আমাদের গ্রাম বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানায় অবস্থিত যবগ্রাম। এখানে একশো বছর ধরে চলছে একটি উচ্চ বিদ্যালয় (মাধ্যমিক স্তর), যা পূর্বে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ছিল। এটির নাম ‘যবগ্রাম মহারানি কাশীশ্বরী উচ্চ-বিদ্যালয়’ দানবীর মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দী মহাশয় তাঁর পত্নীর নামে স্থাপন করেছিলেন। এই গ্রামে মহারানি কাশীশ্বরী দেবীর পিত্রালয়। বর্তমানে প্রয়াত এমন অনেক প্রবীণের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯০৪ সালে মাইনর স্কুল হিসেবে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়, কাগজে-কলমে যার কোনও নথিপত্র পাওয়া যায়নি। পরে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে সরকার কর্তৃক এই বিদ্যালয় উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃত হয়। যেহেতু ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং আগের কোনও কাগজপত্র তেমন পাওয়া যায়নি, সে জন্য একশো বছর পার হওয়া সত্ত্বেও একশো বছর বলা যায় না। সে ভাবে সরকারি কোনও বড় অনুদানও পাওয়া যায়নি, যাতে বিদ্যালয় ভবন মেরামতি করা যায়। |
সর্বশিক্ষা এবং বিধায়কের অর্থানুকূল্যে তিনটি কক্ষ তৈরি হয়েছে এবং ল্যাট্রিন করা হয়েছে, যা যথেষ্ট নয়। কারণ, ৭০০-র উপর ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এই বিদ্যালয়ে; সে ক্ষেত্রে পুরাতন বিদ্যালয় ভবনটিই শ্রেণিকক্ষের জন্য ব্যবহৃত মূল ভবন। কিন্তু সেই ভগ্নপ্রায় দুর্দশাগ্রস্ত ভবনটি যে-কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। প্রতিটি ঘরেই জল পড়ে, দেওয়ালগুলিও কিছু কিছু স্থানে বিপজ্জনক আকার ধারণ করেছে; মাঝে গাছপালাও গজিয়েছে। সামনের বারান্দায় টিনের চাল, আরও ভগ্নদশা। জানি না, পশ্চিমবঙ্গের আর কোথাও একশো বছরের পুরনো টিনের ছাউনি দেওয়া বাড়িতে এ রকম দুর্দশাগ্রস্ত বিদ্যালয় আছে কি-না।
আক্ষেপের বিষয়, এলাকার অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তি এই বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন করেছেন, কেউ কেউ শিক্ষাক্ষেত্রেও আছেন ও ছিলেন। এই বিদ্যালয়ের পূর্বতন এক জন শিক্ষক মহাশয় সাংসদও ছিলেন, কিন্তু এই বিদ্যালয়ের ‘যথাপূর্বং তথা পরং’ অবস্থা হয়েই আছে। এই বিদ্যালয়ের বহু কৃতী ছাত্রছাত্রী শিক্ষা-সহ বিভিন্ন উচ্চ পদে আসীন।
অবিলম্বে বিদ্যালয়টির দিকে দৃষ্টি দেওয়া না হলে যে কোনও দিন কোনও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যাবে, তখন আর কিছু করার থাকবে না। অভিভাবক এবং শিক্ষকগণ বড় অসহায় বোধ করেন। সরেজমিনে তদন্ত করে এ ব্যাপারে যত শীঘ্র সম্ভব ব্যবস্থার প্রত্যাশায় রইলাম। |
হুগলি জেলার দাদপুর থানার তামিলা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সাঁতরাপাড়া পর্যন্ত মাত্র ২৫০ মিটার অঞ্চল বিগত দশ বৎসর যাবৎ লো-ভোল্টেজের কবলে। ১৯৮২ সালে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছলেও এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছয় ১৯৯২ সালে সেটিও ২২০ ভোল্টের লাইন দিয়ে। ফলে সারা গ্রাম যখন আলোয় ঝলমল করে, তখন এই অঞ্চলে টিউবলাইট জ্বলে না। আর বাল্বগুলি জ্বললেও তা টিম-টিম করে জ্বলে। ৪৪০ ভোল্টের লাইনের অভাবে এলাকাটি শুধু আলো-বাতাস থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে না, ঘিয়া নদীতে প্রস্তাবিত রিভার-পাম্পটি আজও বসানো সম্ভব হয়নি। গভীর ও অগভীর নলকূপগুলির দৌরাত্ম্যে এই অঞ্চলের ভূ-নিম্নস্থ জলস্তর প্রতি বছর হু-হু করে নেমে যাচ্ছে। গ্রীষ্মের সময় তিন মাস নলকূপগুলি বন্ধ হয়ে যায়। এই অঞ্চলের বৈদ্যুতিক লাইনটি ২২০ থেকে ৪৪০ ভোল্টে উন্নীত করলে রিভার-পাম্প বসবে এবং কৃষি-নির্ভর এই গ্রামের কৃষকরা উপকৃত হবে, পানীয় জলের অভাব ও লো-ভোল্টেজের হাত থেকে রেহাই পাবে। বর্তমান যুগে ৫০০ মিটার তারের জন্য কোনও কাজ আটকে থাকবে, এটা বড়ই বেমানান ও দৃষ্টিকটু। রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম ও সেচ দফতরের প্রতি আবেদন, বিষয় দু’টির প্রতি নজর দিন এবং সমস্যার সমাধান হোক দ্রুততার সঙ্গে। |