সহ-উপাচার্যের কাছে টাকা দাবি রবীন্দ্র ভবনের |
বিশ্বভারতীর অস্থায়ী উপাচার্য উদয়নারায়ণ সিংহের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিত্রকলার সম্পূর্ণ ‘ডিজিটাল’ সম্ভারের ‘ব্যক্তিগত’ ব্যবহারের অভিযোগ তুললেন রবীন্দ্রভবনের প্রাধিকারিক নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী অস্থায়ী উপাচার্যকে চিঠি লিখে ওই চিত্রাবলির ‘ব্যক্তিগত’ ব্যবহার বাবদ ১৫ লক্ষ ৮২ হাজার টাকাও দাবি করেছেন নীলাঞ্জনবাবু।
৬ অগস্ট লেখা ওই চিঠি থেকে জানা যাচ্ছে, এ বছর ৭ এপ্রিল উদয়নারায়ণবাবু (তখন তিনি বিশ্বভারতীর সহ-উপাচার্য) নিজের কাছে নিজেই আবেদন ও তা মঞ্জুর করে রবীন্দ্রভবনের হেফাজতে থাকা রবীন্দ্র-চিত্রাবলির ১৫৮২টি ছবির প্রতিলিপি একটি হার্ড ডিস্কে ভরে বিদেশে যান। বিদেশে নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের চিত্রকলার ধারণা দিতেই তিনি ওই ছবিগুলির প্রতিলিপি সংগ্রহ করেছেন বলে আবেদনে জানিয়েছিলেন উদয়নারায়ণবাবু। ওই হার্ড ডিস্কটি তিনি ৪ অগস্ট জমা দেন রবীন্দ্রভবনের ভারপ্রাপ্ত প্রাধিকারিক তুষারকান্তি সিংহের কাছে। এর পরেই সহ-উপাচার্যকে চিঠি দেন নীলাঞ্জনবাবু। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, গবেষকেরা ৫০০ ও ১০০০ টাকার বিনিময়ে রবীন্দ্র-চিত্রাবলির দু’ধরনের ছবি সংগ্রহ করতে পারেন। সেই হিসাবে উদয়নারায়ণবাবুকে ১৫৮২টি ছবির প্রতিলিপির জন্য ১৫ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা দিতে হবে। এর কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, কোন কোন বিদেশি প্রতিষ্ঠানে রবীন্দ্র-চিত্রকলা নিয়ে উদয়নারায়ণবাবু বক্তৃতা দিয়েছেন, তার লিখিত তালিকা রবীন্দ্রভবনের কাছে নেই। তিনি ছবিগুলির ‘ব্যক্তিগত’ ব্যবহার করেছেন।
এ-ও প্রশ্ন উঠেছে, বিদেশে রবীন্দ্র-চিত্রাবলি নিয়ে যাওয়ার আগে উপাচার্য ও বিশ্বভারতীর কর্মসমিতির অনুমোদন দরকার। উদয়বাবু সেই অনুমোদন নেননি বলেই জানান সদ্য অবসরপ্রাপ্ত উপাচার্য রজতকান্ত রায়। উদয়নারায়ণবাবুর ব্যাখ্যা, “সেই সময় একই সঙ্গে সহ-উপাচার্য ও রবীন্দ্রভবনের অস্থায়ী অধ্যক্ষের দায়িত্ব সামলাতে ব্যস্ত থাকায় আমার পক্ষে রবীন্দ্রভবনের সংগ্রহে থাকা রবীন্দ্রনাথের সব চিত্রকলা দেখা সম্ভব ছিল না। সে জন্যই হার্ড ডিস্কের মাধ্যমে ছবি সংগ্রহ করে করে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হয়।” তাঁর আরও বক্তব্য, “নীলাঞ্জনবাবুর চিঠি পেয়েছি। তার উত্তরও দিয়েছি। আমি দুর্নীতি করিনি। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রককে জানিয়েই সব কিছু করেছি।”
আনন্দবাজারে শুক্রবারের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন নীলাঞ্জনবাবু অস্থায়ী উপাচার্যকে ফের একটি চিঠি দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেছেন, “এই ছবি লেনদেনের ব্যাপারে সংস্কৃতি মন্ত্রক কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। নিজে আইনকানুন ভেঙে পরে সেটা বিভিন্ন মন্ত্রকের ঘাড়ে দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়াও শোভন নয়।” চিঠিটির প্রতিলিপি নীলাঞ্জনবাবু পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী (বিশ্বভারতীর আচার্য), রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালকেও। |