|
|
|
|
কমিটির সভায় নিয়ে যেতে মার, ৬ জনকে পাল্টা পেটাল জনতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
গ্রামের কিছু বাসিন্দাকে ‘ভয় দেখিয়ে, মারধর করে’ সভায় নিয়ে গিয়েছে জনগণের কমিটির লোকজন। এমনই অভিযোগে কমিটির ৬ জনকে ‘আটক’ করে রীতিমতো গণধোলাই দিলেন এলাকাবাসী। পরে ওই ৬ জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ধৃতদের মধ্যে এক জন আবার স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতার ভাই। ওই নেতার বাড়িতেও ‘ভাঙচুর’ চালায় ক্ষুব্ধ জনতা।
শনিবার রাতে ঝাড়গ্রামের চুবকা অঞ্চলের ওই ঘটনায় ধৃতদের চিকিৎসা চলছে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে। ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সুপার গৌরব শর্মা রবিবার বলেন, “ওই ৬ জনের বিরুদ্ধে হামলা, বাড়ি ভাঙচুর, মারধর, শ্লীলতাহানি, খুনের চেষ্টা ও বেআইনি অস্ত্র মজুত রাখার ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই তাদের আদালতে হাজির করানো হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে এক দল সশস্ত্র লোক চুবকা, জগন্নাথপুর ও বেনেডি গ্রামে চড়াও হয়ে গ্রামবাসীদের জোর করে জনগণের কমিটির সভায় নিয়ে যায়। অনিচ্ছুক গ্রামবাসীদের মারধর, মহিলাদের শ্লীলতাহানি ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। তার পরে চুবকা প্রাথমিক স্কুলের সামনে শুরু হয় সভা। সেখানে ‘ফতোয়া’ জারি করা হয়, অন্য রাজনৈতিক দল নয়, শুধু কমিটিকেই সমর্থন করতে হবে। প্রত্যেক গ্রামবাসীকে কমিটির তহবিলে চাল ও নগদ টাকা দেওয়ার ‘নির্দেশ’ও দেওয়া হয়। |
|
ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে ধৃত প্রশান্ত সাঁউত। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
সেই সময়ে কিলোমিটার দেড়েক দূরে পাকুড়িয়াপাল গ্রামে নৈশ-ফুটবল প্রতিযোগিতা চলছিল। সেখানে তখন এলাকার কয়েকশো মানুষের ভিড়। খেলা চলাকালীন ‘জোর করে’ সভায় নিয়ে যাওয়ার খবর পৌঁছয় মাঠে। জনতা দল বেঁধে সভাস্থলে যায়। তাদের তাড়া খেয়ে সভার উদ্যোক্তারা পালানোর চেষ্টা করেন। কয়েকজন পালালেও স্থানীয় বাসিন্দারা আটক করেন ৬ জনকে। এ দিন ভোরে ঝাড়গ্রাম থানার আইসি প্রবীরকুমার মুহুরির নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী গিয়ে ওই ৬ জনকে গ্রেফতার করে।
ধৃতেরা চুবকা ও সর্ডিহা অঞ্চলের বাসিন্দা। তাঁদের অন্যতম চুবকার চিথলবনি গ্রামের প্রশান্ত সাঁউত। প্রশান্তর দাদা জয়ন্ত সাঁউত এলাকার যুব তৃণমূল নেতা। এ দিন সকালে আশেপাশের গ্রামের হাজারখানেক বাসিন্দা জয়ন্তবাবুর বাড়িতে চড়াও হন বলে অভিযোগ। চলে ‘ভাঙচুর, লুঠপাট’। জয়ন্তবাবুর মোটরবাইক পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ‘ভাঙচুর’ চলে তাঁর মুরগি খামারেও। চিথলবনি গ্রামের আরও ১৫টি বাড়িতেও ‘ভাঙচুর’ চালানো হয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার রাতে যে দলটি চুবকায় গিয়ে গ্রামবাসীদের সভায় যেতে ‘বাধ্য’ করে, তার কয়েক জনকে ‘চিনতে পেরেই’ এ দিন পাল্টা হামলা করা হয়।
যদিও যুব তৃণমূল নেতা জয়ন্তবাবুর অভিযোগ, “শনিবার রাতে সিপিএমের লোকেরাই আমার ভাইকে জোর করে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। ওরাই পরিকল্পিত ভাবে আমার ভাই ও অন্যদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। সিপিএম-কমিটির বাহিনী আমাদের বাড়িও ভাঙচুর করেছে।” সিপিএমের মানিকপাড়া লোকাল কমিটির সম্পাদক শতদল মাহাতো অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “ওই এলাকায় এখন আমাদের প্রভাব নেই। দলীয় নেতা-কর্মীরা এলাকাছাড়া।” |
|
|
|
|
|