“ইয়ে রবীন্দর কওন হ্যায়?” ২২ শ্রাবণের দিন সংসদের সেন্ট্রাল হলে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দীনেশ ত্রিবেদীকে চমকে দিয়ে এই প্রশ্ন করে বসেছিলেন মুলায়ম সিংহ যাদব। সপা নেতা বলেন, কে এই ‘রবীন্দর’? কাগজে পড়লাম মমতা এঁর মৃত্যুদিন বলে ছুটি দিয়েছেন। মুলায়মের প্রশ্ন শুনে তৃণমূলের সাংসদরা তো থ। তার পরে দীনেশ ‘বোঝান’ মুলায়মজিকে, বাংলায় রবীন্দ্রনাথ নামে এক জন ম-অ-স্ত ব্যবসায়ী ছিলেন। এক টাকার কলম আর দু’টাকার কালি, সাকুল্যে এই তিন টাকা লগ্নি করে তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়ে যান, যার দাম লাখ টাকারও বেশি! ঘাড় নেড়ে চলে যান মুলায়ম। খানিক পরে ফিরে আসেন। চালাক চালাক হেসে বলেন, “আমাকে ঠকাবে? সহি খবর নিয়ে নিয়েছি। আসলে খুব বড় কবি ছিলেন রবীন্দরকুমার!” ফের হাসির রোল। মুলায়মকে শুধরে দেন সুদীপ, “কুমার নয়, নাথ। রবীন্দ্রনাথ।” মমতা ঘটা করে রাজ্যে রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবর্ষ পালন করলেও সংসদের সেন্ট্রাল হলে জাতীয় সংগীত রচয়িতার দৈন্যদশা কিন্তু প্রকট।
|
সনিয়া গাঁধী গত এক বছর ধরেই অসুস্থ। অথচ কোনও সাংবাদিকের কাছে সেই খবর ছিল না। এমনকী আহমেদ পটেল বা জর্নাদন দ্বিবেদীর মতো সনিয়া-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতারাও ছিলেন অন্ধকারে। কিন্তু এক জন আছেন, যাঁকে সব কিছুই জানতে হয়। স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের প্রধান ভি বি ওয়াংচু। পশ্চিমবঙ্গের ওই আইপিএস ক্যাডার দিল্লিতে গোয়েন্দা প্রধান হিসাবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। রাজীব গাঁধী যখন বিরোধী দলনেতা, তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ওয়াংচু। এখন সনিয়া ছাড়া প্রিয়াঙ্কা-রাহুলের নিরাপত্তার দায়িত্বও তাঁর হাতে। সনিয়া গাঁধী এর আগেও যে আমেরিকায় চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন এ খবর কেবল ওয়াংচুই জানতেন। এ বারও সনিয়া যাওয়ার আগে হাসপাতালটির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখে এসেছেন। মানুষটি ব্যক্তিগত জীবনে কিন্তু একেবারেই ছাপোষা। মাঝে মধ্যেই সরোজিনী নগরে স্ত্রীর সঙ্গে বাজার করতে দেখা যায় তাঁকে। অক্টোবরে অবসর নিচ্ছেন সেই ওয়াংচু। কিন্তু ১০ জনপথের ঘনিষ্ঠ ওই ব্যক্তি কি একেবারেই অবসর নিচ্ছেন, না কি নিরাপত্তা উপদেষ্টা করে ফিরিয়ে আনা হবে তাঁকে? শীর্ষ আমলা মহলে এখন এটাই গুঞ্জন।
|
কলকাতায় তুমুল বৃষ্টির মধ্যে ২২ শ্রাবণ পালন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দিল্লিতে প্রণববাবু। রাজধানীতে রবীন্দ্র সার্ধশতবর্ষ পালনে এ বার এগিয়ে এসেছে সংস্কৃতি মন্ত্রক। তাদের উদ্যোগে ওই দিন দিল্লির নানা প্রেক্ষাগৃহে পালিত হয় রবীন্দ্র সন্ধ্যা। এর মধ্যে দিল্লির শ্রীরাম সেন্টারে রবীন্দ্র নৃত্য পরিবেশন করলেন প্রণব-কন্যা শর্মিষ্ঠা। প্রণববাবুর স্ত্রী শুভ্রাদেবীরও একটি গানের দল রয়েছে। ইন্দিরা গাঁধীর আমলে প্রণববাবু যখন অর্থমন্ত্রী ছিলেন, তখন এই ‘গীতাঞ্জলি’ ট্রুপ নানা অনুষ্ঠান করেছে। সম্প্রতি সেই দলটিকে নতুন করে গড়ে তুলেছেন শুভ্রাদেবী। কামানি প্রেক্ষাগৃহের ওই অনুষ্ঠানে মান্যগণ্যদের উপস্থিতিও ছিল নজরকাড়া। ছিলেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব জহর সরকার। এমনকী কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী শৈলজা, যিনি সাধারণত কোনও অনুষ্ঠানেই যান না, তিনিও ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন।
|
সামনের বছরই হয়ত রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বিদায় নেবেন। শেষ বেলায় প্রতিভা পাটিল রাষ্ট্রপতি ভবনের বিপুল সংস্কারের কাজে নেমেছেন। গোটা ভবন জুড়ে তিনি ‘বিজলি-বাঁচাও’ কর্মসূচি নিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি হয়ে রাইসিনা হিলের এই প্রাসাদে প্রবেশের পরেই ‘রোশনি’ নামে একটি প্রকল্প চালু করেন তিনি। মূল উদ্দেশ্য, জ্বালানি সঞ্চয়। কিন্তু এখন এই কর্মসূচি বড় আকারে রূপায়ণ করছেন তিনি। দরজার সঙ্গে এমন সব অত্যাধুনিক যন্ত্র লাগানো হয়েছে, যাতে ঘর খালি হলেই সব আলো, পাখা, টিভি নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে। রাষ্ট্রপতি ভবন জুড়ে বসানো হয়েছে শক্তি সঞ্চয়ী আলো ‘ক্যাথোড ফ্লুরোসেন্ট বাল্ব’। ভবনের বাগিচায় বৃষ্টির জল সংরক্ষণও শুরু হয়েছে। কাজে লাগানো হয়েছে ভবনের গ্রুপ-ডি কর্মীদের স্বামী বা স্ত্রীকে। তাঁদের নিয়ে পাঁচটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীও তৈরি করেছেন প্রতিভা। কেঁচো, ঝরা পাতা থেকে জৈব সার তৈরি করছেন তাঁরা। মশলা পিষেও রোজগার করছেন এই কর্মীরা। শুধু কি তাই? রাষ্ট্রপতি ভবনের চৌহদ্দিতে একটি বিউটি পার্লারও তৈরি হয়েছে। মেয়েরা উপার্জন করছেন সেখান থেকেও। গোটা বিষয়টি নজরদারি করছেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি। |