|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
অগ্রন্থিত কবেই গ্রন্থিত |
বইপোকা |
সাদা কাগজ কালো, করলে বুঝি ভাল! ছাপাখানার ভূতেরা ‘সমালোচক’টিকে নিশ্চয় মান্য করিয়াছেন। তাই অবনীন্দ্র রচনাবলী (প্রকাশ ভবন) নবম খণ্ডটির মুদ্রণকাণ্ডের মধ্যে মধ্যে অশরীরী অঙ্গুলিপ্রলেপে কালো কালো অক্ষরগুলি সকল মুছিয়া লইয়াছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত রচনাবলিটির মধ্যে ‘পূর্ণিমা-ব্রত’ প্রবন্ধটি পড়িতে পড়িতে শুক্লাভিসারের কথা যেই আসিল অমনি রসিক ভূতসকল পরবর্তী দুই পৃষ্ঠা সাদা করিয়া দিলেন। এমন কাণ্ড আরও দুই এক স্থলে ঘটিয়াছে। কিন্তু রসিকতা বাহ্য, এমন ঘটিবার অন্তরের কথাটি কী? অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে আমাদিগের চরম ঔদাসীন্য। নহিলে তাঁহার নয় খণ্ডের রচনাবলি সম্পূর্ণ প্রকাশিত হইতে প্রায় চারি দশক লাগিয়া যায়! রচনাবলির প্রথম খণ্ডটির প্রকাশ হইয়াছিল ১৯৭৩-এ, শেষটি প্রকাশিত হইয়াছে ২০১১-য়। এই খণ্ডে বাংলার ব্রত, সহজ চিত্রশিক্ষা, ভারতশিল্পের ষড়ঙ্গ এবং ভারতশিল্পে মূর্তি ব্যতীত কিছু ‘অগ্রন্থিত’ প্রবন্ধ আছে। কিন্তু সেখানেও বিস্তর গলদ। ‘রস ও রচনার ধারা’ প্রবন্ধটি মোটেও অগ্রন্থিত নহে, বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী (রূপা, দ্বিতীয় সংস্করণ) গ্রন্থে বহু পূর্বেই গ্রথিত হয়। আনন্দ পাবলিশার্স প্রকাশিত বাগীশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী-তেও প্রবন্ধটি বর্তমান। এই রচনাবলির সম্পাদক কে তাহা স্পষ্ট করিয়া কোথাও বলা না হইলেও অবনীন্দ্র রচনাবলী-র সম্পাদনায় আরও যত্নবান হওয়া উচিত ছিল। চিত্রমুদ্রণেও যত্ন লওয়া দরকার ছিল। কারণ অবনীন্দ্র-রচনাবলিতে চিত্র কেবল অলংকরণ নহে, রচনার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তবে বাংলার ব্রত এই রচনাবলিতে সবকটি ছবি-সমেত প্রকাশিত হইয়াছে, ইহা সুবিবেচনার পরিচয়। |
|
|
|
|
|