|
|
|
|
|
|
|
আপনার সাহায্যে... |
|
ব্যস্ততাতেও মা হওয়া যায় |
শুধু সেলিব্রিটি কেন, কর্পোরেট লাইফেও মা হওয়ার অনুভূতি কে না চায়। কিন্তু কী ভাবে?
সুজাতা মুখোপাধ্যায়কে জানাচ্ছেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ বাসুদেব মুখোপাধ্যায়। |
প্র: প্রেগন্যান্সির ধ্যান-ধারণা বদলে দিচ্ছেন আজকের সেলিব্রিটিরা। বেশি বয়স, অতিব্যস্ত শিডিউলের ফাঁকে দিব্যি মা হতে চলে আসছেন !
উ: শুধু সেলিব্রিটি কেন, কর্পোরেট লাইফেও তো একই ব্যাপার। একটা টার্গেট শেষ করে বাচ্চা নিয়ে আবার চলে গেল অন্য টার্গেট পূরণ করতে।
প্র: এত চাপে কোনও ক্ষতি হয় না?
উ: কী আর ক্ষতি! একটু সাবধান হয়ে চললেই হল।
প্র: সাবধানের তালিকায় প্রথমেই তো বিশ্রাম ।
উ: খুব সমস্যা না থাকলে শুয়ে বসে বিশ্রাম নেওয়ার প্রশ্নই নেই । সময়ই বা কোথায়?
প্র: তাহলে?
উ: ফাস্ট লাইফে একটু রাশ টানা। সিগারেট আর লেটনাইট ছেড়ে দেওয়া এক-দেড় বছরের মতো। প্রথম তিন মাস আর অ্যাডভ্যান্স স্টেজে নাচটা বাদ। মদ খাওয়া কমানো। দিনে দু’পেগের বেশি একদম নয়।
প্র: ট্যুর?
উ: কমাতে না পারলে যেতে হবে। তবে হেকটিক শিডিউলে ওষুধ, খাওয়া আর ব্যায়ামের নিয়মে ছেদ না পড়ে।
প্র: ব্যায়াম!
উ: অবশ্যই। কিছু নিশ্বাসের ব্যায়াম আর সাড়ে তিন মাস পর থেকে ডাক্তারের পরামর্শমতো স্ট্রেচিং এবং কিছু ব্যায়াম করলে মা-বাচ্চা দু’জনেই যেমন সুস্থ থাকে, ডেলিভারিতেও সুবিধে হয়।
প্র: ডেলিভারি মানে তো সিজার। নর্মাল ডেলিভারি তো উঠেই গেছে।
উ: নর্মাল প্রেগন্যান্সি কমে গেলে নর্মাল ডেলিভারিও কমবে।
প্র: মানে?
উ: ৩০-৩৫ এর উপর বয়স, দিন-রাত ছুটে বেড়ানো, টেনশন তার উপর এই বয়সে অনেকেরই প্রেশার-সুগার থাইরয়েডের সমস্যা থাকে, জরায়ুতে টিউমার থাকে, হয়তো বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসা করে গর্ভসঞ্চার হয়েছে, এ সব ক্ষেত্রে রিস্ক নেব কেন?
প্র: তাহলে এদের নর্মাল ডেলিভারি হবে না?
উ: তা কেন? হতেই পারে। তবে সেক্ষেত্রে মায়ের প্রসব যন্ত্রণার সময় এসে গেলে পেটে সিটিজি মেশিন লাগিয়ে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে বাচ্চার মনিটরিং করে যেতে হবে। সব ঠিকঠাক চললে হবে নর্মাল ডেলিভারি। তবে সমস্যা হল, সব সেন্টারে সিটিজি মেশিন থাকে না।
প্র: অর্থাৎ মোদ্দা কথা হল সিজার ছাড়া গতি নেই। পেটের দাগটা...।
উ: না না তা নয়, ডাক্তার যদি বোঝেন নর্মাল ডেলিভারিতে সমস্যা নেই, হতেই পারে। তবে আমার অভিজ্ঞতা হল মহিলারা নিজেরাই সিজার চান। কারণ দাগ তো আর আজকের দিনে কোনও সমস্যা নয়।
প্র: তাই?
উ: অবশ্যি। চার ইঞ্চি কাটা, সরু চুলের মতো দাগ, এমনিই মিলিয়ে যায় কিছু দিনে। সিজারের ৫-৬ দিন পর থেকে হালকা স্টেরয়েড মলম লাগালে তো বোঝাই যাবে না বাচ্চা হয়েছে বলে।
প্র: তা কী করে হবে? স্ট্রেচ মার্ক লুকোবো কোথায়?
উ: প্রেগন্যান্সির ৪ মাস থেকে পেটে, বুকে, থাইয়ে হালকা করে তেল মালিশ করলে দাগ কম হয়। কিছু বিশেষ ক্রিমও বেরিয়েছে আজকাল।
প্র: ওজন আর ভুঁড়ি বেশি বেড়ে গেলেও তো সমস্যা হয়।
উ: তা তো হয়ই। ওজন যাতে বেশি না বাড়ে সে দিকে খেয়াল রাখবেন।
প্র: গর্ভাবস্থায় ভাল করে না খেলে বাচ্চা বাড়বে কী করে?
উ: এ সব হল মধ্যযুগীয় কথাবার্তা। খিদে অনুযায়ী খাবেন। মা এবং বাচ্চার পুষ্টির জন্য আগের চেয়ে ৫০০ ক্যালোরি বেশি খাওয়াই যথেষ্ট। এই অতিরিক্ত ক্যালোরি আসবে প্রোটিন থেকে। কাজেই মাছ-মাংস-ডিম-দুধ-ডাল-রাজমা-ছোলা-ছানা-দই ইত্যাদি আগের চেয়ে দ্বিগুণ পরিমাণে খান। ফল খান যত পারেন। শাক-সবজি বেশি খাবেন। ভাত-রুটি খাবেন প্রয়োজনমতো। ঘি-মাখন খাওয়ার দরকার নেই। তৈলাক্ত খাবার বেশি খাবেন না। যদি দেখেন ওজন খুব বেশি বেড়ে যাচ্ছে তাহলে ভাজা, মিষ্টি-তেল-ঘি একেবারে কমিয়ে দেবেন। |
|
প্র: গর্ভাবস্থায় ডায়েটিং! এমনিই প্রথম তিন মাস বমির চোটে খাওয়া প্রায় বন্ধই হয়ে যায় !
উ: খেয়ে বমি করার থেকে তো কম খাওয়াই ভাল। আর প্রথম ৩ মাস বেশি না খেলে কী ক্ষতি? পরের ৬ মাস তো খাবেন। সে ৬ মাসও অল্প অল্প করে খাবেন বারেবারে। তাতে পুষ্টিও হবে, ওজনও তেমন বাড়বে না।
প্র: বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ও বেশি খাওয়ার দরকার নেই?
উ: একেবারেই না। ফিল্ম স্টারদের দেখুন। ফিগার দেখে কেউ বলবে বাচ্চা হয়েছে! কী করে সেটা হয়? খাওয়া কন্ট্রোল আর ব্যায়াম করেই তো !
প্র: ঘুরে-ফিরে সেই ব্যায়াম!
উ: না হলে আগের চেহারা ফিরে পাবেন না।
প্র: কিন্তু কী করে করব বলুন তো? বাচ্চা হওয়ার ৩ মাসের মাথায় অফিসে দৌড়ানো। ব্যায়াম করার সময় কোথায় যে ভুঁড়ি কমবে?
উ: ৩ মাস তো হাতে আছে তাই না? সিজার হওয়ার ৩-৫ দিন পর থেকে উপুড় হয়ে শোবেন। যতক্ষণ পারেন। বাচ্চাকে বুকের দুধ ছাড়া আর কিচ্ছু খাওয়াবেন না। এটুকু করলেই জরায়ু তাড়াতাড়ি ছোট হয়ে যাবে, পেটের মাসল টোন বাড়বে। এর সঙ্গে একটু প্রাণায়াম আর ডাক্তারের পরামর্শমতো হালকা স্ট্রেচিং করবেন। আর ৩ মাস পর থেকে পেটের সামান্য কয়েকটি ব্যায়াম শুরু করবেন। পেটে চর্বি জমলে কিন্তু ব্যায়াম ছাড়া রাস্তা নেই।
প্র: সময়?
উ: আরে, ১০ মিনিট তো লাগবে দিনে। এটুকু সময়ও নেই!
প্র: আরেকটি প্রশ্ন। আপনি তো বললেন মাস তিনেক বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। ব্রেস্টের গঠনও খারাপ হয়ে যাবে না তাতে?
উ: ৩ মাস নয় ৬ মাস বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। আর একেবারে চিন্তা করবেন না। দুধ খাওয়ালে ব্রেস্টের গঠন খারাপ হওয়ার বদলে ভাল হয়।
যোগাযোগ - ২২৪৯২৯৫৫ |
|
|
|
|
|