বহরমপুর শহরের ঐতিহ্যময় গ্রান্ট হল সম্প্রতি শতবর্ষ ছুঁল। এখান যেখানে ওই ভবন অবস্থিত, দেড়শো বছর আগে সেখানে ছিল মুর্শিদাবাদ নিজামত প্রাসাদের তত্ত্বাবধায়ক মেজর যোসেফ ম্যারিয়নের বাড়ি। ১৮৬৬ সালে বহরমপুর শহরের ১৩ জন বিশিষ্ট মানুষ জমি-সহ বাড়িটি ৩৮০০ টাকায় কিনে নেন।
এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন সাহিত্যিক গঙ্গাচরণ সরকার, জমিদার বিশ্বম্ভর সেন, পুলিন বিহারী সেন, বঙ্কিমচন্দ্র-ঘনিষ্ঠ রামদাস সেন ও জাতীয় নেতা বৈকুন্ঠনাথ সেন প্রমুখ। বাংলার তৎকালীন ছোটলাট স্যার জন পিটার গ্রান্টের নামানুসারে ম্যারিয়ন সাহেবের ডিম্বাকৃতি হলঘরটির নাম দিয়েছিলেন ‘গ্রান্ট হল’। ১৮৯৭ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯০৩ সলের ১ জানুয়ারি কাশিমবাজারের মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দী, বৈকুন্ঠনাথ সেন, রাধিকামোহন সেন নীলমনি ভট্টাচার্য প্রমুখের উদ্যোগে ভারতসম্রাট এডওয়ার্ডের নামানুসারে লালদিঘি অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় এডওয়ার্ড রিক্রিয়েশন ক্লাব। ওই বাড়িটি ছিল জমিদার শ্রীবনবিহারী সেন ওরফে হরিবাবুর। বাড়ি-সহ জমিটি লালগোলার মহারাজা যোগেন্দ্রনারায়ণ রায় কিনে নিয়ে ক্লাবকে শর্তসাপেক্ষে দান করেন। ১৯০৭ সালে ওই ক্লাবের কয়েকজন সদস্য বৈকুন্ঠনাথ সেন, শ্রীবনবিহারী সেন, মহেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, নীলমনি ভট্টাচার্যেরা গ্রান্ট হল পুর্ননিমাণের জন্য লালগোলার মহারাজার কাছে আবেদন করেন। আবেদন মেনে নিয়ে লালগোলার মহারাজা এডওয়ার্ড নামাঙ্কিত ক্লাব ভবনটি ফেরত নিয়ে ‘গ্রান্ট হল’-এর ভবন নির্মাণ শুরু করেন পুরনো জমিতেই। ১৯১১ সালের ২ অগস্ট প্রায় ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত বর্তমান গ্রান্ট হল ভবনটির দ্বারোদ্ঘাটন করেন ছোটলাট লর্ড ফ্রেশার উইলিয়াম ডিউক। উল্লেখ্য, ওই সময়ই তিনি পাশের কৃষ্ণনাথ কলেজ স্কুলেরও দ্বারোদ্ঘাটন করেন। ১৯৪৮ সালে লালগোলার মহারাজার স্মৃতিতে গ্রান্ট হলের নামকরণ করা হয় ‘যোগেন্দ্রনারায়ন মিলনী’। ম্যারিয়ন সাহেবের ডিম্বাকৃতি হলঘরের অনুকরণে বর্তমান ভবনেও রয়েছে ডিম্বাকৃতি হলঘর। উল্লেখ্য ১৯২৮ সালে ওই ভবনেই সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে বহরমপুর শহরের ‘যুব সংঘ’ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সম্বর্ধিত করা হয়। বহরমপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে পাশাপাশি অবস্থিত দু’টি ঐতিহ্যশালী ভবন কৃষ্ণনাথ কলেজ স্কুল ও গ্রান্ট হলের শতবর্ষপূর্তি নিঃসন্দেহে শহরবাসীর কাছে গৌরবজনক।
|
কৃষ্ণনগর শহরের তিন ইঞ্চি দুর্গাবাড়ির লাগোয়া মোমিন পার্কের এক কোনায় বছর খানেক আগে একটি জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে। ওই এলাকার মানুষের জলকষ্ট লাঘব করতে ওই জলাধার নির্মাণ করা হয়। অথচ কাজ শেষ হওয়ার পরও একটি বছর পার হয়ে গেলেও ওই জলপ্রকল্প চালু করা হয়নি। কৃষ্ণনগর পুরসভায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারা গিয়েছে যে, পুরকর্তাদের সময়ের অভাবে ওই জলপ্রকল্পের উদ্বোধন করা সম্ভব হচ্ছে না। তার ফলে গোটরোড, গোলাপট্টি, মানিকপাড়া, নগেন্দ্রনগরের প্রথম লেন, দ্বিতীয় লেন, তৃতীয় লেন, চতুর্থ লেন ও পঞ্চম লেন এবং রুদ্রনগর-সহ বিশাল এলাকার মানুষ জলের কষ্টে ভুগছেন। পুরকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ওই পত্র লেখা। |
সঞ্জিত প্রামাণিক, কৃষ্ণনগর |