থইথই ঘর ছেড়ে কেউ বাঁধে, কেউ বা স্কুলের ছাদে
তুন ঠিকানা রাস্তা বা নদীবাঁধ। কেউ আবার সংসার পেতেছেন প্রতিবেশীর বাড়ির ছাদে। এই ছবি কাটোয়া ২ ও কেতুগ্রাম ২ ব্লকের গ্রামে গ্রামে।
বাড়ির উঠোনে ভয়াল ভাগীরথী। প্রাণ বাঁচাতে তাই গ্রাম ছাড়ছেন কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ গ্রাম পঞ্চায়েতের চরবিষ্ণুপুর, চরকবিরাজপুর, চরকালিকাপুর, বাবলাডাঙা, ঘোষপাড়ার বাসিন্দারা। বাক্স প্যাঁটরা তো বটেই বাড়ির চালও খুলে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে চলেছেন তাঁরা।
অন্য দিকে, কেতুগ্রাম ২ ব্লকের চরসুজাপুর, সুজাপুর, রঘুপুর, নতুনগ্রাম-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে হু হু করে জল বাড়ছে শুক্রবার দুপুর থেকেই। ওই সব গ্রামের রাস্তায় কোথাও এক বুক, কোথাও এক কোমর জল। বাড়িতে জল ঢুকে পড়ায় অনেকে নদিয়ার কালিগঞ্জে বাঁধের উপরে গিয়ে উঠেছেন। সুজাপুর গ্রামে পুলিশ ক্যাম্পের ভিতরেও এক হাঁটু জল জমে রয়েছে।
কাটোয়ার মহকুমাশাসক দেবীপ্রসাদ করণম বলেন, “প্লাবিত এলাকার জল এসে নদীতে মিশছে। ফলে জল বাড়তে শুরু করেছে ভাগীরথীতে।”
নিজস্ব চিত্র।
এ দিকে, এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের সাহায্য মিলছে না। প্রাণের দায়ে তাঁরা নিজেরাই ডিঙি নৌকা বা ডোঙা চালিয়ে নিকটবর্তী নিরাপদ জায়গায় পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন। নিরাপদ আশ্রয় বলতে অবশ্য খোলা আকাশের নীচে রাস্তা বা বাঁধে চাঁদোয়া খাটিয়ে বাস। শিশু থেকে গবাদি পশু সকলেই এক সঙ্গে। কাটোয়া ২ ব্লকের চরবিষ্ণুপুর গ্রামের নিতাই কবিরাজ, দীপঙ্কর মজুমদারেরা বলেন, “সরকারি নৌকা কম। কোনও মতে ডিঙি চালিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি।” তাঁদের কথায়, “বন্যা আর ভাঙনকে সঙ্গী করেই বেঁচে আছি। এখন অনেক বেশি জরুরি, নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে যাওয়া।”
অগ্রদ্বীপের ঘোষপাড়ার প্রায় ৫০টি পরিবার উঁচু জায়গায় উঠে এসেছেন। পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের নিতাই মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুরো চরবিষ্ণুপুর গ্রামটিকেই উঠিয়ে কালিকাপুরে নিয়ে আসা হচ্ছে। অন্যান্য এলাকা থেকেও প্রায় ২৫০ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে ইতিমধ্যেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
নৌকার অভাবে এখনও গ্রাম ছাড়তে পারেননি চরসুজাপুর, নতুনগ্রামের বাসিন্দারা। নতুনগ্রাম প্রাথমিক স্কুলের এক তলা জলের তলায়। দোতলায় গাদাগাদি করে লোকজন থাকতে শুরু করেছেন। সুজাপুর গ্রামের মথুরা ঘোষ, সুকুমার ঘোষরা বলেন, “আমাদের গ্রামে ফ্লাড শেল্টার নেই। বাড়িতে জল ঢুকে যাওয়ায় অনেকে আশপাশের বাড়ির ছাদে উঠে এসেছেন। নৌকা নেই। অন্য কোনও নিরাপদ আশ্রয় যাওয়া যাচ্ছে না।”
নতুনগ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য হাসিবুর রহমান বলেন, “পঞ্চায়েত প্রধানকে নৌকা পাঠানোর জন্য বলেছি।” কেতুগ্রাম ২-এর বিডিও হেমন্ত ঘোষ বলেন, “শুক্রবার বিকেলে নতুনগ্রাম-চরসুজাপুর এলাকায় নৌকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।” গ্রামগুলি কার্যত জলের তলায়। বন্ধ হয়ে গিয়েছে প্রাথমিক স্কুল। আজ, শনিবার, সুজাপুর-নতুনগ্রামে জমা জল দেখতে যাবেন কাটোয়ার মহকুমাশাসক দেবীপ্রসাদ করণম ও কেতুগ্রাম ২-এর বিডিও হেমন্ত ঘোষ। অগ্রদ্বীপ যাবেন কাটোয়া ২-এর বিডিও নির্মলকুমার দাস। নৌকা আর ত্রাণের দাবি জানাতে অপেক্ষায় এলাকার মানুষ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.