|
|
|
|
| |
| লোকপাল বিল |
| আন্নাকে দীর্ঘ কাল অনশন চালাতে দিতে নারাজ কেন্দ্র |
| নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
জন-লোকপাল বিল নিয়ে আন্না হাজারে ও তাঁর সমর্থকদের অনশনের ব্যাপারে এ বার আগে থেকেই সতর্ক ভাবে এগোচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই আন্নাদের ধর্নায় বসতে দিতে রাজি হলেও, তা অনির্দিষ্ট কাল চলতে দিতে রাজি নয়
সরকার। সেটা আজ স্পষ্ট ভাবেই বুঝিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি এই আন্দোলন যে অযৌক্তিক তার প্রচারেও নেমেছে কেন্দ্র। পাশাপাশি পুলিশ দিয়ে আন্দোলন রোখা নিয়ে মার্কিন মুখপাত্রের এক মন্তব্য
সম্পর্কেও এ দিন কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত।
লোকপাল বিলের খসড়ায় তাঁদের মতকে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ তুলে আন্না ১৬ অগস্ট থেকে ফের অনশন ধর্নায় বসার হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিদম্বরম আজ বলেন, “এখনও আন্নাকে অনশন থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করছি। প্রত্যেকেরই প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে। তবে পরিস্থিতি ও
প্রেক্ষাপট স্থির করে দেয় সেই প্রতিবাদ কতটা সঙ্গত। যখন কোনও লোকপাল বিল ছিল না, তখন প্রতিবাদ করার যৌক্তিকতা ছিল। কিন্তু এখন একটি বিল তৈরি হয়েছে। সেটি সংসদের স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। যে কমিটি প্রথম দিনেই আন্না ও তাঁর সমর্থকদের ডেকে আলোচনা করেছে। এর পরেও অনশন ধর্নার কোনও যৌক্তিকতা নেই।” আন্না শিবির কিন্তু আমরণ অনশনে বসতে বদ্ধপরিকর। গোড়ায় তাঁরা যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসতে চেয়েছিলেন। আগের বারের ধর্নার অভিজ্ঞতা থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক স্পষ্ট না করে দেয়। কিন্তু একেবারেই ধর্নায় বসতে না দিলে বিজেপি-সহ বিরোধীরা অভিযোগ করার সুযোগ পাবে যে, সরকার গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা দিচ্ছে। তাই যন্তরমন্তরের
বদলে অন্যত্র আন্নাদের ধর্নায় বসতে দিতে রাজি কেন্দ্র। এ ব্যাপারে দিল্লির পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আজও আন্না-সমর্থকদের বৈঠক হয়েছে। সূত্রের খবর, সম্ভবত দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলার কাছে জয়প্রকাশ নারায়ণ পার্কে ধর্নার অনুমতি দেওয়া হতে পারে। তবে সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, সে ক্ষেত্রেও মাত্র তিন দিনের ধর্না চালানোর অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
সরকারের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, রামলীলা ময়দানে রামদেবের অনশন-পর্বের পরে ফের কোনও ধর্না বা বিক্ষোভ মঞ্চ ভেঙে দেওয়া এড়াতে চাইছে সরকার। কারণ, রামদেব-পর্বে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে। তা ছাড়া, দু’দিন আগে বিজেপি-র যুবমোর্চার সংসদ ঘেরাও অভিযান ছত্রভঙ্গ করতেও পুলিশের লাঠি চালানো নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক অব্যাহত। সরকার তাই এক দিকে আন্নাদের অনশন না রুখে বিতর্ক এড়াতে চাইছে। আবার অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনশন চালিয়ে তাঁরা যাতে অস্থিরতা তৈরি করতে না পারে সেটাও নিশ্চিত করতে চায় সরকার। এ ব্যাপারে আন্না সমর্থকদের সঙ্গে একটা বোঝাপড়াও গড়ে তুলতে চাইছেন সরকারের নেতারা। বস্তুত আমরণ অনশন যে সরকার চলতে দেবে না তার ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই। চিদম্বরম বলেন, “অনশনে যাতে কারও মৃত্যু না হয়, তা দেখাটা সরকারের দায়িত্ব শুধু না, অধিকারও।” বিষয়টি অবশ্য এখন আর দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ভারতে আন্দোলন মোকাবিলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া ওয়াশিংটনে বলেছেন, “আমেরিকা অহিংস ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে সমর্থন করে। ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। এই জাতীয় আন্দোলন মোকাবিলা তারা শান্তিপূর্ণ ও সংযত ভাবে করছে কি না, সে দিকটিকে আমরা গুরুত্ব দিয়েই দেখি।” আন্নার অনশনের মুখে মার্কিন মুখপাত্রের এই মন্তব্যকে সরাসরি ‘অপ্রয়োজনীয়’ আখ্যা দিয়েছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, “ভারতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মোকাবিলা নিয়ে মার্কিন বিদেশ দফতরের তরফে অপ্রয়োজনীয় কিছু মন্তব্য করা হয়েছে। ভারতের সংবিধানে মত প্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার শুধু স্বীকৃতই নয়, ১ কোটি ২০ লক্ষ ভারতবাসীই এই অধিকার ভোগ করেন ও একে মর্যাদা দেন।” |
|
|
 |
|
|
