন্স খারিজ করতে।”অভিযোগ মানতে চাননি ডায়মন্ড হারবার মহকুমা এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈফুদ্দিন লস্কর। তিনি বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনেই সমস্ত রেশন দোকান চলছে। কেউ অভিযোগ করলে সেটা ঠিক নয়।” |
|
|
|
|
|